শিক্ষক সমিতির অভিযোগ, বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির আপত্তির পরও উপাচার্যের ইচ্ছায় আইন বিভাগে দুই জন প্রভাষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
Published : 18 Dec 2023, 12:13 AM
শিক্ষক সমিতির আপত্তির মুখেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের তোড়জোড় চলছে।
রোববার দিনভর উপাচার্যের কার্যালয়ে শিক্ষক সমিতির নেতাদের অবস্থানের পর রাতে ক্যাম্পাসে ‘উপাচার্যের বাসভবনে’ হয়েছে নিয়োগপ্রার্থীদের সাক্ষাৎকার।
উপাচার্যের এ ধরনের আচরণের প্রতিবাদে সোমবার থেকে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে শিক্ষক সমিতি।
শিক্ষক সমিতির অভিযোগ, বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির আপত্তির পরও উপাচার্যের ইচ্ছায় আইন বিভাগে দুই জন প্রভাষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, যা বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ‘পরিপন্থি’।
আইন ও বাংলা ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে প্ল্যানিং কমিটির সুপারিশ ছাড়া নিয়োগ না দেওয়া এবং নিয়োগ বোর্ড বাতিলের দাবিতে স্মারকলিপিও দিয়েছে শিক্ষক সমিতি।
রোববার সকালে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি, নিয়োগ বোর্ড বাতিলের দাবিতে শিক্ষক সমিতির নেতারা উপাচার্য শিরীণ আখতারের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি কথা না বলে চেয়ার ছেড়ে চলে যান।
এরপর ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের অপসারণ দাবি করে সোমবার প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন।
বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার দপ্তর জানায়, গত ১২ জুলাই আইন বিভাগে দুইজন প্রভাষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাতে ১০ জন আবেদন করেন। রোববার দুপুরে তাদের সাক্ষাৎকার হওয়ার কথা ছিল।
তার আগেই শিক্ষক সমিতির নেতারা ওই বিজ্ঞপ্তি এবং নিয়োগ বোর্ড বাতিল করে সাক্ষাৎকার কার্যক্রম বন্ধের দাবি নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে যান।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অবৈধ এ নিয়োগ বাতিলের দাবিতে আমরা সন্ধ্যা পর্যন্ত উপাচার্যের কার্যালয়ে অবস্থান করেছি। নিয়োগপ্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নিতে না পেরে তখন উপাচার্য কয়েকজন প্রার্থীকে গাড়িতে করে ক্যাম্পাসে তার বাসভবনে নিয়ে যান। অন্যদের টেলিফোনে তার বাসভবনে সাক্ষাৎকার দিতে যেতে বলা হয়।”
নিয়োগ বোর্ডের সদস্য ও আইন বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল ফারুক অবশ্য বলছেন, উপাচার্যের দপ্তরেই নিয়োগ প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার হয়েছে। ১০ জনের মধ্যে নয়জন সাক্ষাৎকার দিতে এসেছিলেন।
সাংবাদিকরা বিষয়টি নিয়ে উপাচার্য শিরীণ আখতারের বক্তব্য জানতে বিকালে তার কার্যালেয়ে এবং সন্ধ্যায় তার বাসভবনে যান। কিন্তু কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে মতামত জানতে রেজিস্ট্রারের দপ্তর থেকে গত ২৩ মার্চ আইন বিভাগের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল। বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটির সভায় শিক্ষক নিয়োগের ‘প্রয়োজন নেই’ সিদ্ধান্ত হওয়ায় গত ৯ এপ্রিল বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক সিফাত শারমিন তা রেজিস্ট্রারকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেন।
বিভাগের আপত্তির পরও ১২ জুলাই কর্তৃপক্ষ আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
এর আগে বাংলা বিভাগেও প্ল্যানিং কমিটির আপত্তি অগ্রাহ্য করে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় চবি কর্তৃপক্ষ। সোমবার ওই বিভাগে আবেদনকারী প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার কথা রয়েছে।
পুরনো খবর
চবি: প্ল্যানিং কমিটিকে উপেক্ষা করে বাংলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের তোড়জোড়