একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী বিধিমালা সংশোধনে বসছে নির্বাচন কমিশন।
Published : 01 Oct 2018, 01:32 AM
নির্বাচনী আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনে আইন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানোর পর বিধিমালা সংস্কারের এ উদ্যোগ নিল সাংবিধানিক সংস্থাটি।
রোববার ইসির ‘আইন ও বিধিমালা সংস্কার কমিটি’র সভায় তা পর্যালোচনা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা তিনটি বিধিমালা নিয়ে সংশোধন সংক্রান্ত পর্যালোচনা করছি। প্রথম বৈঠক করেছি; আরও একটি বৈঠকে বসে সম্ভাব্য বিষয়গুলো চিহ্নিত করব।”
ইসি কর্মকর্তারা জানান, সংসদে ইভিএম ও অনলাইন মনোনয়নপত্র চালু করে আরপিও সংস্কার এলে সংশ্লিষ্ট বিধিমালাগুলোতে সংশোধনী আনতে হবে। এজন্যে বিধি সংশ্লিষ্ট বিধানগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
দশম সংসদ নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার আগের দিন আচরণ বিধিমালায় সংশোধন এনে গেজেট প্রকাশ করে ইসি। বেশ তাড়াহুড়োয় কাজ ছিল সেবার। সেজন্যই এবার আগাম প্রস্তুতি বলে কর্মকর্তারা জানান।
“আরপিও সংস্কার না হলে হয়ত কিছুই করতে হবে না, কিন্তু মূল নির্বাচনী আইনে সংশোধনী এলেই বিধিমালায়ও তা আনতে হবে,” বলেন কমিটির একজন কর্মকর্তা।
২০১৩ সালে নির্বাচনকালীন সময়ে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে মন্ত্রী-সাংসদদের সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিয়ন্ত্রণ করে আচরণবিধি করেনির্বাচন কমিশন।
তফসিল ঘোষণার দিন থেকে নির্বাচনের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশ পর্যন্ত সময়কে ‘নির্বাচন-পূর্ব সময়’ বলে সংজ্ঞায়িত করা হয়।
দশম সংসদ নির্বাচনের মতো এবারও সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় একাদশ সংসদ নির্বাচন হবে। ৩০ অক্টোবর থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে এ নির্বাচন করতে হবে।
গত ৭ এপ্রিল প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরির বিষয়ে সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
ভোটের আগে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা দলের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক প্রচার ঠেকাতে নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধন করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে কড়াকড়ি আরোপের কথাও ভেবেছে ইসি।
বিদ্যমান আচরণবিধিতে প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রী, প্রধান হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধীদলীয় উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা তাদের সমমর্যাদার ব্যক্তি, সংসদ সদস্য ও সিটি করপোরেশনের মেয়রকে ‘সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হলে তাদের আচরণবিধি মেনে প্রচারণায় অংশ নিতে হবে। সরকারি সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের প্রকল্প অনুমোদন, ফলক উন্মোচন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এসব ব্যক্তিরা সরকারি কর্মসূচির সঙ্গে নির্বাচনী কর্মসূচি বা কর্মকাণ্ডেও যোগ দিতে পারবেন না।
নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করলে ৬ মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার জরিমানা এবং সর্বোচ্চ শাস্তি প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা ইসির রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, “আচরণবিধিতে কিছু সংস্কার গেলবার করা হয়েছে। নতুন করে বড় কোনো সংশোধনী হয়ত লাগবে না। স্বতন্ত্র বিধিমালায় ছোটোখাটো সংস্কারের করা লাগতে পারে। পর্যালোচনা শুরু হয়েছে; কী কী প্রয়োজন তা নিয়ে আরও বসতে হবে।”