বিদেশে কর্মী নিয়োগে নিয়ম ভেঙে অতিরিক্ত ৩ হাজার ৯৭৮টি স্মার্ট কার্ড দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়।
Published : 11 Jun 2024, 11:08 PM
বিদেশে কর্মী নিয়োগ অনুমোদনের জন্য নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রায় চার হাজার স্মার্ট কার্ড দেওয়ার অভিযোগে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) সিস্টেম অ্যানালিস্টসহ দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
মঙ্গলবার দুদকের ঢাকা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করার তথ্য দিয়েছেন এটির বাদী সংস্থার প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রণজিৎ কুমার কর্মকার।
ওই দুজন হলেন- বিএমইটির তৎকালীন সিস্টেম অ্যানালিস্ট মো. সাইদুল ইসলাম এবং অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. সাইফুল ইসলাম।
সাইদুল বর্তমানে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট হিসেবে এবং সাইফুল বরিশাল কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কর্মরত আছেন।
এজাহারের তথ্য অনুযায়ী, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, অসৎ ও লাভবান হওয়ার উদ্দেশে নিয়োগ অনুমোদনের অতিরিক্ত ডেটা দিয়ে পরস্পরের যোগসাজশে দুই কর্মকর্তা ৩ হাজার ৯৭৮টি অতিরিক্ত স্মার্টকার্ড ইস্যু করেছেন।
বিদেশে কর্মী নিয়োগে বিএমইটি থেকে বহির্গমন ছাড়পত্র পেতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অনুমতি লাগে। এরপর সেই অনুমতির কপি যায় বিএমইটিতে। সেখানে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন মোতাবেক বিএমইটির ‘ইমিগ্রেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সফটওয়্যারে’ বিভিন্ন ডেটা দেওয়া হয়।
এরপর বহির্গমন বা কল্যাণ ফিসহ অন্যান্য ফি ও আয়করের পে-অর্ডার ও চালান কপি জমা নিয়ে পর্যায়ক্রমে যাবতীয় কাজ সেরে বহিগর্মন ছাড়পত্র ও স্মার্ট কার্ড নিতে হয় বিএমইটি থেকে।
এই পুরো প্রক্রিয়ায় কোনো সংশোধন, সংযোজন বা পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে তা কেবল আইটি শাখার সিস্টেম অ্যানালিস্ট করতে পারেন। অন্য কারও এ বিষয়ে কিছু করার এখতিয়ার নেই।
দুদকের এজাহারে বলা হয়, ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নিয়োগ এজেন্সিকে দেওয়া বহির্গমন ছাড়পত্রের সংখ্যার সঙ্গে বিএমইটির ওয়েবসাইটে উল্লিখিত ‘ক্লিয়ারেন্স রিপোর্টে’ আরব আমিরাতের জন্য ইস্যু করা ছাড়পত্রের সংখ্যায় পার্থক্য রয়েছে। অনেক সংখ্যা সম্পাদনা করে কমানো বা মুছে ফেলা হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া নিয়োগ অনুমতির সংখ্যার সঙ্গে মিল রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।
“আটটি রিক্রুটিং এজেন্সির নামে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ১২ মে পর্যন্ত মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে ২ হাজার ৯৬০টি। কিন্তু বিএমইটির সফটওয়্যার হতে স্মার্ট কার্ড ইস্যু করা হয়েছে ৬ হাজার ৯৩৮টি। অর্থাৎ অতিরিক্ত ৩ হাজার ৯৭৮টি স্মার্ট কার্ড বিএমইটি থেকে অবৈধভাবে দেওয়া হয়েছে।
“ইমিগ্রেশন ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারে সাইদুল ইসলাম বিএমইটির সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। নিয়ম অনুযায়ী সফ্টওয়্যারের ডেটাবেজে একমাত্র এক্সেস ছিল তার। সেই সুযোগে তিনি অফিস সহকারী সাইফুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে স্মার্ট কার্ড ইস্যু করেন।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাইদুল ইসলামের মোবাইল ফোনে কল করে ও এসএমএস দিয়েও সাড়া মেলেনি।
অপরদিকে সাইফুল ইসলামকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করলে তিনি কেটে দেন।
তবে তার কর্মস্থল বরিশাল কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. গোলাম কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাইফুল ইসলাম হজের জন্য দেশের বাইরে আছেন।”