“আমরা দেখে এসেছি জামায়াত-শিবির বর্ণচোরা। তারা কেউ এখন সংস্কৃতিকর্মী হবে, সাংবাদিক হবে, বামপন্থি রাজনীতিতে যোগ দেবে। তাই তাদেরকে প্রতিরোধ করতে জাতীয়ভাবে জাগরণ তৈরি করতে হবে।”
Published : 02 Aug 2024, 01:00 AM
নিজের ক্যাম্পাসেই নির্যাতন আর নৃশংসতার শিকার হয়েছেন তারা; সেই ক্ষত এখনও বয়ে বেড়াচ্ছেন শরীরে। অঙ্গহানিও ঘটেছে কারও কারও, ছাত্রত্ব শেষ করতেও পারেননি কেউ কেউ। ইসলামী ছাত্রশিবিরের হামলায় ক্ষতবিক্ষত এমন ছাত্রনেতারা দেরিতে হলেও জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
তারা বলছেন, এ সিদ্ধান্ত আরও আগেই আসা উচিত ছিল। দেরিতে হলেও সরকারের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে তারা।
এখন আগের চেয়ে আরও সর্তক থাকার পরামর্শও এসেছে নির্যাতিতদের মধ্যে সাবেক এক ছাত্রনেতার কাছ থেকে। বলেছেন, তারা যাতে অন্য দলে ভিড়ে যেতে না পারে সেজন্য সর্তক থাকতে হবে।
জামায়াত-শিবিরকে ‘বর্ণচোর ‘ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “তারা কেউ এখন সংস্কৃতিকর্মী হবে, সাংবাদিক হবে, বামপন্থি রাজনীতিতে যোগ দেবে। তাই তাদেরকে প্রতিরোধ করতে জাতীয়ভাবে জাগরণ তৈরি করতে হবে। জামায়াত-শিবির ছাড়াও যেসব দলগুলো মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছে, সাম্প্রদায়িকতা ছড়াচ্ছে তাদেরও নিষিদ্ধ করা হোক।”
নিষিদ্ধের পর তারা আরও আক্রমণাত্মক হয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে আরেকজন বলেছেন, “নিষিদ্ধ করার কারণে এখন সরকার এবং প্রশাসনের জন্য তাদেরকে শনাক্ত করা সহজ হবে। এতদিন তারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র হিসেবে পড়াশোনা করেছে এবং বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে গেছে।”
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা ও নাশকতায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে ‘সন্ত্রাসী সত্তা’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।
বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে এ দুই সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়।
জামায়াত ও শিবিরের সন্ত্রাসের শিকার হওয়া বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণের পাশাপাশি স্বাধীনতার স্বপক্ষের অনেকেই দীর্ঘদিন থেকে এই দুই সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি করে আসছিলেন। দল হিসাবেও জামায়াতের বিচার চেয়েছেন তারা। সরকারের এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে তাদের সেই দাবি পূরণ হল বলে মন্তব্য এসেছে তাদের কাছ থেকে।
জরুরি অবস্থার মধ্যে ২০০৮ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি অধ্যাদেশ জারি করে, যা ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ‘সন্ত্রাস বিরোধী আইন’ হিসেবে সংসদে পাস হয়।
আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৫ বছরে বিভিন্ন সময়ে দশটি জঙ্গি দলকে নিষিদ্ধ করলেও ‘সন্ত্রাস বিরোধী আইন’ প্রয়োগ করে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা হল এবারই প্রথম।
বঙ্গবন্ধুকে হ্ত্যার মধ্য দিয়ে ১৯৭৫ সালের পট পরিবর্তনের পর আশির দশকে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় দখলে নিতে ত্রাস ও আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি করে স্বাধীনতার বিরোধীতাকারী ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির। যে কয়টি ক্যাম্পাস তারা দখলে নিতে সক্ষম হয়, সেগুলোতে তাদের বিরোধীতাকারীদের ওপর চলে নির্মম নৃশংসতা। কয়েক যুগ ধরেই যা খবরের শিরোনাম হয়েছে বারবার।
সময় পাল্টালেও তাদের বীভৎসতা পাল্টায়নি। এক দশক আগেও তাদের নির্যাতনের সেই পুরনো রূপ আবার সামনে আসে।
২৯ এপ্রিল, ২০১৪। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে নৃশংস হামলায় ডান পা হারান সে সময়ের ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মাসুদ। ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাসুদের ডান পা বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে কেটে দেওয়া হয়েছিল দুই হাতের রগ। তার সঙ্গে থাকা ছাত্রলীগের আরেক নেতা টগর মোহাম্মদ সালেহকে কুপিয়ে হাত-পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়েছিল।
সেদিন সকাল ৮টার দিকে মাসুদ ও টগর মাদার বখশ হল থেকে রিকশায় করে ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে জিয়াউর রহমান হল ও হবিবুর রহমান হলের মাঝামাঝি জায়গায় তাদের ওপর হামলা হয়। তাদেরকে রাস্তার পাশে ফেলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা, যারা ছাত্রশিবিরের কর্মী বলেই তাদের অভিযোগ।
শিবিরকে নিষিদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় এটিকে ‘ঐতিহাসিক’ খবর হিসেবে তুলে ধরার পাশাপাশি আক্ষেপও ঝরে পড়েছে মাসুদের কণ্ঠে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, যদি এই সিদ্ধান্তটা এখন থেকে ১০ বছর আগে হত, তাহলে আমাকে পঙ্গু হয়ে জীবনটা কাটাতে হত না।
“হয়ত আমি এরকম হামলার শিকার হতাম না। আমার ডান পা টা কেটে বাদ দিতে হয়েছে, আমি কৃত্রিম পা লাগিয়ে চলাচল করছি। এরকম হয়ত হত না।”
এ ঘটনার এক দশক আগে ২০০৪ সালে শিবিরের হামলার শিকার হয়েছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক আরেক শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এসএম চন্দন।
সেই বিভীষিকাময় ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমি তখন মাস্টার্সের ছাত্র। ২০০৪ সালের ৩০ অক্টোবরের ঘটনা। সেদিন রাতে রাবির মেয়েদের ‘তাপসী-রাবেয়া’ হলে কিছু ছেলে ঢোকার অভিযোগ ওঠে। ঘটনার প্রতিবাদে মেয়েরা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে। তখন আমরাও প্রতিবাদ জানাই।
“এর জের ধরে ২০০৪ সালের ১১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে রিকশা থেকে নামিয়ে আমাকে রড দিয়ে পিটিয়ে দুই পা এবং এক হাত গুঁড়িয়ে দেয়। এরপর দীর্ঘ নয় মাস ভারতে চিকিৎসা শেষে আমি দেশে ফিরি। প্রায় ২০ বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু, আমার এখনও শারীরিক জটিলতা রয়ে গেছে।”
সেই শিবিরের সঙ্গে জামায়াতকে ‘সন্ত্রাসী সত্তা’ হিসেবে নিষিদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় চন্দন বলেন, “এটা অবশ্যই যৌক্তিক সিদ্ধান্ত। কিন্তু এখানে একটা শঙ্কাও তৈরি হচ্ছে। যখন বিচার বিভাগীয় বিচারের কথা বলা হচ্ছে, ওই সময়ে বিচার শেষ হওয়ার আগেই এরকম সিদ্ধান্ত বড় রকমের সংঘর্ষ ডেকে আনবে কি না, এটা একটা প্রশ্ন।”
শুধু রাজশাহী নয়, ছাত্রশিবিরের ভয়াল কার্যক্রম ছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও। ৩৩ বছর আগে হামলার শিকার হয়ে পা হারিয়েছিলেন পাহাড় ঘেরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মানিক বৈরাগী। ওই সময় বামপন্থি রাজনীতিতে সম্পৃক্ত এ শিক্ষার্থী এখন পঙ্গু।
১৯৯১ সালে ‘শুধুমাত্র মতাদর্শের বিরোধীতার’ কারণে ছাত্রশিবিরের নৃশংস হামলার শিকার হন তিনি। দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিলেও আর সেরে উঠেননি। পঙ্গুত্ব বরণ করা এই মেধাবী শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষাও শেষ করতে পারেননি।
মানিক বৈরাগী বলেন, “১৯৯১ সালের জুন-জুলাইয়ের দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝুপড়ির সামনে বসে আমরা তিন বন্ধু খাচ্ছিলাম। তখন হামলাকারীরা অতর্কিতভাবে আমার উপর ইচ্ছেমত হকিস্টিক দিয়ে পেটানো শুরু করে। একপর্যায়ে ‘আল্লাহু আকবর’ বলে আমাকে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে।”
টানা চার মাস চিকিৎসা নিলেও আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি তিনি।
জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “আমি খুবই আনন্দিত, এজন্য বর্তমান সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা। কিন্তু আমরা দেখে এসেছি জামায়াত-শিবির বর্ণচোরা। তারা কেউ এখন সংস্কৃতিকর্মী হবে, সাংবাদিক হবে, বামপন্থি রাজনীতিতে যোগ দেবে। তাই তাদেরকে প্রতিরোধ করতে জাতীয়ভাবে জাগরণ তৈরি করতে হবে।
“জামায়াত-শিবির ছাড়াও যেসব দলগুলো মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছে, সাম্প্রদায়িকতা ছড়াচ্ছে তাদেরও নিষিদ্ধ করা হোক।”
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদও ২৫ বছর পরেও বয়ে বেড়াচ্ছেন শিবিরের হামলার ক্ষত।
তার ভাষ্য, “১৯৯৯ সালের ১৫ মে আমি এবং রানা নামের আমার এক সহপাঠী ‘ল’ ফ্যাকাল্টি থেকে পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়ার পর শিবিরের ক্যাডাররা হামলা করে। হামলায় আমার বাম পা, ডান উরু, মাথায় গুরুতর আঘাত পাই। এখন আমি শারীরিকভাবে সুস্থ্য হলেও ওষুধ খেতে হয়।
নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “দেরিতে হলেও এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।”
২০১৩ সালের ২২ অগাস্ট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম তৌহিদ আল হোসেন তুহিনের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে হাত-পায়ের রগ কেটে দেয় ছাত্রশিবির।
তিনি বলেন, “যে আঙ্গুলে আমি লিখতাম সেটি কেটে নেওয়ার ফলে আমি তিন-চার বছর ঠিকমত লিখতে পারিনি, প্রায় দেড়বছর আমি হাতে ভাত খেতে পারিনি। অনেক প্রতিবন্ধকতা নিয়েই এখন বেঁচে আছি।”
স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পরে হলেও জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় উচ্ছ্বাস ভেসে আসে তার কণ্ঠে।
তিনি বলেন, “জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধের খবরে আমি খুবই আনন্দিত। যদিও সিদ্ধান্তটি আরও আগেই আসা উচিৎ ছিল। কিন্তু দেরিতে হলেও এমন সিদ্ধান্ত আসায় আমি আমার সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।”
জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ হলেও তাদের নির্মূল করা সম্ভব কি না?-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমরা দেখেছি গত ১০ বছর ধরেই জামায়াত-শিবির চোরাগুপ্তা হামলা চালিয়েছে, গোপন বৈঠক চালাচ্ছে। হয়ত এখন নিষিদ্ধের ঘোষণায় এমন চোরাগুপ্তা হামলার শঙ্কা আরও বেড়ে যাবে। কিন্তু সরকারে স্ট্রাটেজি এনালিস্ট যারা আছেন, তাদেরকেই খুঁজে বের করতে হবে কীভাবে জামায়াত-শিবিরকে নির্মূল করা যায়।”
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আখেরুজ্জামান তাকিম ২০১২ সালের ২১ নভেম্বর ছাত্রশিবিরের হামলায় গুরুতর আহত হন। মাত্র ২৭ সেকেন্ডের অতর্কিত হামলায় তার হাত-পায়ের রগ কেটে দেয় শিবির ক্যাডাররা। দীর্ঘ ৩১ দিন ছিলেন অচেতন। সবমিলিয়ে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখতে হয় ৫৫ দিন। অবশেষে বেঁচে ফিরেন তাকিম।
কিন্তু মাথায় পাঁচটি অপারেশন ও পায়ের রগ কাটার পুরো চিকিৎসা এখনও সম্পন্ন না হওয়ায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি সাবেক এই ছাত্রনেতা।
জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, “আমার প্রশ্ন হচ্ছে এ সরকার ক্ষমতায় আসার এত দিন পর কেন জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করা হল? কেন আরও আগে নিষিদ্ধ করা হল না?
“২০০৯ সালে এ সরকার ক্ষমতায় এসছে, তাদের হাতে যথেষ্ট সময় ছিল। যদি এক যুগ আগেও তাদের নিষিদ্ধ করা যেত, তাহলে আরও ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহত কম হত। যথেষ্ট দেরি হলেও জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, এটি নিঃসন্দেহে ভালো ও আনন্দের খবর।”
তার মতে, জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ হওয়ায় তারা হয়তো আরও আক্রমণাত্মক হয়ে যাবে। তবে সরকার এবং প্রশাসনের জন্য তাদেরকে শনাক্ত করা সহজ হবে। এতদিন তারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র হিসেবে পড়াশোনা করেছে এবং বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে গেছে।
“কিন্তু তাদেরকে নিষিদ্ধ করায় তারা এটি আর পারবে না। বিষয়টি এখন যদিও একটু বেশি চ্যালেঞ্জের, তাদেরকে আরও আগে নিষিদ্ধ করলে চ্যালেঞ্জটা একটু কম হত।”
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী মো. আসাদুজ্জামান ছাত্রশিবিরে নির্যাতনে ‘দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে’ শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারেননি। হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থান বিভাগের ২০০৫-২০০৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দাপট বজায় রাখতে ২০১০ সালে ছাত্রশিবিরের লক্ষে পরিণত হন আসাদুজ্জামানসহ আরও অনেক প্রগতিশীল শিক্ষার্থী।
জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ হওয়ার খবর শুনে আক্ষেপ করে তিনি বলেন, দেশ স্বাধীনের ৫০ বছর পরও স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দলটি রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে। অথচ বিশ্বের কোনো দেশে স্বাধীনতার বিরোধিতাকারীদের এমন সুযোগ পাওয়ার তথ্য মেলা ভার। জামায়াতই বাংলাদেশে সেই সুযোগ পেয়েছে।
“তারপরও সরকারকে ধন্যবাদ, এত দিন পর হলেও সংবিধানের মূলনীতিতে ফেরার সুযোগ সৃষ্টি হল।”
তিনি বলেন, “এর আগে দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীক নিষিদ্ধ করা হলেও তাদের কিন্তু নিবৃত্ত করা যায়নি। এখন তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলেও তারা কিন্তু বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ঢুকে পড়বে, বিএনপিতে ঢুকবে। ছদ্মবেশে-গোপনে তারা কার্যক্রম চালাবে। এভাবে তাদের নির্মূল করা যাবে কি না, তা নিয়ে কথা থেকেই যাচ্ছে।”
শিবিরের নির্যাতনের শিকার সাবেক এই শিক্ষার্থী বলেন, জামায়াত-শিবিরকে নির্মূল করতে হবে সাংস্কৃতিক ও সামাজিকভাবে। সে প্রস্তুতি রাখতে হবে।
আরও পড়ুন...
জামায়াত এখন 'সন্ত্রাসী সত্তা': এর মানে কী, আইন কী বলে
'জামায়াত ক্রিমিনাল দল', বলেছিল আদালতও
জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ, 'সন্ত্রাসী সত্তা' ঘোষণা
নিষিদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় যা বলল জামায়াত
রাবিতে তিন দশকে ২৯ খুন, বিচার হয়নি একটিরও
রাবি ছাত্রলীগ নেতার পা কেটেছে 'শিবির'
রাবিতে পা ও রগ কর্তন: শিবির নেতা আটক