বাকিরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করে জামানতের অর্থ ফেরত নিতে পারবেন।
Published : 22 Feb 2024, 11:38 PM
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামানত হারিয়েছেন এক হাজার ৪৫৬ জন প্রার্থী, যা মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রায় ৭৪ শতাংশ।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠানো রিটার্নিং কর্মকর্তাদের হালনাগাদ তালিকা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ২৯৯ আসনের ভোট হয়। এসব আসনে ২৭টি রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলিয়ে ১,৯৬৯ জন অংশ নেন। পরে ১২ ফেব্রুয়ারি নওগাঁ-২ আসনে ভোট হয়, যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন চারজন।
ভোট শেষ হওয়ার পর গত ২৪ জানুয়ারি জামানত হারানোদের তালিকা ও তথ্য চেয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের চিঠি দেয় ইসির নির্বাচন প্রশাসন শাখা। এই তথ্য ১০ কার্যদিবসের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়।
বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত সচিব (নির্বাচন ব্যবস্থাপনা-২) ফরহাদ আহম্মদ খান বলেন, সংসদ নির্বাচনে জামানতের পরিমাণ ২০ হাজার টাকা। নির্বাচনি আইন অনুযায়ী, প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ (১২.৫ শতাংশ) ভোট না পেলে বাজেয়াপ্ত হয়।
তিনি বলেন, “চলতি মাসে মাঠ পর্যায় থেকে জামানত বাজেয়াপ্ততের তথ্যাবলী এসেছে। দলভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ তথ্য পেতে একটু সময় লাগবে। বাজেয়াপ্ত হওয়া জামানতের অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা হয়ে থাকে।
“জয়ীসহ বাকিরা চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে গিয়ে জামানতের অর্থ ফেরতের আবেদন করে তুলে নিতে পারেন।”
২০ হাজার টাকা করে জামানত হারানো ১৪৫৬ জনের দুই কোটি ৯১ লাখ ২০ হাজার টাকা জমা হয়েছে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে জামানত খুইয়েছেন ১ হাজার ৪৫৪ জন প্রার্থী । আর ১২ ফেব্রুয়ারি নওগাঁ-২ আসনের ভোটে জামানত হারান আরও দুজন। সবমিলিয়ে ৭৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।
এবার ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২২৪টি, জাতীয় পার্টি ১১টি, জাসদ ১টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটি ১টি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ১টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে জয়লাভ করেন।
শতকরা হারে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ
এবার ১,৯৭৩ প্রার্থীর মধ্যে ৭৪ শতাংশ প্রার্থী জামানত খুইয়েছেন, যা ১৯৯১ সাল থেকে সংসদ নির্বাচনের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
সবশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচনে ১ হাজার ৪২২ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। সেবার দলীয় ও স্বতন্ত্র মিলে প্রার্থী ছিলেন ১ হাজার ৮৫০ জনের বেশি। সে হিসাবে জামানত হারানোদের হার সংখ্যা ৭৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ। অবশ্য এ নির্বাচনের কোনো পরিসংখ্যান প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি তৎকালীন কে এম নূরুল হুদা কমিশন।
এর আগে ১৯৯১ সালের নির্বাচনে দুই হাজার ৭৮৭ প্রার্থীর মধ্যে ১৯৩৪ জন জামানত হারান। তার মানে ৬৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ প্রার্থী পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে জামানত খোয়ান। সে সময় জামানতের পরিমাণ ছিল ৫ হাজার টাকা। বাজেয়াপ্ত অর্থের পরিমাণ ৯৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
সপ্তম সংসদ নির্বাচনে দুই হাজার ৫৭৪ প্রার্থীর মধ্যে এক হাজার ৭৬০ জন অর্থাৎ ৬৯ দশমিক ৩২ শতাংশ জামানত হারায়।
অষ্টম সংসদ নির্বাচনে এক হাজার ৯৩৯ প্রার্থীর মধ্যে এক হাজার ২৫৯ জন বা ৬৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ প্রার্তী জামানত হারান।
নবম সংসদ নির্বাচনে এক হাজার ৫৬৭ প্রার্থীর মধ্যে ৯৪১ জন অর্থাৎ ৬০ দশমিক ০৫ শতাংশ প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।
২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে ১৫৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। বাকি ১৪৭ আসনে ৩৯০ প্রার্থীর মধ্যে ১৬৩ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। অর্থাৎ ৪১ দশমিক ৭৯ শতাংশ প্রতিদ্বন্দ্বীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল।
আরও পড়ুন
কেন্দ্রভিত্তিক ফল প্রকাশ: দুই কেন্দ্রে শতভাগ ভোট; ২৭ কেন্দ্রে শূন্য