মহামারীর মধ্যে গেল মাসে উত্তরায় রিজেন্ট হাসপাতালে র্যাবের অভিযানে করোনাভাইরাসের চিকিৎসা ও পরীক্ষার নামে প্রতারণার চিত্র বেরিয়ে আসে। এরপর গুলশানের সাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও অভিযান চালিয়ে অনিয়ম পায় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এদিকে পুলিশি তদন্তে করোনাভাইরাস পরীক্ষা না করে ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ায় আরেক স্বাস্থ্য সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথকেয়ারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এসব অভিযানের পর রিজেন্ট হাসপাতাল ও জেকেজিকে দেওয়া করোনাভাইরাস চিকিৎসা ও পরীক্ষার অনুমোদন বাতিল করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
তবে এই অভিযানে স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ‘এক ধরনের চাপা অসন্তোষ’ বিরাজ করছে বলে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের চিঠিতে বলা হয়েছে।
কোনো স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানোর প্রয়োজন মনে হলে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে চিকিৎসা শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করতে বলা হয়েছে চিঠিতে।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব উম্মে হাবিবা স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, “করোনা মহামারীর প্রাদুর্ভাবের সময় দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন শাখার সদস্যরা নানা বিষয়ে অভিযান চালাচ্ছেন। একটি হাসপাতালে একাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান পরিচালনা করায় হাসপাতালগুলোর স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানসমূহে এক ধরনের চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে।”
চিঠিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে ইতোমধ্যে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। এতে জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাও সদস্য হিসেবে আছেন। ভবিষ্যতে স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো অভিযান পরিচালনার প্রয়োজন দেখা দিলে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সঙ্গে পরামর্শক্রমে তা করা যাবে।
“এমতাবস্থায় যে কোনো সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কোনো ধরনের অভিযান পরিচালনা থেকে বিরত থাকা এবং জরুরি অভিযান পরিচালনার প্রয়োজন দেখা দিলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে চিকিৎসা শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে পরিচালনা করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হল।”
বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আলোচনা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে।