এছাড়া ভস্মীভূত ওই মার্কেটের বিভিন্ন স্থান থেকে সন্ধ্যায়ও উড়ছিল ধোঁয়া। পাশের ভবনের ভেতরেও জ্বলছিল আগুন।
Published : 04 Apr 2023, 08:01 PM
বঙ্গবাজার মার্কেটের সকালের আগুন দুপুরে নিয়ন্ত্রণে আনার কথা ফায়ার সার্ভিস বললেও সন্ধ্যায়ও আগুন জ্বলতে দেখা গেছে একটি ভবনের ভেতরে। এছাড়া ভস্মীভূত ওই মার্কেটের বিভিন্ন স্থান থেকে উড়ছে ধোঁয়া।
দেশের অন্যতম বড় কাপড়ের মার্কেট ঢাকার বঙ্গবাজারে মঙ্গলবার সকালে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের অর্ধশত ইউনিট কাজে নামে এই আগুন নেভাতে, সেই সঙ্গে হাত লাগায় বিমানবাহিনী ও সেনাবাহিনী।
ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় দুপুরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কথা জানান ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন।
তিনি যখন সাংবাদিকদের একথা বলছিলেন, তখন বঙ্গবাজারের উত্তর পাশের এনেক্সকো ভবন এবং পশ্চিম পাশের বঙ্গবাজার ইসলামিয়া মার্কেট ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছিলেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
বিকালেও ওই ভবন দুটিতে আগুন ও ধোঁয়া উড়তে দেখা যাচ্ছিল।
এনেক্সকো ভবনের পাশের মহানগর কমপ্লেক্স মার্কেটের দোকান মালিক সমিতির পরিচালক শেখ মো. শাকিল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকেও ওই ভবনের ভেতরে আগুন জ্বলার কথা বলছিলেন।
এনেক্সকো ভবনের সাত তলার দক্ষিণ পাশ থেকে কালো ধোঁয়া বিকালেও বের হতে দেখা যাচ্ছিল। তখনও দোকানকর্মীরা বলছিলেন, ভেতরে আগুন এখনও জ্বলছে।
এই ভবনের ৪, ৫, ৬ তলায় যাদের দোকান আছে, তারা সেসব দোকানের মালামাল উপর থেকে নিচে ফেলে রক্ষার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন বিকালেও।
রাত ৮ টার দিকেও এনেক্সকো টাওয়ারের উত্তর আর পশ্চিম পাশে বড় বড় দুটি মই দিয়ে আগুন নেভাতে ব্যস্ত ছিলেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা শাহজাহান মোল্লা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে এনেক্সকো টাওয়ারের ভেতরের আগুন নেভাতে আরও সময় লাগবে। ভেতরে অনেক গুদাম রয়েছে। ওই সব গুদামে সুপ্ত আগুন রয়েছে।”
দুপুরের পর এই ভবনটিতে আগুন নেভানোর কাজ তদারক করতে দেখা গেছে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক মাইন উদ্দিনকে।
পানি কোন দিকে দিতে হবে, সে বিষয়ে এ তিনি এক কর্মীকে নির্দেশনা দেওয়ার সময় শাহজাহান নামে এক দোকান মালিক বলে ওঠেন- “স্যার, কালই ১৫ লাখ টাকার মাল তুলেছি, প্লিজ ওই দিকে পানি দিতে বলেন।”
তখন ব্রিগেডিয়ার মাইন উদ্দিন বলেছিলেন, আগুন তারা নিয়ন্ত্রণে এনেছেন, তবে কিছু ‘পকেটে’ আগুন থেকে গেছে, সেটা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
একই সময় পশ্চিম পাশে বঙ্গবাজার ইসলামিয়া মার্কেটের দক্ষিণ দিকের অংশে চতুর্থ তলায় আগুন এবং ধোঁয়া দেখা যাচ্ছিল। সেখানেও কাজ করছিলেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
ভয়াবহ এই আগুন নেভাতে আশপাশে পর্যাপ্ত পানির উৎস না থাকার কথা বলছিলেন এই বাহিনীর কর্মীরা।
মালামালের বস্তা নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ীরা
মূল বঙ্গবাজারের চারটি মার্কেট থেকে কোনো মালামাল উদ্ধার করতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। তবে এনেক্সকো টাওয়ার এবং ইসলামিয়া মার্কেট ভবন থেকে কিছু মালামাল উদ্ধার করে।
রাতে সড়কের পাশের ফুটপাতে ওইসব মালামাল রেখে পাহারা দিচ্ছিলেন তারা। উৎসুক জনতার ভিড়ে সেসব মালামাল হারানোরও শঙ্কা তাদের।
দেলোয়ার নামে একজন ব্যবসায়ী বলেন, “ভাই, এত মালামাল কোথায় রাখব, ভেবে কূল পাচ্ছি না। তবে সরিয়ে নিচ্ছি, দেখি কোথায় রাখা যায়।”
শাহবাগ থানার এসআই আল আমিন বলেন, “পুলিশ বাইরের কাউকে কর্ডন এলাকায় ঢুকতে দিচ্ছে না। সুতরাং মালামাল খোয়া যাবে না।”
অনেককে মালামাল ছোট ছোট পিকআপ ভ্যানে করে ও কুলির মাধ্যমে সরিয়ে নিতে দেখা গেছে।