জুমার নামাজের সালাম ফেরানোর সঙ্গে সঙ্গেই সড়ক, উত্তর গেটের সিঁড়ির উপর নামাজে দাঁড়ানো হিযবুতের কর্মীরা স্লোগান দিয়ে দাঁড়িয়ে যায়।
Published : 07 Mar 2025, 02:41 PM
নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরের কর্মসূচি ঘিরে দুদিন আগে থেকেই হুঁশিয়ারি দিয়ে গেলেও মিছিলটি ঠেকাতে পারেনি পুলিশ।
শুক্রবার দুপুরে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে শুরু হওয়া মিছিলের তোড়ে একরকম ভেসে যায় পুলিশের বাধা। মিছিলটি পল্টন হয়ে বিজয়নগরের দিকে যাওয়ার পর পুলিশ টিয়ারগ্যাস ছোড়া শুরু করলে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
জুমার নামাজের সালাম ফেরানোর সঙ্গে সঙ্গেই সড়ক, উত্তর গেটের সিঁড়ির উপর নামাজে দাঁড়ানো হিযবুতের কর্মীরা স্লোগান দিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। তারা হাতে তুলে নেয় কালিমা খচিত ব্যানার।
প্রথমে পুলিশের যে দলটি তাদের বাধা দিতে যায়, তাতে গুনে গুনে ১০ জন পুলিশ ছিল। বিরাট মিছিলের তোড়ে পুলিশের দলটি পেছাতে পেছাতে এক পর্যায়ে হাল ছেড়ে দেয়। পল্টন মোড়ে থাকা পুলিশের দলটি সামনে এগিয়ে এসে মিছিলকে ঠেকানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে।
মিছিলটি বিজয়নগরে যাওয়ার পর পুলিশ লাঠিচার্জ করে ও টিয়ারশেল মেরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। মিছিলকারীরা অলিগলিতে ঢুকে পড়লে লাঠি হাতে পুলিশকে তাদের তাড়া করতে দেখা যায়।
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার শাহরিয়ার আলী দুপুর আড়াইটায় বলেন, “এখন আর সংঘাত নেই। হিযবুতের মিছিল ছত্রভঙ্গে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে, টিয়ারশেল ছুঁড়েছে। কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।”
এদিকে পেটের উপর সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ হয়ে আহত হয়েছেন দৈনিক কালবেলার প্রতিবেদক সুশোভন অর্ক। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
নিষিদ্ধ ঘোষিত হিযবুতের ‘মার্চ ফর খিলাফত’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দুদিন আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। শুক্রবার দুপুরে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, “হিযবুত তাহরীর একটি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন। আইন অনুযায়ী এদের সকল কার্যক্রম শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”
এর আগে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে রাজধানীর উত্তরা ১১ ও ১২ নম্বর সেক্টর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। তাদের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা করা হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার জুম্মার নামাজের দুই ঘণ্টা আগে থেকেই বায়তুল মোকাররমের ফটকগুলোতে অবস্থান নেয় র্যাব, পুলিশ ও সেনা সদস্যরা। বায়তুল মোকাররমে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের মধ্যে যারা ব্যাগ হাতে আসেন, তাদের তল্লাশি করে পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা। কারও কারও কাছে পরিচয় ও আরও কিছু তথ্য জানতে চায় তারা। র্যাব-পুলিশের সদস্যদের হাতে গ্যাসগান, শটগানসহ দাঙা দমনের সরঞ্জাম দেখা যায়। আশপাশে পুলিশের সাঁজোয়া যান এবং জলকামানের গাড়িও মোতায়েন করা হয়।
তবে মিছিল শুরু হওয়ার পর পুলিশের বাধা ধোপে টেকেনি। স্লোগান দিতে দিতে সামনে এগিয়ে যায় মিছিল।
হিযবুতের কর্মসূচি: বায়তুল মোকাররম এলাকায় কড়াকড়ি, চলছে তল্লাশি