ডলারের বিনিময় মূল্যজনিত ক্ষতির কারণে কিছু প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন সক্ষমতা কমে ‘ফোর্সড ঋণ’ সৃষ্টি হচ্ছে এবং চলতি মূলধনের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে, বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
Published : 27 Nov 2024, 07:26 PM
বিদেশি মুদ্রা বিশেষ করে ডলারের দর বেড়ে যাওয়ার কারণে যেসব আমদানিনির্ভর শিল্প প্রতিষ্ঠান ক্ষতির মধ্যে পড়েছে, সেগুলো ঋণ পরিশোধে আট বছর সময় পাবে; যা সমান কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে।
এ সুবিধা শুধু সেসব আমদানিকারক শিল্প কারখানা পাবে সেগুলো বিলম্বে ঋণ পরিশোধের শর্তে আমদানি করেছিল এবং ক্ষতির শিকার হয়েছে।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, কোনো খেলাপি গ্রাহক প্রতিষ্ঠান এ সুবিধা পাবে না। একই সঙ্গে একক গ্রাহক ঋণসীমা কোনোভাবেই অতিক্রম করা যাবে না।
এ বিষয়ক নির্দেশনায় বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, এ সুবিধা নিতে চাইলে গ্রাহকদের আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে নিজেদের ব্যাংকে আবেদন করতে হবে।
ঋণ পরিশোধে গ্রাহকদের বাড়তি সময় দেওয়ার এ সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিনিময় হারের কারণে আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি না তা সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে যাচাই বাছাই করতে হবে।
সার্কুলারে সময় বাড়ানোর কারণ ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, “কোভিড ১৯ এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দাসহ নানা কারণে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার মূল্যমান উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় স্থানীয় উৎপাদনমুখী শিল্পগুলো কাঁচামাল আমদানিকালে বিনিময় হারজনিত ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
“ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন সক্ষমতা কমে যাওয়াসহ ফোর্সড ঋণ সৃষ্টি হচ্ছে এবং চলতি মূলধনের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।”
এ পরিস্থিতিতে আমদানিনির্ভর শিল্পসহ ইস্পাত ও সিমেন্ট খাত এবং স্থানীয় যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পণ্যের বিক্রয়মূল্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত, সেগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা অক্ষুণ্ন রাখার জন্য নতুন এ নির্দেশনা।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল আমদানির জন্য ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত খোলা ঋণপত্রের ক্ষেত্রে বিনিময় হারজনিত ক্ষতির মোট পরিমাণ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক নির্ধারণ করবে।
অপ্রত্যাশিত বিনিময় হারজনিত ক্ষতির মোট পরিমাণ নির্ণয়ের পদ্ধতিও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ক্ষতির সমপরিমাণ অর্থ গ্রাহকের ঋণ-ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে চলতি মূলধন ঋণসীমার বাইরে আলাদা একটি মেয়াদি ঋণ হিসাবে স্থানান্তর করা যাবে।
সর্বোচ্চ এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ আট বছর মেয়াদে সমকিস্তিতে (মাসিক বা ত্রৈমাসিক) ঋণের এ অর্থ পরিশোধ করা যাবে বলে সার্কুলারে বলা হয়েছে।
২০২২ সালের মাঝামাঝি থেকে ডলারের দর বাড়তে থাকে। কোভিড মহামারী শুরুর আগে প্রতি ডলারের দর ছিল ৮৬ টাকা। বর্তমানে তা ১২০ থেকে ১২১ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে।