চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার দেয়াং পাহাড়, হ্রদ ও বন ঘেরা জায়গায় বিচরণ করছে একটি হাতির পাল। তাদের হামলায় ফসলের ক্ষতি হচ্ছে, যাচ্ছে মানুষের প্রাণ।
Published : 23 Jan 2025, 10:35 PM
হাতির আক্রমণে নিহত-আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত মোট ৪৩ জনকে ২৬ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে বন বিভাগ।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে হাতির আক্রমণে নিহত দুই জনের পরিবারকে তিন লাখ টাকা করে মোট ছয় লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়।
নিহতরা হলেন আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের রেহানা আকতার (৩২) এবং একই ইউনিয়নের ৬ নম্বর গুচ্ছগ্রাম ওয়ার্ডের দুলাল মাহমুদ (৫৫)।
এছাড়া বিভিন্ন সময় হাতির আক্রমণে আহত ছয়জনকে এক রাখ টাকা করে মোট ছয় লাখ টাকা দেওয়া হয়। বিভিন্ন সময় হাতির আক্রমণে ফসল ও সম্পদের ক্ষতি হওয়ায় ৩১ জনকে দেওয়া হয় মোট ১৪ লাখ ৭২ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে হাতির পায়ে আরেক মৃত্যু
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাছের মো. ইয়াছিন নেওয়াজ, আনোয়ারার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার এবং বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা দীপান্বিতা ভট্টাচার্য্য অনুষ্ঠানে ক্ষতিপূরণের টাকা ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে তুলে দেন।
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার দেয়াং পাহাড়, হ্রদ ও বন ঘেরা জায়গায় বিচরণ করছে একটি হাতির পাল। তাদের হামলায় ফসলের ক্ষতি হচ্ছে, যাচ্ছে মানুষের প্রাণ। কর্ণফুলী ও আনোয়ারা উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন জুড়ে তাদের বিচরণ।
ওই এলাকার জনপ্রতিনিধিরা হাতিগুলো সরিয়ে নিতে বহুবার বন বিভাগকে চিঠি দিয়েছে। তবে বন বিভাগ ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিজেদের করিডোরে (চলাচলের পথ) কোনো বাধা হাতি সহ্য করতে পারে না। আর পূর্ব পুরুষের আবাসস্থল হওয়ায় ওই হাতির দলটি এ এলাকা ছেড়ে যাচ্ছে না।
হাতি ঠেকাতে লোকালয় পাহারা দেবে স্বেচ্ছাসেবক
বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা দীপান্বিতা ভট্টাচার্য্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আনোয়ারায় ওই হাতির দলের আক্রমণে বিভিন্ন সময় নিহত, আহত এবং ক্ষতিগ্রস্তদের বন বিভাগ নিয়মিত ক্ষতিপূরণ দিয়ে যাচ্ছে।
“গত বছর নিহত চারজনসহ ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছিল। গত বছর নিহত আরো দু’জনের পরিবারসহ বাকিদের এবার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হল।”
দেয়াং পাহাড় ঘেরা ওই এলাকায় ২০১২-১৩ সাল থেকেই হাতির আনাগোনা বেশি। আগেও হাতির আসা-যাওয়া ছিল, তবে তখন তুলনামূলক কম ছিল বলে স্থানীয় বাসিন্দা ও বন বিভাগের ভাষ্য।
২০১৮ সালের শেষ দিকে ওই হাতির দলটি স্থায়ীভাবে কেইপিজেড এলাকায় বসবাস শুরু করে। ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে হাতির আক্রমণে ওই এলাকায় মানুষের প্রথম মৃত্যু হয়।
কর্ণফুলী উপজেলার বড় উঠান এবং আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ, বারখাইন, বটতলী ও বারশত; এই পাঁচ ইউনিয়নে গত ৬ বছর ধরে হাতির দলটি ‘তাণ্ডব’ চালাচ্ছে।
হাতি বনাম মানুষ, কার ঠিকানায় কে?
আনোয়ারায় হাতির আক্রমণে প্রাণ গেল দুজনের
শুরুতে এই দলে দুটি বড় এবং একটি ছোট হাতি ছিল। মাঝে মাঝে আরো একটি বড় আকারের হাতিকে এ দলের সঙ্গে দেখা যায়। স্থানীয়দের কাছে সেটি ‘লেজ কাটা’ হাতি নামে পরিচিত।