অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত পর্যালোচনা কমিটি সম্প্রতি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
Published : 13 Oct 2024, 01:50 PM
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে গঠিত পর্যালোচনা কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রজ্ঞাপন জারির জন্য ৩ দিন সময় বেঁধে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। আর সেটি না করা হলে ফের আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে এ অবস্থানের কথা তুলে ধরা হয়।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা এখন ৩০ বছর। এটি ৩৫ করার দাবিতে কয়েক বছর ধরেই নিয়মিত কর্মসূচি পালন হচ্ছিল। কিন্তু বিগত আওয়ামী লীগ সরকার সেই দাবি একাধিকবার নাকচ করে দেয়।
শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলে সেই দাবি ফের জোরাল হলে ৩০ সেপ্টেম্বর কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। আন্দোলনকারীদের দাবি পর্যালোচনা করে সম্প্রতি প্রতিবেদন দিয়েছে ওই কমিটি।
এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র ইমতিয়াজ হোসাইন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এ সরকার আমাদের আবেগকে মূল্যায়ন করেছে। তারা একটি কমিশন গঠন করেছে।
“যেহেতু এই কমিশন আমাদের যুক্তি শুনে, কথা বলে, গবেষণা করে পুরুষের জন্য ৩৫ বছর এবং নারীদের জন্য ৩৭ বছর করার একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে- আমরা চাই সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দ্রুত প্রজ্ঞাপন দেওয়া হোক।"
৩ কর্মদিবসের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারির আল্টিমেটাম দিয়ে তিনি বলেন, “যদি তিন কর্ম দিবসের ভেতর এ সুপারিশ অনুযায়ী উপদেষ্টাবৃন্দ এবং রাষ্ট্রপতি স্বীকৃত প্রজ্ঞাপন দেওয়া না হয়, বাংলাদেশের ছাত্র সমাজের বিছানা হবে রাজপথ। "
এ সময় চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ন্যূনতম ৩৫ বছর করার পক্ষে কিছু যুক্তি তুলে ধরেন আন্দোলনকারীদের একজন আল আমিন রাজু।
তিনি বলেন, “বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে ৫৯ বছর বা অবসরের আগের দিন পর্যন্ত চাকরিতে প্রবেশ করা যায়; তাহলে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উচিৎ চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা উন্মুক্ত করা।
“সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বাড়ানোর সাথে সরকারের কোনো প্রকার আর্থিক সংশ্লিষ্টতা নেই কিন্তু সিদ্ধান্তটি খুবই জনকল্যাণমুখী। ফলে উপকৃত হবে কোটি কোটি শিক্ষিত যুব সমাজ, তার পরিবার, সর্বোপরি দেশের জনগণ।"
রাজু বলেন, “বর্তমানে বাংলাদেশের গড় আয়ু ৭২ দশমিক ৩ বছর, তাই চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৫৫ বছর পর্যন্ত অনায়াসে বৃদ্ধি করা যেতে পারে।
“পার্শ্ববর্তী দেশসমূহে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৪০, ৪৫ এমনকি ৫৫ বছর পর্যন্ত রয়েছে। বিশ্বের ১৬২টির অধিক দেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৪০ বা তার অধিক রয়েছে, বাংলাদেশে কেন নয়?"
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা উন্মুক্ত হলে মেধাপাচার রোধ করা সম্ভব হবে মন্তব্য করে আল আমিন রাজু বলেন, “চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে বয়সের বাধা না থাকলে ছাত্রসমাজ চাকরির আশায় বসে না থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি ছোটখাটো কাজ বা ব্যবসা-বাণিজ্যে সম্পৃক্ত থেকে নিজেদেরকে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে।
“বিদেশ থেকে উন্নত ডিগ্রি অর্জন করেও দেশে এসে মেধা কে কাজে লাগাতে পারবে। প্রবাসে থেকে যারা কাজ করেন, তারা কোনো কারণে সে দেশে চাকুরিচ্যুত হলে বা স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দিলে- সেক্ষেত্রে নিজ দেশে এসেও তাদের মেধা ও অভিজ্ঞতাকে তাদের নিজ নিজ কাজের ক্ষেত্র সমূহে কাজে লাগিয়ে দেশকে উন্নত করতে ভূমিকা রাখতে পারবে।"
আন্দোলনকারীদের তরফে ইউসুফ জামিল, সোনিয়া চৌধুরী, জসিম উদ্দিন, লাবনী আনোয়ার সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা: প্রতিবেদন জমা কমিটির