সীতাকুণ্ডে তুলার গুদামের আগুন নিভল ২১ ঘণ্টায়

নেমসন কন্টেইনার ডিপো সংলগ্ন ওই তুলার গুদামে একটি কোম্পানির আমদানি করা দুই হাজার ৭০০ টন তুলা মজুদ ছিল।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 March 2023, 04:23 AM
Updated : 12 March 2023, 04:23 AM

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে তুলার গুদামে লাগা আগুন প্রায় ২১ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের এনডিসি তৌহিদুল ইসলাম।

রোববার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সকাল ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনো ধোঁয়া আছে। তাই ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে ফায়ার আউট ঘোষণা করা হয়নি।”

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ছোট কুমিরা এলাকার নেমসন কন্টেইনার ডিপো সংলগ্ন ওই তুলার গুদামে আগুন লাগে। ইউনিটেক্স নামে একটি কোম্পানির আমদানি করা দুই হাজার ৭০০ টন তুলা মজুদ ছিল সেখানে। 

পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় দীর্ঘ চেষ্টাতে ওই গুদামের আগুন নেভানো যাচ্ছিল না। আশপাশের পুকুরসহ বিভিন্ন জলাধারের পানি শেষ হয়ে যাওয়ায় ক্যান্টনমেন্ট, ভাটিয়ারি, বাড়বকুণ্ডসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে পানি সংগ্রহ করা হয়।

এনডিসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, গুদামে তুলার পরিমাণে বেশি হওয়ায় এক অংশের আগুন নির্বাপণ করার পর স্তূপের নিচ থেকে আরেক অংশে আগুন ছড়াচ্ছিল। 

"প্রায় ১০ একর আয়তনের এ গোডাউনের চারদিকের দেয়াল নিয়ন্ত্রিতভাবে বুলডোজার দিয়ে ভেঙে চতুর্দিক থেকে ফায়ার টেন্ডার (পানি ছড়ানোর মেশিন) প্রবেশ করাতে হয়েছে। এক্সক্যাভেটর ও পেলোডার মেশিন ব্যবহার করে তুলার স্তূপ অপসারণ করে সেখানে পানি ছিটানো হয়েছে।

Also Read: তুলার গুদামের আগুন ১২ ঘণ্টাতেও নেভেনি, নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় ১৮ ইউনিট

Also Read: ‘পানির অভাবে’ ৯ ঘণ্টায়ও নেভানো যায়নি সীতাকুণ্ডে তুলার গুদামের আগুন

Also Read: সীতাকুণ্ডে পুড়ল তুলার গুদাম

“এ আগুন নেভাতে পানি ছাড়া অন্য কোনো রাসায়নিক বা পাউডার ব্যবহার করার উপায় ছিল না। কিন্তু এত পানির উৎসও আশপাশে নেই। ঘটনাস্থলের আশেপাশের খাল, পুকুর ও রিজার্ভারের পানি শেষ হয়ে গেলে ক্যান্টনমেন্ট, ভাটিয়ারি, বাড়বকুণ্ডসহ বিভিন্ন সোর্স থেকে পানির যোগান দিতে হয়েছে।” 

ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিটের পাশাপাশি, সেনা, নৌবাহিনী ও বিজিবির চারটি করে এবং বিমান বাহিনীর দুটি ইউনিটসহ মোট ২২টি ইউনিট এ আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান শনিবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় আগুন নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর সহায়তা চাওয়ার কথা বলেছিলেন। পরে সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী ও বিজিবি'র ফায়ার ফাইটিং ইউনিটগুলো রাতেই ফায়ার সার্ভিসের সাথে আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়।

আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধানে চট্টগ্রামের স্থানীয় সরকার বিষয়ক উপ পরিচালক বদিউল আলমকে প্রধান করে জেলা প্রশাসনেরর পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদ মর্যাদার একজন, ফায়ার সার্ভিস, শিল্প পুলিশ, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের একজন করে প্রতিনিধি, সীতাকুণ্ড উপজেলার ইউএনও ও থানার ওসি, বিটিএমসি, বিটিএমইএ ও বিস্ফোরক পরিদপ্তরের একজন করে প্রতিনিধি রাখা হয়েছে কমিটিতে।

কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।