বিভিন্ন বিভাগের আপত্তির পরও শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা এবং স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের অভিযোগে উপচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এ আন্দোলন।
Published : 18 Dec 2023, 05:05 PM
অনিয়মের অভিযোগে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে অবস্থান আন্দোলনে নেমেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে এ আন্দোলন শুরু করেন তারা।
বিভিন্ন বিভাগের আপত্তির পরও শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা এবং স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের অভিযোগে উপচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এ আন্দোলন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবনের সামনে শামিয়ানা টাঙিয়ে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষক সমিতি অবস্থান কর্মসূচিটি শুরু করে।
রোববার আপত্তির পরও উপাচার্যের বাসভবনে অনুষ্ঠিত আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের সাক্ষাৎকার গ্রহণ নজিরবিহীন মন্তব্য করে সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, “কয়েকজন শিক্ষককে সাথে নিয়ে নিয়োগ বোর্ড গঠন করে উপাচার্য প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন। এটা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের সাথে সাংঘর্ষিক ও বেআইনী।”
বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের শাসন পুনরুদ্ধারের জন্য উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে এই আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত রাখারও ঘোষণা দেন তিনি।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল হক অভিযোগ করেন, নিজেদের স্বার্থে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য এমন কোনো কাজ নেই, যেটা তারা করতে পারেন না। একারণে শিক্ষকরা তাদের ওপর আস্থা হারিয়েছেন।
শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম তুলে ধরে তিনি বলেন, “বিতর্কিতভাবে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ রাখতে চিঠি নিয়ে উপাচার্যের দপ্তরে গেলে তিনি গ্রহণ করেননি। দায়িত্বশীল পদে থেকে শিক্ষক সমিতির চিঠি গ্রহণের মতো যার সৎ সাহস নেই সে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় চালাবে, বিষয়টি সাধারণ শিক্ষকরা আর বিশ্বাস করতে চায় না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী কোনো বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ করতে হলে সেই বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির সুপারিশ প্রয়োজন হয়। সম্প্রতি রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে বাংলা ও আইন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের চাহিদা চাওয়া হলে দুই বিভাগের পক্ষ থেকে শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজন নেই বলে উল্লেখ করে।
এরপরও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারের দিন ঠিক করে। রোববার আইন বিভাগের নিয়োগ প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণের দিন ছিল। এসময় শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ উপাচার্য শিরীণ আখতারের কাছে গিয়ে নিয়োগ বোর্ড বাতিলের দাবি ও নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার দাবি করেন।
শিক্ষক সমিতির প্রতিবাদের মধ্যে রাতে উপার্যের বাসভবনে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়। এর প্রতিবাদে সোমবার থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি।
বাংলা বিভাগে নিয়োগপ্রার্থীদের সাক্ষাৎকার হয়নি
বাংলা বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির আপত্তির পরও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। নিয়োগ প্রার্থীদের সোমবার সাক্ষাৎকার গ্রহণের দিন ছিল। আগের দিন আইন বিভাগের প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণে শিক্ষক সমিতি বাধা দেয়।
এরপর সোমবার বাংলা বিভাগের নিয়োগ প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ স্থগিত রাখে প্রশাসন।
এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে উপাচার্য শিরীণ আখতারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সোমবার বাংলা বিভাগের নিয়োগপ্রার্থীদের নির্ধারিত সাক্ষাৎকার হয়নি বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর নুরুল আজিম শিকদার।
তবে কী কারণে সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়নি সেটা জানাননি তিনি।
আরও পড়ুন:
চবি: প্ল্যানিং কমিটিকে উপেক্ষা করে বাংলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের তোড়জোড়
চবি আইন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে আন্দোলনের ডাক শিক্ষক সমিতির