সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মান ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে দায়ী করে আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকাকে তার বাবার কবরের পাশেই দাফন করা হয়েছে।
শনিবার বিকাল ৩টায় কুমিল্লা সরকারি কলেজ মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় অবন্তিকার বিভাগের সহপাঠীরা ছাড়াও স্থানীয় বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেন।
অবন্তিকার মামা মাহবুবুর রহমান আগেই বাবার কবরের পাশে তার ভাগ্নিকে দাফন করার কথা জানিয়েছিলেন।
এর আগে ময়নাতদন্ত শেষে দুপুর ১টার দিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে বাগিচাগাঁওয়ের বাসার সামনে আনা হয় অবন্তিকার মরদেহ।
নগরীর বাগিচাগাঁও ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন ‘অরনি ভবনের’ সামনে অবন্তিকার মরদেহ নিয়ে লাশবাহী গাড়ি পৌঁছালে বাসা থেকে বেরিয়ে আসেন তার মা তাহমিনা শবনম।
মেয়ের মরদেহ দেখে বিলাপ করতে করতে তাহমিনা শবনম বলেন, “আল্লাহ আমার স্বামীও নিলো, মেয়েও নিলো। এই আমি কার লাশ দেখছি? এটাতো আমার তিল তিল করে গড়ে ওঠা স্বপ্নের লাশ দেখছি।”
এ কথা বলেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে আত্মীয়রা তাকে ধরাধরি করে বাসায় নিয়ে যান।
এ সময় এলাকাজুড়ে কান্নার রোল উঠে।
কুমিল্লা সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষক প্রয়াত অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের মেয়ে অবন্তিকা শুক্রবার রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও ‘পিসি পার্ক স্মরণিকা’ নামের ১০ তলা ভবনের দ্বিতীয় তলার বাসায় গলায় রশি বেঁধে ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেন।
মৃত্যুর ১০ মিনিট পূর্বে নিজের ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এ ঘটনার জন্য আম্মান নামে তার এক সহপাঠীকে দায়ী করেছেন। একইসঙ্গে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকেও এ ঘটনার জন্য দায়ী করেন।
এদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে শনিবার বিকেল তিনটায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
অবন্তিকার মৃত্যুতে বিক্ষোভ হয়েছে কুমিল্লাতেও।