পরীমণি এবং তার কস্টিউম ডিজাইনার জিমির বিরুদ্ধে বাদীকে মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগের ‘সত্যতা’ পাওয়ার কথা বলা হয়েছে পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে।
Published : 18 Apr 2024, 01:38 PM
চিত্রনায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের করা ‘মারধর, ভাঙচুর ও ভয়ভীতি দেখানোর’ মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণের বিষয়ে শুনানি হবে বৃহস্পতিবার।
বাদীপক্ষে আইনজীবী এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারিরও আবেদন করেছেন। জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সাইফুল ইসলামের আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ এবং সমন জারির বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের ঢাকা জেলার পরিদর্শক মো. মনির হোসেন গত ১৮ মার্চ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। আসামি পরীমণি এবং তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিমের বিরুদ্ধে বাদীকে মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগের ‘সত্যতা’ পাওয়ার কথা বলা হয় সেখানে।
তবে মামলার আরেক আসামি ফাতেমা তুজ জান্নাত বনির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে তদন্ত কর্মকর্তা আদালতকে জানিয়েছেন।
এ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আনোয়ারুল কবীর বাবুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যেহেতু মামলার সব ধারাই জামিনযোগ্য এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানাযোগ্য নয়, সে কারণে আদালত অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারির আদেশ দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে পরীমনি ও জিমিকে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইতে হবে।”
সাভারের বিরুলিয়ায় বোট ক্লাবে ২০২১ সালের ৮ জুন রাতে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ তুলেছিলেন পরীমনি। এ বিষয়ে ফেইসবুকে পোস্টের পর সংবাদ সম্মেলনে আসলে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
পরে পরীমনির মামলায় ব্যবসায়ী নাসিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। নাসির বোট ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন।
পরীমনির মামলায় বিচার চলাকালে জামিনে থাকা অবস্থায় নাসির উদ্দিন ২০২২ সালের ৬ জুলাই পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পাল্টা এই মামলা করেন।
২০২২ সালের ১৮ জুলাই ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রাজীব হাসান পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।
মামলার আরজিতে বলা হয়, পরীমনি ও তার সহযোগীরা সেদিন ক্লাবে ঢুকে মদ পান করে অর্থ পরিশোধ না করেই যেতে চাচ্ছিলেন। তিনি ওই রাতে যখন বোট ক্লাব ছাড়ছিলেন, তখন পরীমনি ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে’ তাকে ডেকে নেন এবং একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনামূল্যে পার্সেল দেওয়ার জন্য চাপ দেন।তিনি এতে রাজি না হওয়ায় পরীমনি তাকে গালমন্দ করেন। বাদানুবাদের এক পর্যায়ে পরীমনি তার দিকে একটি সারভিং গ্লাস ছুড়ে মারেন এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিও ছুড়ে মারেন। এতে তিনি মাথায় এবং বুকে আঘাত পান।
নাসিরের দাবি, সেই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পরীমনি সাভার থানায় ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন।
অন্যদিকে সাভার থানায় পরীমনির করা ধর্ষণ মামলায় অভিযোগ ছিল, পূর্ব পরিচিত তুহিন সিদ্দিকী অমি গত ৮ জুন রাতে তাকে ‘পরিকল্পিতভাবে’ বোট ক্লাবে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে নাসির তাকে ‘ধর্ষণের চেষ্টা’ ও মারধর করেন।
ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন।
এরপর ২০২২ বছরের ১৮ মে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে আসামিদের বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত। বর্তমানে মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।
পুরনো খবর