লা লিগা
এক সময়ে ২-১ গোলে এগিয়ে থেকেও ৪-২ ব্যবধানে হেরে গেছে শাভি এর্নান্দেসের দল।
Published : 05 May 2024, 12:40 AM
প্রতিশোধ নেওয়া হলো না বার্সেলোনার। উল্টো যেন সব হারানোর মঞ্চ হয়ে গেল জিরোনার মাঠ। অনেকটা সময় এগিয়ে থাকলেও খুব বাজে দুটি ভুলে হেরেই গেল শাভি এর্নান্দেসের দল। কাতালান ক্লাবটির বিপক্ষে ফের জিতে প্রথমবারের মতো ইউরোপ সেরার মঞ্চে জায়গা করে নিল জিরোনা। গত আসরের চ্যাম্পিয়নদের হারে চার ম্যাচ বাকি থাকতেই লা লিগার শিরোপা জয় নিশ্চিত হয়ে গেল রেয়াল মাদ্রিদের।
স্পেনের শীর্ষ লিগের ম্যাচে রোববার ৪-২ গোলে জিতেছে জিরোনা। দুই দলের প্রথম দেখায় একই ব্যবধানে জিতেছিল এই মৌসুমে চমক জাগানো ফুটবল খেলা দলটি।
জিতলেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ নিশ্চিত- এই হাতছানিতে মাঠে নামা জিরোনার শুরুটা ভালো ছিল না। পয়েন্ট তালিকার দুই ও তিনে থাকা দুই দলের দিকে তাকিয়ে ছিল রেয়াল। বার্সেলোনা পয়েন্ট হারালেই যে নিশ্চিত তাদের ৩৬তম লিগ শিরোপা! বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কঠিন লড়াইয়ে নামার আগে পূরণ হয়েছে তাদের চাওয়া।
তৃতীয় মিনিটে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। মাঝমাঠ থেকে লামিনে ইয়ামালের বাড়ানো বল বুক দিয়ে রিসিভ করে উল্টো দিকে ঘুরে চমৎকার ভলিতে জাল খুঁজে নেন আন্দ্রেয়াস ক্রিস্তেনসেন।
পরের মিনিটেই সমতা ফেরায় জিরোনা। ইভান মার্তিনের চমৎকার ক্রসে দারুণ হেডে জাল খুঁজে নেন আর্তেম দোভিক। লা লিগার শীর্ষ গোলদাতার চলতি আসরে এটি ২০তম গোল।
অষ্টম মিনিটে ফের এগিয়ে যেতে পারত বার্সেলোনা। খুব কাছ থেকে ফের্মিন লোপেসের শট যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে। সাত মিনিট পর ক্রিস্তেনসেনের হেড দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে সমতা ধরে রাখেন জিরোনা গোলরক্ষক পাওলো গাসসানিগা।
২৭তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত জিরোনা। খুব কাছ থেকে ভিক্তর সেহানকভের শট ঠেকিয়ে দেন বার্সেলোনা গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন। ছয় মিনিট পর জোয়াও কান্সেলোর ক্রসে খুব কাছ থেকে ইলকাই গিনদোয়ানের হেড দুর্দান্ত রিফ্লেক্সে ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠান গাসসানিগা। বিস্ময় জাগিয়ে রেফারি দেন গোলকিক!
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে সফল স্পট কিকে বার্সেলোনাকে এগিয়ে নেন রবের্ত লেভানদোভস্কি। ইয়ামালকে স্বাগতিক ডিফেন্ডার মিগেল গুতিয়েরেস ফাউল করায় ভিএআরের সাহায্য নিয়ে পেনাল্টি দেন রেফারি। এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বার্সেলোনা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পান ইয়ামাল। ৪৮তম মিনিটে দুর্বল শটে সেটি নষ্ট করেন তরুণ এই ফরোয়ার্ড। আট মিনিট পর কান্সেলোর বুলেট গতির শট ঠেকিয়ে দেন জিরোনার আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক গাসসানিগা।
বার্সেলোনার দুটি মারাত্মক ভুলের সুযোগ নিয়ে তিন মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে এগিয়ে যায় জিরোনা।
৬৫তম মিনিটে প্রথম বড় ভুলটি করেন সের্হি রবের্তো। মাঝমাঠ থেকে তার দুর্বল ব্যাকপাস যায়নি কোনো সতীর্থর কাছে। দোভিকের বাড়ানো বল ধরে অনায়াসে জাল খুঁজে নেন পোর্তু। মাত্র কয়েক সেকেন্ড আগেই মাঠে এসেছিলেন তিনি, এটিই বলে তার প্রথম স্পর্শ!
দুই মিনিট পর মাঝমাঠে বার্সেলোনা বল হারালে ফের আক্রমণে যায় জিরোনা। সতীর্থের পা ঘুরে বল পেয়ে গোলের জন্য শট নেন মিগেল। সেদিকেই ঝাঁপ দেন টের স্টেগেন। কিন্তু তাকে একরাশ হতাশায় ডুবিয়ে বার্সেলোনার একজনের পায়ে লেগে বল জড়ায় জালে।
৭২তম মিনিটে ব্যবধান বাড়তে পারত আরও। ইয়ানগেল এররেরার বুলেট গতির শট টের স্টেগেনের হাতে লেগে বেরিয়ে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে। তিনি মিনিট পর আর পারেননি তিনি। সতীর্থর চমৎকার ক্রসে বুলেট গতির ভলিতে দূরের পোস্ট দিয়ে জাল খুঁজে নেন পোর্তু!
কোণ বেশ দুরূহ ছিল, দৌড়ের মধ্যেই প্রথম স্পর্শ অমন ভলি, নি:সন্দেহে মৌসুমের সেরা গোলের একটি।
এ্লোমেলো হয়ে যাওয়া বার্সেলোনা আর ছন্দে ফিরতে পারেনি। বরং আরও বড় ব্যবধানে হারতে বসেছিল। ৯০তম মিনিটে গোললাইন থেকে পোর্তুর শট ফিরিয়ে দেন জুল কুন্দে। কয়েক সেকেন্ড পর এররেরার শট ঠেকান টের স্টেগেন।
৩৪ ম্যাচে ২৩ জয় ও পাঁচ ড্রয়ে ৭৪ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে উঠে এসেছে জিরোনা। জাগিয়েছে ১৯৪১-৪২ মৌসুমের পর প্রথমবারের মতো বার্সেলোনার উপরে থেকেকোনো কাতালান ক্লাবের লিগ শেষ করার সম্ভাবনা।সবশেষ এমনটা ঘটিয়েছিলএসপানিওল। তারা হয়েছিলল নবম, বার্সেলোনা সেবার হয়েছিল দ্বাদশ!
৭৩ পয়েন্ট নিয়ে তিনে নেমে গেছে বার্সেলোনা। ম্যাচে মৌসুমে নিজের ২২তম হলুদ কার্ড দেখেছেন কোচ শাভি। সঙ্গে তিনটি লাল কার্ডও আছে তার।
৮৭ পয়েন্ট নিয়ে সবার ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে রেয়াল।