উপদেষ্টা বলেন, আমরা যদি এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিই, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি বিপর্যস্ত পরিবেশে বাস করবে।
Published : 19 Jan 2025, 07:12 PM
আইনে নিষিদ্ধ বলেই শুধু নয়, সন্তানদের সুস্থ ভবিষ্যতের জন্য পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
রোববার চট্টগ্রামের থিয়েটার ইনস্টিটিউটে ‘পলিথিনবিরোধী’ এবং পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “পলিথিন শপিং ব্যাগের ব্যবহার বন্ধে এবার কঠোর হবে সরকার। সরকার ব্যর্থ হলে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অকল্পনীয় ক্ষতি বয়ে আনবে।
“পলিথিনের ক্ষতিকর প্রভাব আমাদের পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং স্বাস্থ্যকে হুমকির মুখে ফেলেছে। ক্যান্সারসহ অন্যান্য রোগ এবং পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতির জন্য পলিথিন দায়ী। সেজন্য পলিথিন ও ‘সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক’ আমাদের বর্জন করতে হবে।”
পলিথিনের বিকল্প সবার কাছেই আছে মন্তব্য করে রিজওয়ানা হাসান বলেন, “নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করতে সরকার, ব্যবসায়ী, ভোক্তা এবং স্থানীয় জনগণের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। ঢাকা শহরের সুপার শপিং মলগুলো হতে ৯০ শতাংশ পলিথিন দূর করা গেছে। সেখানে কাপড়, কাগজ ও পাটের ব্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে।”
সারাদেশ থেকেই পর্যায়ক্রমে পলিথিন দূর করার কথা উল্লেখ করে পাহাড় কাটা, শব্দদূষণ রোধেও সবার সহযোগিতা চান তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, “আমরা যদি এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিই, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি বিপর্যস্ত পরিবেশে বাস করবে।”
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (দূষণ নিয়ন্ত্রণ) সিদ্ধার্থ শংকর কুন্ডু।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ, সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. হুমায়ুন কবির, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী শেখ মো. তৌহিদুল ইসলাম।
সভা শেষে পরিবেশ উপদেষ্টা চট্টগ্রামের কাজির দেউড়ি কাঁচাবাজার পরিদর্শন করেন। তিনি দোকানদার ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন এবং পলিথিনের ব্যবহার রোধে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
পাহাড়ে অবৈধ পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে
পাহাড়ে অবৈধ দখলকারীরা পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ কিভাবে পায় প্রশ্ন রেখে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণায়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, এসব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
রোববার বিকালে অবৈধভাবে পাহাড় কাটা রোধে নগরীর আকবর শাহ এলাকা পরিদর্শন শেষে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, অবৈধভাবে পাহাড়ে বসবাসকারীদের বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। অবৈধ দখলকারীরা কীভাবে এসব সংযোগ পায়? পাহাড়ের মালিক হলেও পাহাড় কাটলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
উপদেষ্টা স্থানীয় প্রশাসনকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী নিশ্চিত করতে পাহাড় ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা অত্যাবশ্যক।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন, স্থানীয় প্রশাসন, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।