রোববার সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবে ডিএমপি।
Published : 16 Mar 2024, 07:42 PM
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটামের মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় তার সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মান ও অব্যাহতি পাওয়া সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে বিস্তারিত রোববার সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হবে বলে ডিএমপির তরফে জানানো হয়েছে।
শনিবার রাত পৌনে ১১টায় ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত উপ কমিশনার কে এন রায় নিয়তি এসএমএস দিয়ে জানান, ওই সংবাদ সম্মেলনে থাকবেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার খ. মহিদ উদ্দিন।
এর আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার হাবিবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনার পর থেকে এই দুইজনকে নজরদারিতে রাখা হয়েছিল। তারা পুলিশের হেফাজত রয়েছেন।
তবে গোয়েন্দারা তাদের কোথা থেকে এবং কখন নিজেদের হেফাজতে নিয়েছেন তা বলেননি তিনি।
অপর এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, কুমিল্লা পুলিশের একটি দল ঢাকার পথে রয়েছে। আটক এ দুইজনকে তাদের কাছে হস্তান্তর করবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
কুমিল্লা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের একটি টিম এ নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের সঙ্গে কাজ করছে। এ নিয়ে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।“
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় তার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী ও শিক্ষক দ্বীন ইসলামকে গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।
এই দাবি পূরণ না হলে সোমবার উপাচার্য কার্যালয় ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ার দেওয়া হয় শনিবার আয়োজিত এক সমাবেশে।
কুমিল্লা সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষক প্রয়াত অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের মেয়ে অবন্তিকা শুক্রবার রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও ‘পিসি পার্ক স্মরণিকা’ নামের ১০ তলা ভবনের দ্বিতীয় তলার বাসায় গলায় রশি বেঁধে ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেন।
মৃত্যুর ১০ মিনিট পূর্বে নিজের ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এ ঘটনার জন্য সহপাঠী আম্মানকে দায়ী করেছেন। একইসঙ্গে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকেও এ ঘটনার জন্য দায়ী করেন।
আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আগে নিজের ফেইসবুক পেইজে দীর্ঘ একটি লেখা পোস্ট করেন অবন্তিকা।
তিনি লেখেন, “আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী, আর তার সহকারী হিসেবে তার সাথে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম।”
অবন্তিকার মৃত্যুর খবর ক্যাম্পাসে আসার পথ থেকে তার সহপাঠীসহ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।
শনিবার সকালে আম্মানকে বহিষ্কার ও দ্বীন ইসলামকে সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পাশাপাশি ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন দ্বীন।
এদিন বেলা ৩টার দিকে ক্যাম্পাসের শান্ত চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। সেটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে ভিক্টোরিয়া পার্ক এলাকা ঘুরে ফের শান্ত চত্বরে এসে সমাবেশে রূপ নেয়। পরে সেখান থেকে ওই দুইজনকে গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছিল।