এলএনজি সরবরাহ স্বাভাবিক হতে দুই সপ্তাহ লাগবে: প্রতিমন্ত্রী

গ্যাস-বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি আগামী দুই তিন দিনের মধ্যে হবে, বলছেন তিনি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2023, 01:49 PM
Updated : 14 May 2023, 01:49 PM

অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করলেও এর প্রভাবে ব্যাহত হওয়া এলএনজি সরবরাহ আগের অবস্থায় ফিরে আসতে অন্তত দুই সপ্তাহ সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

তবে ভাসমান দুটি এলএনজি টার্মিনালের মধ্যে একটি থেকে গ্যাস সরবরাহ আগামী দুই তিন দিনের মধ্যে শুরু হলে এসময়ের মধ্যে গ্যাস-বিদ্যুৎ পরিস্থিতি উন্নতির আশাও করছেন তিনি।

রোববার সচিবালয়ে মোখার কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলছিলেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী জানান, বঙ্গোপসাগরে দুটো ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের একটি দূরে গভীর সমুদ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। আরেকটি আগের কাছাকাছি অবস্থানেই ছিল। তবে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বিদ্যুতের সঞ্চালন কিংবা বিতরণ লাইনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

ঘূর্ণিঝড় মোখা আঘাত হানার একদিন আগে শুক্রবার রাতে সতর্কতামূলকভাবে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। এতে গ্যাসের জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ কমে গেলে সংকট দেখা দেয়, যাতে গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি বিদ্যুতের ঘনঘন লোড শেডিং শুরু হয় দেশজুড়ে।

দেশে গত কয়েকদিন ধরে সরবরাহ করা দৈনিক ২৮৭০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের মধ্যে এলএনজির অবদান ছিল ৭৩৩ এমএমসিএফ। টার্মিনাল দুটো থেকে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ রাখায় এ পরিমাণ গ্যাস কম পাওয়া যায়।

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, এর প্রভাবে দেশজুড়ে গ্যাস-বিদ্যুতের তীব্র সংকট দেখা দেয়। গ্যাসের অভাবে বিদ্যুতের উৎপাদন দৈনিক দুই হাজার মেগাওয়াট কমে গেছে বলে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) পক্ষ থেকে জানানো হয়। চট্টগ্রামে গ্যাসের অভাবে বাসা বাড়িতে রান্নাও বন্ধ হয়ে গেছে। ঢাকায় অনেক এলাকায় এক ঘণ্টা পরপর লোড শেডিং করা হয়। শহরের বাইরে পল্লী এলাকায় লোড শেডিংয়ের মাত্রা ছিল আরও বেশি।

এমন প্রেক্ষাপটে নসরুল হামিদ জানান, আগামী দুই দিনের মধ্যেই একটি টার্মিনাল পুনঃস্থাপন করা যাবে। ফলে পরিস্থিতি এখনকার চেয়ে উন্নতি হবে। তবে অপরটি ঠিক করতে সময় লাগবে। যে কারণে সেখান থেকে দৈনিক ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের একটা সংকট থাকবে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, সেটা (গভীর সমুদ্রে নিয়ে যাওয়া টার্মিনাল) ঠিক করতে ১২/১৫ দিন সময় লাগবে। বিদেশ থেকে ডুবুরি আসবে, তারা গিয়ে কানেকশান দেবে।

“এসময়ের মধ্যে কিছু কিছু জায়গায় লোড শেডিং থাকবে। তবে এখন যেমন অস্বাভাবিক পরিস্থিতি হয়ে গেছে সেটা হয়ত থাকবে না। সেটা আমরা কাভার করতে পারব। আগামী দুই দিনের মধ্যে আমরা একটা ভালো অবস্থানে যেতে পারব।”

পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা জানান, একটি ভাসমান টার্মিনাল ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত থেকে রক্ষা পেতে গভীর সমুদের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেটি আবার এনে আগের অবস্থায় স্থাপন করা একটু সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। আরেকটি টার্মিনাল নির্ধারিত স্থানের কাছাকাছিই আছে। ফলে এটি আমরা দ্রুত চালু করতে পারব।

ঘূর্ণিঝড় মোখায় এলএনজির ভাসমান লাইন খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলেও জানান তিনি।

Also Read: মোখা: এলএনজি টার্মিনাল বন্ধের পর গ্যাস-বিদ্যুতে ভোগান্তি

Also Read: মোখায় বন্ধ এলএনজি: চট্টগ্রামে গ্যাস সংকট ‘আরও এক সপ্তাহ’