তুলার গুদামের আগুন ১২ ঘণ্টাতেও নেভেনি, নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় ১৮ ইউনিট

ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে যোগ দিয়েছে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর ১০টি ইউনিট।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে তুলার গুদামে লাগা আগুন ১২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

গুদামের বিভিন্ন অংশে এখনও আগুন জ্বলছে, যা নেভাতে ১৮টি ইউনিট কাজ করছে বলে শনিবার রাত ১১টা ৪০ মিনিটে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের এনডিসি তৌহিদুল ইসলাম।

তিনি জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিটের পাশাপাশি, সেনা ও নৌবাহিনীর চারটি করে এবং বিমান বাহিনীর দুটি ইউনিটসহ মোট ১৮টি ইউনিট কাজ করছে।

পাশাপাশি বিজিবির চারটি ফায়ার ফাইটিং ইউনিটও ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে বলে জানান এনডিসি তৌহিদুল।

সেনাবাহিনীর বিশেষ উদ্ধারকারী টিম ইউএসএআর (ইউনিট সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ টিম) রাতের মধ্যে ঘটনাস্থলে আসছে বলেও জানান তিনি।

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার সীতাকুণ্ডের ছোট কুমিরায় একটি তুলার গুদামে এ আগুন লাগার পরপরই স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস গিয়ে কাজ শুরু করে। পরে আরও ইউনিট যোগ দিয়েও আশেপাশে পানির অভাবে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পায়।

এনডিসি তৌহিদুল জানান, ঘটনাস্থলে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ও পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ অবস্থান করে অগ্নি নির্বাপণ কার্যক্রমে সমন্বয় করছেন।

এদিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘঠনায় ১০ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। কমিটিকে পাঁচ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

শনিবার রাতে আগুন নেভানোর কাজের অগ্রগিত সম্পর্কে জানাতে গিয়ে এসব তথ্য জানান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের এনডিসি তৌহিদুল ইসলাম।

এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ছোট কুমিরা এলাকার নেমসন কন্টেইনার ডিপো সংলগ্ন একটি তুলার গুদামে আগুন লাগে; পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় দীর্ঘ চেষ্টাতে রাতেও নেভানো সম্ভবপর হয়নি।

এরপর রাতে সেনা ও নৌ বাহিনীর ছয়টি ইউনিট কাজ শুরু করে এবং বিমান বাহিনীর একটি দলও ঘটনাস্থলে এসেছে বলে জানান এনডিসি তৌহিদুল।

ওই গুদামে ইউনিটেক্স নামে একটি কোম্পানির দুই হাজার ৭০০ টন তুলা মজুদ ছিল বলেও জানান তিনি।

এর আগে সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় আগুন নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন।

তিনি তখন সাংবাদিকদের বলেন, গুদামটিতে পানির কোনো রিজার্ভার নেই। পাশ্ববর্তী নেমসন কন্টেইনার ডিপোর আন্ডারগ্রাউন্ড রিজার্ভারের মজুদ করা পানিও শেষ হয়ে গেছে। যার কারণে দূর থেকে পানি আনতে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিসকে।

এদিকে রাতে জেলা প্রশাসনের গঠন করা কমিটিতে প্রধান করা হয়েছে স্থানীয় সরকার বিষয়ক উপ পরিচালক বদিউল আলমকে।

এনডিসি তৌহিদুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, কমিটিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদ মর্যাদার একজন, ফায়ার সার্ভিস, শিল্প পুলিশ, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের একজন করে প্রতিনিধি, সীতাকুণ্ড উপজেলার ইউএনও ও থানার ওসি, বিটিএমসি, বিটিএমইএ ও বিস্ফোরক পরিদপ্তরের একজন করে প্রতিনিধি রাখা হয়েছে।

আগুন নেভাতে কুমিরা স্টেশনের পাশাপাশি সীতাকুণ্ড এবং শহর থেকে আগ্রাবাদ ও বায়েজিদ ফায়ার স্টেশনের আরও কয়েকটি ইউনিট যোগ দিয়েছে। সবমিলিয়ে আটটি ইউনিট কাজ করছে।

ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ জানান, দুর্ঘটনাস্থলের আশেপাশে পানি ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাতে আগুন অন্য দিকে ছড়িয়ে না পড়ে। আগুন গুদামের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।