বুধবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন তিনি; পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত জামিন দেন বিচারক।
Published : 19 Jul 2023, 07:26 PM
আগের দিন গ্রেপ্তার দুই চিকিৎসকের জামিনের পর সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় নবজাতক ও মায়ের মৃত্যুর মামলায় এজাহারভুক্ত আরেক চিকিৎসক ডা. মাকসুদা ফরিদা আক্তার মিলিকে অন্তর্বতীকালীন জামিন দিয়েছে আদালত।
বুধবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন।
এদিন অভিযুক্তের আইনজীবী শেখ বাহারুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান মামুন হাই কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী তাকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে নিয়ে এসে কাঠগড়ায় দাঁড় করান।
তারা জামিন চেয়ে আদালতকে বলেন, গত ৫ জুন হাই কোর্ট ডা. মিলিকে এ আদালতে আসতে বলেছেন।
আদালতে সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা মাহফুজুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বিচারক শুনানি শেষে পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত জামিন দেন।
এর আগে মঙ্গলবার এ মামলায় গ্রেপ্তার দুই চিকিৎসক ডা. মুনা সাহা ও ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা জামিন পান।
এ দুই চিকিৎসকের মুক্তি দাবি করে সোম ও মঙ্গলবার দুই দিনের কর্মবিরতি কর্মসূচির মধ্যে তারা জামিন পান। পরে চিকিৎসকরা ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখা ও অস্ত্রোপচার বন্ধের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।
চিকিৎসায় গাফিলতি অভিযোগে ইডেন কলেজের ছাত্রী আঁখি ও তার নবজাতকের মৃত্যুর এ মামলায় গত ১৫ জুন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন মুনা সাহা ও শাহজাদী মুস্তার্শিদা। আদালতের নির্দেশে সেসময় তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
ধানমণ্ডি থানায় আঁখির স্বামী মুহাম্মদ ইয়াকুব আলীর করা এ মামলায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করা হয়।
মুনা সাহা ও শাহজাদী ছাড়াও ডা. মিলি, ডা. এহসান, অধ্যাপক সংযুক্তা সাহার সহকারী জমির এবং হাসপাতালের ম্যানেজার পারভেজকে আসামি করা হয় এজাহারে।
প্রসব ব্যাথা উঠলে গত ৯ জুন মধ্যরাতে কুমিল্লা থেকে ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালে আঁখিকে নিয়ে আসেন তার পরিবার।
ইয়াকুব আলীর ভাষ্য, সেদিন তাদের বলা হয়েছিল ডা. সংযুক্তা হাসপাতালে আছেন। কিন্তু সেদিন ওই চিকিৎসকের সহকারীরা প্রথমে স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা প্রসবের চেষ্টা করেন। সে সময় জটিলতা তৈরি হলে অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুটি ওই দিনই মারা যায়।
পরে সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় সেন্ট্রাল হাসপাতাল থেকে নিয়ে আঁখিকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ১৮ জুন সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আঁখিও মারা যান।
সেন্ট্রাল হসপিটালের গাইনি অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন আঁখি। এ ঘটনায় সংযুক্তা সাহা ও সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এক অপরকে দোষারোপ করে আসছে।
আরও পড়ুন:
নবজাতক ও মায়ের মৃত্যু: জামিন পেলেন সেন্ট্রাল হাসপাতালের ২ চিকিৎসক
নবজাতক ও মায়ের মৃত্যু: সেন্ট্রাল হাসপাতালের ডা. মিলিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
নবজাতকের মৃত্যু: সেন্ট্রাল হসপিটালের দুই চিকিৎসক গ্রেপ্তার
সেন্ট্রাল হাসপাতালে সব অস্ত্রোপচার বন্ধ
নবজাতক ও মায়ের মৃত্যুর দায় হাসপাতালের: সংযুক্তা সাহা
বাবার কবরের পাশে সন্তানসহ শায়িত আঁখি
আঁখির মৃত্যু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে, বলছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক