“সমাজ যাদের হাতে নিরাপদ হবে, যাদের হাতে সাবলীল থাকবে, যাদের দ্বারা সমাজ প্রস্ফুটিত হবে তাদেরকে আমরা পিছনে ফেলে এসেছি।”
Published : 18 Apr 2025, 09:43 PM
সমাজের একটি শ্রেণিকে বঞ্চিত রেখে ‘সুন্দর সমাজ গঠন সম্ভব নয়’ মন্তব্য করে উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেছেন, মৌলিক অধিকার পাওয়ার অধিকার সবার। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার নিশ্চিতে সরকারও বদ্ধপরিকর।
শুক্রবার বিকালে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের আয়োজনে একটি আলোচনা সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম এ কথা বলেন।
দামপাড়া পুলিশ লাইনসের মেট্রোপলিটন শ্যুটিং ক্লাবে ‘একটি নিরাপদ আশ্রয় ও সুন্দর ভবিষ্যৎ সকল শিশুর অধিকার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে পথশিশুদের সমাজ ও রাষ্ট্রের মূলধারায় ফেরাতে করণীয় বিষয়ে এ আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।
উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, “সমাজের একটি শ্রেণিকে বঞ্চিত রেখে সুন্দর সমাজ গঠন সম্ভব নয়। আমরা চাই তাদেরকে হৃদয়ের উত্তাপে আপন করে নিতে। কারণ আমরা সবাই এদেশের মানুষ, মৌলিক অধিকার পাওয়ার অধিকার আমাদের সকলের। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার নিশ্চিতে সরকারও বদ্ধপরিকর।”
শিক্ষা, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে এই শিশুদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে তাদের সমাজের সাথে আরো বেশি সম্পৃক্ত করার ওপর জোর দেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, “সমাজ যাদের হাতে নিরাপদ হবে, যাদের হাতে সাবলীল থাকবে, যাদের দ্বারা সমাজ প্রস্ফুটিত হবে তাদেরকে আমরা পিছনে ফেলে এসেছি। তাদের জন্য না রেখেছি খেলাধুলার সুযোগ ও স্নেহ-ভালবাসা, না রেখেছি জীবিকা সহায়ক আয়োজন।”
সমাজের এ ‘পরিত্যাজ্যতা’ পথশিশুদের মনে ‘সংক্ষুব্ধতা’ তৈরি করেছে বলে মনে করেন তিনি।
ফারুক ই আজম বলেন, “যখন তারা প্রতিবাদী হয়েছে বা অপরাধের সাথে জড়িত হয়েছে, পুলিশ আইন-শৃঙ্খলার প্রেক্ষাপট দেখিয়ে তাদের সংযত করার চেষ্টা করেছে।
“তাই আমি মনে করেছি, প্রথমে পুলিশকেই তাদের হৃদয়ের কাছাকাছি পৌঁছাতে হবে। তবেই তাদের প্রথমিক ভীতিটা কেটে যাবে, তারা যে সমাজের মূলস্রোতে সম্পৃক্ত সেটা অনুধাবন করতে সক্ষম হবে। তবেই সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব হবে।”
মহিলা ও শিশু বিষয়ক এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ আলোচনা সভায় বলেন, “যে দেশ শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে পারে না, সে দেশকে আমরা সফল বলতে পারি না। আমার দৃষ্টিতে বাংলাদেশ হতে হবে শিশুদের জন্য।”
তিনি বলেন, দরিদ্র শিশুদের বিনামূল্যে সরকারি স্কুলে শিক্ষা, বসবাসের জায়গা করে দেওয়া, সুস্বাস্থ্যের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করা এবং তাদের জীবনমান উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি এলাকার কমিউনিটির মাধ্যমে সবাইকে সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে।
“তাহলে সারা পৃথিবী জানবে বাচ্চারা নিরাপদ, বাচ্চারা সুস্থ এবং বাচ্চারা গড়ে উঠেছে একটি দায়িত্বশীল পরিমণ্ডলে।”
চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন, বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দীন, ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামছুল আলম, চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি আহসান হাবীব পলাশ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম, দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক।