”একটি ঘটনার পেছনে আরও অনেক ঘটনা থাকে। তাই সেগুলো আমরা সবকিছুই খতিয়ে দেখছি,” বলেন ওসি।
Published : 05 Mar 2025, 08:33 PM
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ‘গণপিটুনিতে’ জামায়াতে ইসলামীর নিহত দুই কর্মী সেখানে কেন গিয়েছিলেন; ঘটনার নেপথ্যে কী তা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পুলিশ।
তবে এ হত্যাকাণ্ডের দুই দিনেও মামলা হয়নি।
সাতকানিয়া থানার ওসি জাহেদুল ইসলাম বুধবার বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।
তিনি বলেন, “হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ‘সেনসেটিভ’ বিষয়। সেজন্য আমরা সঠিক বিষয়টি খোঁজার চেষ্টা করছি।”
সালিশী বিচারের নামে ‘ফন্দি’ করে তাদের ডেকে নেওয়া হয়েছিল বলে জামায়াত নেতা জায়েদ হোসেনের বক্তব্যের বিষয়ে ওসি বলেন, ”একটি ঘটনার পেছনে আরও অনেক ঘটনা থাকে। তাই সেগুলো আমরা সবকিছুই খতিয়ে দেখছি।“
সোমবার রাতে এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা চূড়ামনি গ্রামে ‘ডাকাত সন্দেহে’ দুইজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
নিহতরা হলেন- পাশ্ববর্তী কাঞ্চনা ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. নেজাম উদ্দিন ও আবু সালেক। তাদের নিজেদের কর্মী দাবি করে জামায়াতে ইসলামী বলছে হত্যাকাণ্ডটি ছিল ‘পরিকল্পিত’।
সাতকানিয়ার কাঞ্চনা ইউনিয়নের সেক্রেটারি জায়েদ হোসেন মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নিহত দুইজনই ওই এলাকার পরিচিত ব্যক্তি। তাদের না চিনে ‘গণপিটুনি’ দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। সালিশী বিচারের নামে ‘ফন্দি’ করে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।”
জামায়াত নেতা জায়েদের অভিযোগ, ’ফ্যাসিস্টদের’ চক্রান্তে জেনে শুনে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা কাউকে সেখানে যেতে দেয়নি। সড়কে গাছ কেটে ফেলে রাখা হয়েছিল। পরে মারধর করে মৃত্যু নিশ্চিত করার পর মাইকে ডাকাত হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়।
স্থানীয়রা বলেন, গত সরকারের আমলে দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকা নেজাম ৫ অগাস্ট পরবর্তী সময়ে দেশে আসেন। কাঞ্চনা ইউনিয়ন নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করেন তিনি। এওচিয়ার সাবেক এক চেয়ারম্যানের মাছের খামার ও ইটভাটা লুটের অভিযোগও ওঠে তার বিরুদ্ধে।
সাতকানিয়ায় গণপিটুনি: নিহত দুজনকে নিজেদের কর্মী দাবি জামায়াতের
সাতকানিয়ায় 'ডাকাত সন্দেহে' পিটুনি, নিহত ২
এছাড়া তিনি বিভিন্ন সময়ে দখল-বেদখলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ।
তাদের ভাষ্য, কয়েকটি সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে নেজাম ও সালেক দলবল নিয়ে সোমবার রাতে ছনখোলা গ্রামে যান। এসময় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায় এবং মসজিদের মাইকে ডাকাত পড়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
ঘটনার পর সাতকানিয়ার ওসি জাহেদুল বলেছিলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি সিএনজি অটোরিকশা, একটি পিস্তল ও আট রাউন্ড পিস্তলের গুলির খোসা জব্দ করেছেন তারা।
চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সনতু বলেন, ঘটনাস্থল থেকে যে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে সেটি থানা থেকে লুট করা অস্ত্র বলে পুলিশ প্রাথমিক অনুমান করছে। সেটি কোন ইউনিটের অস্ত্র তা যাচাই করতে পুলিশ সদরদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
নিহত সালেকের বিরুদ্ধে দুইটি হত্যাসহ পাঁচটি মামলা থাকার তথ্য দেয় পুলিশ।