চট্টগ্রামে গ্যাসে স্বস্তি বিকাল নাগাদ: কেজিডিসিএল

ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে শুক্রবার রাতে এলএনজি টার্মিনাল থেকে সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হলে চরম দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। রান্নার চুলা জ্বলেনি দুইদিন ধরে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2023, 08:11 AM
Updated : 15 May 2023, 08:11 AM

ঘূর্ণিঝড় মোখা’র কারণে রান্নার গ্যাস বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে থাকা চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের সোমবার বিকাল নাগাদ স্বস্তি মিলবে। এ সময়ের মধ্যে বাসাবাড়িতে গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে জানিয়েছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড (কেজিডিসিএল) কর্তৃপক্ষ।

কেজিডিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (বিতরণ-দক্ষিণ) আমিনুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সার কারখানা ও পাওয়ার প্ল্যান্ট বাদে চট্টগ্রামে বিকালের মধ্যে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। শিল্প কলকারখানায়ও গ্যাস সরবরাহ ঠিক হবে বলে আশা করছি।  সকাল থেকেই গ্যাস আসা শুরু হয়েছে।”

চট্টগ্রামে সার কারখানা, শিল্প প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও গৃহস্থালী মিলিয়ে প্রতিদিন গড়ে তিনশ মিলিয়ন ঘনফুটের ওপরে গ্যাসের প্রয়োজন হয়। শুধু চট্টগ্রামে গৃহস্থালী কাজে গ্যাসের প্রয়োজন হয় ৫০ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো। “

“বিকালের মধ্যে এলএনজি টার্মিনাল থেকে দেড়শ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো গ্যাস পাওয়া যাবে। এতে করে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হবে,” বলেন কেজিডিসিএল কর্মকর্তা আমিনুর রহমান।  

সোমবার দুপুর পর্যন্ত নগরীর পাথরঘাটার কিছু অংশ, জামালখান, প্রবর্তক মোড়, হিল ভিউ আবাসিক, নাসিরাবাদ, আলকরণ, চকবাজারসহ বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়িতে সীমিত পরিসরে গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে বলে জানা গেছে।

ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে শুক্রবার রাতে সমুদ্রে থাকা এলএনজি টার্মিনাল থেকে সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। সতর্কতার অংশ হিসেবে টার্মিনাল দুটি মহেশখালীর নির্ধারিত জায়গা থেকে গভীর সমুদ্রের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।

এর ফলে চট্টগ্রামে বাসাবাড়ি, সার কারখানা, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে গ্যস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। শনিবার থেকে চরম দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। রান্নার চুলা জ্বলেনি দুইদিন ধরে।

সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনে গ্যাস না থাকায় অটোরিকশা, প্রাইভেট কারসহ সিএনজিচালিত যানবাহন রাস্তায় কমে যায় এবং গাড়ি ভাড়া বেড়ে যায়।

বাসাবাড়িতে গ্যাসের চুলা না জ্বলায় বিকল্প জ্বালানির জন্য সিলিন্ডার গ্যাস কিনতে নগরীর দোকানগুলোতে ভিড় জমে এবং বিক্রেতারা সিলিন্ডার গ্যাসের দাম কয়েকগুণ বাড়তি আদায় করেন। এছাড়া হোটেলেও খাবার কিনতে গিয়ে মানুষকে অতিরিক্ত দাম গুণতে হয়েছে।

সঙ্কটের সময় বাড়তি দামে সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রি করায় রোববার রাতে নগরীর কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৪৮ হাজার টাকা জরিমানা করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।

Also Read: এলএনজি সরবরাহ স্বাভাবিক হতে দুই সপ্তাহ লাগবে: প্রতিমন্ত্রী

Also Read: মোখা: এলএনজি টার্মিনাল বন্ধের পর গ্যাস-বিদ্যুতে ভোগান্তি

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত জানান, ১২ কেজি এলপিজি গ্যাসের মূল্য ১১৭৬ টাকা, সিলিন্ডারসহ দাম ১৬০০ থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে হলেও নগরীর ষোলশহর রেল স্টেশন এলাকার তাহের স্টোর বিক্রি করছিল তিন হাজার টাকায়। পাশের সোহেল স্টোর ক্রেতাদের গ্যাসসহ চুলা কিনতে বাধ্য করছিল।

অতিরিক্ত দাম নেয়ায় তাহের স্টোরকে কুড়ি হাজার টাকা এবং সোহেল স্টোরকে পঁচ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।  

এছাড়া নগরীর এনায়েত বাজারের কিচেন ট্রেডার্সকে ১০ হাজার এবং সেখানকার আরও তিন দোকানকে একই অভিযোগে ১৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।