ঈদযাত্রার ট্রেনে জন্ম নিল শিশু

ট্রেনে ঘোষণা দেওয়া হয়, একজন প্রসূতির সহায়তা প্রয়োজন, সেই ঘোষণায় এগিয়ে আসেন ওই ট্রেনেরই যাত্রী এক নারী চিকিৎসক।

স্বর্ণা আক্তার ও ইয়াসিন আরাফাত তাদের সন্তানকে নিয়ে রাজশাহী পৌঁছালে তাদের বরণ করে নেন রেলওয়ের কর্মীরা।

ঈদযাত্রার পথে রাজশাহীগামী কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনে সন্তানের জন্ম দিলেন এক নারী। আর তাকে চিকিৎসা সেবা দিলেন ওই ট্রেনেরই যাত্রী এক নারী চিকিৎসক।

মা ও ছেলে দুজনেই সুস্থ আছেন জানিয়ে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহা ব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তারা গন্তব্যে পৌঁছানোর পর রেলওয়ের পক্ষ থেকে তাদের উপহার দিয়েছি আমরা।”

স্বর্ণা আক্তার ও ইয়াসিন আরাফাত দম্পতি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থেকে সোমবার রাজশাহীগামী কপোতাক্ষ এক্সপ্রেসের 'ঙ' কোচে ওঠেন । ভেড়ামাড়ার পার হওয়ার পর স্বর্ণার প্রসব বেদনা ওঠে। তার চিৎকার শুনে যাত্রী এবং রেলকর্মীরা ছুটে যান।

অসীম তালুকদার বলেন, ওই ট্রেনেই যাচ্ছিলেন নাজমীন আক্তার নামে একজন চিকিৎসক। তার তত্ত্বাবধানে ট্রেনের গার্ড, টিটিই এবং অ্যাটেনডেন্টরা একটি জায়গা কাপড় দিয়ে ঘিরে দেন। ট্রেনটি ঈশ্বরদী স্টেশনে এলে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ছেলে শিশুটির জন্ম হয়।

“হাসপাতালে যাওয়ার জন্যই তারা রাজশাহীর ট্রেনে উঠেছিলেন। ভেড়ামারা পার হওয়ার পর স্বর্ণার পেইন ওঠে। পাকশি এলে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিৎকার করে সহায়তা চান। পরে আমাদের কর্মীরা ট্রেনের মাইকে ঘোষণা দেন কোনো চিকিৎসক আছেন কি না। ডা. নাজমীন আক্তার এগিয়ে এলে তার সহায়তায় সব ব্যবস্থা হয়।”

অসীম তালুকদার বলেন, ওই ট্রেনেই রাজশাহীতে পৌঁছান স্বর্ণা-আরাফাত দম্পতি। সেখানে তাদের বরণ করে নেন রেলের কর্মকর্তারা।

“আমি শুনে স্টেশনে যাই। তাদের রিসিভ করে আমাদের একটা অ্যাম্বুলেন্সে করে একটি ক্লিনিকে পাঠিয়ে দিয়েছি। বাচ্চাটা বেশ ভালো আছে।”

ডা. নাজমিন আক্তার বগুড়ার টিএমএসএম মেডিকেল কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী। বর্তমানে চুয়াডাঙ্গায় নিজের চেম্বারে রোগী দেখেন।

নাজমিন আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তিনিও আলমডাঙ্গা থেকেই রাজশাহী যাচ্ছিলেন। ছিলেন পাশের ‘চ’ বগিতে। পোড়াদহ স্টেশন পার হওয়ার পর ট্রেনের মাইকে ঘোষণা দিয়ে জানতে চাওয়া হয় ট্রেনে কোনো চিকিৎসক আছে কি না, একজন নারীকে সহায়তা করতে হবে।

“এ ঘোষণা শোনার পর জানতে চাই তিনি কোন বগিতে আছেন। পাশের বগিতে থাকায় দ্রুতই সেখানে চলে যাই। গিয়ে দেখি সেখানে আরেকজন মিডওয়াইফও ছিলেন। আর ওই ভদ্রমহিলা ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন। আমরা দুজন বাচ্চা ডেলিভারি করাই। যাই হোক, ঘটনাক্রমে একটা খুব ভালো কাজের সাক্ষী হয়ে গেলোম। ওই ঘটনার পর আজ অনেকেই কল দিয়েছেন।”