দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে অভিযান চালানো থেকে বিরত থাকতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠি কেন ‘আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত’ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট।
Published : 25 Aug 2020, 02:56 PM
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও আইন সচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়।
রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।
মহামারীর মধ্যে গেল মাসে উত্তরায় রিজেন্ট হাসপাতালে র্যাবের অভিযানে করোনাভাইরাসের চিকিৎসা ও পরীক্ষার নামে প্রতারণার চিত্র বেরিয়ে আসে। এরপর গুলশানের সাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও অভিযান চালিয়ে অনিয়ম পায় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এদিকে পুলিশি তদন্তে করোনাভাইরাস পরীক্ষা না করে ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ায় আরেক স্বাস্থ্য সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথকেয়ারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এসব অভিযানের পর রিজেন্ট হাসপাতাল ও জেকেজিকে দেওয়া করোনাভাইরাস চিকিৎসা ও পরীক্ষার অনুমোদন বাতিল করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
তবে এই অভিযানে স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ‘এক ধরনের চাপা অসন্তোষ’ বিরাজ করছে জানিয়ে গত ৪ অগাস্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে একটি চিঠি দেওয়া হয়।
যে কোনো সরকারি বা বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে কোনো ধরনের অভিযান পরিচালনা থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি জরুরি অভিযান পরিচালনার প্রয়োজন দেখা দিলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে চিকিৎসা শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করতে বলা হয় ওই চিঠিতে।
পরে ওই চিঠি নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা ওঠে। ওই চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৭ অগাস্ট সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রফিকুল ইসলামের পক্ষে আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান এ রিট আবেদন করেন।
গত রোববার রিট শুনানিতে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ এ নিয়ে প্রশ্ন তুললে আদালত রিটকারী আইনজীবীকে সম্পূরক আবেদন করতে বলে। সে অনুযায়ী সম্পূরক আবেদনের শুনানির পর মঙ্গলবার রুল জারি করল উচ্চ আদালত।
আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রুলের শর্ত পরিবর্তন করে আজ আমরা সম্পূরক আবেদন করেছিলাম। আদালত রুল জারি করে জানতে চেয়েছে, চিঠিটি কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না।”
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আদালত যেহেতু চিঠিটির কার্যকারিতা স্থগিত না করে রুল জারি করেছে, তাই আমি মনে করি, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ প্রয়োজনে চিকিৎসা শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সাথে সমন্বয় করে অভিযান পরিচালনা করতে পারবে। অভিযান পরিচালনায় কোনো বাঁধা নেই।”