হাসপাতালে কেন ‘অভিযান’ চালাতে হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

অনিয়ম ঘটলে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এককভাবে অভিযান চালানোর বিপক্ষে অবস্থান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 August 2020, 12:10 PM
Updated : 9 August 2020, 12:32 PM

কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে অনিয়ম পেয়ে গিয়ে কয়েকটি হাসপাতাল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বন্ধ করে দেওয়ার প্রেক্ষাপটে তিনি এই অবস্থান জানান।

হাসপাতালগুলো আইন ভাঙলে আইন অনুযায়ীই ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি এই তৎপরতাকে অভিযান বলা নিয়েও আপত্তি তুলেছেন।

রোববার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের  প্রশ্নে জাহিদ মালেক বলেন, “এটা অভিযান কেন? হাসপাতালে কি অভিযান করে? হাসপাতালে ইনকোয়ারি করে।

“অভিযান তো করে চিটাগং হিল ট্রাক্টসে, সেখানে সন্ত্রাসী থাকে, সেখানে অভিযান করে।”

র‌্যাব-পুলিশের অভিযানের পর সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে অভিযান চালানো থেকে বিরত থাকতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে গত ৪ অগাস্ট চিঠি দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে পেয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, তাহলে কি বেসরকারি হাসপাতালে অনিয়ম বন্ধে অভিযান বন্ধ হয়ে গেল?

ওই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে অভিযান শব্দটি নিয়ে আপত্তি তুললেও অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা চলবে বলে জানান তিনি।

জাহিদ মালেক বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটা সমঝোতা হয়েছে যে এই ধরনের ব্যবস্থা নিতে গেলে তা যৌথভাবে করা হবে।

“এককভাবে ওনারা কোনো জায়গায় যাবে না, ওনারা আমাদের সাথে আলোচনা করে, আমরাও দরকার হলে ওনাদেরকে নিয়ে যাবো।”

“কাজেই অভিযান বন্ধ হয়ে গেছে, এ কথাটা ঠিক নয়,” বলেন তিনি।

এদিকে রোববার স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বিএমএ এবং বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বাস্থ্যসচিব আবদুল মান্নান।

বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদের কাছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নমনীয় কি না- এ প্রশ্নে সচিব বলেন, অভিযান বন্ধ থাকবে না। অনিয়মের ক্ষেত্রে আমরা একটুও নমনীয় হব না। কিন্তু যেন সমন্বয় থাকে, সেজন্যই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

“অভিযান একদিন, এমনকি এক মিনিটের জন্যও বন্ধ থাকবে না। যেখানেই কোনো অনিয়মের গন্ধ পাব, কোনো অনিয়মের তথ্য পাব, আমরা সঙ্গে সঙ্গে সেখানে যাব। আমরা টাস্কফোর্স করে দিয়েছি। আমরা আমাদের ফোন নম্বর দেওয়ার চিন্তা করছি। আমাদের ফোন করলে তাৎক্ষণিকভাবে টাস্কফোর্স এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তারাও যাবে।”

“আমরা চাচ্ছি সমন্বয়টা যেন থাকে। আমরা যেন এমনটা না করি, সকালে বিকালে রাতে একই জায়গায় সবাই একসাথে গিয়ে রাশ না করি। এতে স্বাস্থ্যসেবায় ব্যাঘাত ঘটবে,” বলেন স্বাস্থ্য সচিব।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়নের আবেদন না করলে ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টাস্কফোর্সের সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আগামী ২৩ আগস্টের মধ্যে বেসরকারি হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন না করলে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে। সচিব মান্নান বলেন, “আবেদন না করলে বোঝা গেল তিনি কেয়ার করছেন না। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেটা লাইসেন্স বাতিল, স্থগিত বা যে পদ্ধতি আছে, সেভাবেই করা হবে।

“আবেদন করলে বোঝা যাবে তার একটা প্রতিষ্ঠান আছে এবং এই প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে তিনি আবেদনটি করেছেন। আবেদন করলে এটা নথিবদ্ধ হবে, পরে ধীরে ধীরে আমরা প্রত্যেকটা সলভ করার চেষ্টা করব। নতুন পরিচালককে আমরা বলেছি, তিনি জানিয়েছেন খুব দ্রুততার সঙ্গে এগুলো সমাধান করবেন।”