তাদের সালিশের নামে ‘ফন্দি’ করে সেখানে ডেকে নিয়ে তাদেরকে মারা হয় বলে অভিযোগ করেছেন জামায়াত নেতা জায়েদ হোসেন।
Published : 04 Mar 2025, 03:54 PM
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ডাকাত সন্দেহে ‘গণপিটুনিতে’ নিহত দুজনকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করেছে জামায়াতে ইসলামী।
সংগঠনটির অভিযোগ, তাদেরকে ‘পরিকল্পিতভাবে’ হত্যা করা হয়েছে।
নিহতরা হলেন- মো. নেজাম উদ্দিন ও আবু সালেক। তারা কাঞ্চনা ইউনিয়নের বাসিন্দা।
সোমবার রাতে কাঞ্চনার পাশের এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা চূড়ামনি গ্রামে ‘ডাকাত সন্দেহে’ দুজনকে পিটিয়ে হত্যা করার কথা জানিয়েছিল পুলিশ।
সাতকানিয়া থানার ওসি জাহেদুল ইসলাম বলেছিলেন, নিহতরা সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে ছনখোলা চূড়ামনি গ্রামে গেলে মাইকে ডাকাত ঘোষণা দেওয়া হয়। এলাকাবাসী তাদের ঘিরে গণপিটুনি দিলে দুজনের মৃত্যু হয়।
নিহতদের একজনের কাছ থেকে একটি পিস্তল ও ছয়টি ব্যবহৃত গুলির খোসা পাওয়া গেছে বলেও জানান ওসি।
নিহত নেজাম ও সালেককে নিজেদের কর্মী দাবি করেছেন জামায়াতে ইসলামী সাতকানিয়া উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের সেক্রেটারি জায়েদ হোসেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “দুজনই কাঞ্চনা ইউনিয়ন জামায়াতের কর্মী। তাদের পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে।”
নিহতরা ওই এলাকার পরিচিত দাবি করে জামায়াত নেতা জায়েদ বলেন, “তাদের সালিশী বিচারের নামে ‘ফন্দি’ করে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে মারধর করে মৃত্যু নিশ্চিত করার পর মাইকে ডাকাত হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল।
সাতকানিয়ায় 'ডাকাত সন্দেহে' পিটুনি, নিহত ২
“ফ্যাসিস্টদের চক্রান্তে জেনেশুনে এ হত্যাকাণ্ড ঘটনানো হয়েছে। মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা কাউকে সেখানে যেতে দেয়নি। সড়কে গাছ কেটে ফেলে রাখা হয়েছিল।”
স্থানীয়রা বলছেন, বিগত সরকারের সময়ে তারা এলাকা ছাড়া ছিলেন। ৫ অগাস্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকে তারা এলাকায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন।
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সনতু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাতে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। শুনেছি কিছু স্শস্ত্র যুবক সেখানে গিয়েছিল। তারা সেখানে ফায়ার করছে। সেখান থেকে ৯৯৯ এ সংবাদ দেওয়া হয়।
“নিহতদের মধ্যে সালেকের বিরুদ্ধে দুইটি হত্যা ও বিভিন্ন ঘটনার পাঁচটি মামলা আছে। আরেকজনের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
পুলিশ সুপার বলেন, “যে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে সেটি থানা থেকে লুট করা অস্ত্র বলে আমরা প্রাথমিকভাবে অনুমান করছি। সেটি খতিয়ে দেখার জন্য আমরা পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠিয়েছি। কোন ইউনিটের অস্ত্র তখন তা জানা যাবে।”
রাজনৈতিক বিরোধে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে কি না জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বিষয়টি তদন্তনাধীন উল্লেখ করে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।