ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ে

একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যালট পেপারে প্রচলিত ভোটের পাশাপাশি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) বিষয়টি যুক্ত করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনের প্রস্তাব যাচাইয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Sept 2018, 06:01 PM
Updated : 22 Sept 2018, 06:36 AM

সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের বিরোধিতা এবং নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের আপত্তির মধ্যে গত ৩০ অগাস্ট আরপিও সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইসি।

ইসির নির্বাচনী আইন সংস্কার কমিটির আহ্বায়ক নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের জন্য একগুচ্ছ সংশোধন প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।ইভিএম যুক্ত করা হয়েছে, এজন্যে সংজ্ঞাসহ বেশ কিছু ধারা উপধারায় সংযোজন-পরিমার্জন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ১২-১৪টি ধারায় প্রস্তাব থাকছে আমাদের।”

এ নির্বাচন কমিশনার জানান, আরপিও সংশোধন প্রস্তাবে  ইভিএমের পাশাপাশি  অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল, মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিন পর্যন্ত ঋণ পুনঃতফসিল করার সুযোগ, ১২ ডিজিটের টিআইএন  সনদ দাখিলের বিষয়টিও আরপিওতে যুক্ত করার প্রস্তাব রেখেছেন তারা।

কবিতা খানম জানান, জামানত ও নির্বাচনী ব্যয় বাড়ানো কিংবা একাধিক দিনে সংসদ নির্বাচন করার বিষয় নিয়ে কোনো প্রস্তাব পাঠানো হয়নি।

মন্ত্রণালয়ের মতামত ও পরামর্শ পরবর্তীতে কমিশনে পাঠানো হবে। তাতে ইসির সম্মতি থাকলে আইন মন্ত্রণালয় সংশোধন প্রস্তাব বিল আকারে মন্ত্রিসভার বৈঠকে পাঠাবে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, আরপিও বাংলা ভাষায় অনুদিত ‘বাংলাদেশ নির্বাচন আইন’ বিল আকারে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়নি। শুধু সংশোধিত অংশ ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে।

দুপুরে ইসির যুগ্মসচিব আবুল কাসেম আইন মন্ত্রণালয়ে গিয়ে সংশোধনী প্রস্তাবটি জমা দিয়ে আসেন।

এর আগে রোববার এ প্রস্তাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা ও নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদাত হোসেন চৌধুরীর অনুমোদন নেওয়া হয়। ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেওয়া আরেক নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার অনুপস্থিত ছিলেন।

আরপিও সংশোধনীর বিষয়ে সোমবার এক অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী  আনিসুল হক বলেন, “আরপিও সংশোধনীর বিষয়ে ভেটিং ও আইনি পরামর্শের জন্য ফাইলটি আমার মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ বিভাগে পৌঁছেছে। আমার কাছে এখনও আসেনি। লেজিসলেটিভ বিভাগ সেটা দেখবে, তারপর তা আমার কাছে পাঠাবে।”

ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে সিইসি নূরুল হুদা সোমবার সকালে এক অনুষ্ঠানে বলেন, “ইভিএম ব্যবহার (একাদশ সংসদ নির্বাচনে) করা হবে কি না, এ সিদ্ধান্ত আরও পরে।”

তিনি জানান, সরকার যদি মনে করে, সংসদ যদি মনে করে তখন আইনে পরিণত হলেই পরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা যাবে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, আইন সংস্কারে মাঠ কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনের অন্তত শতাধিক প্রস্তাব এলেও কমিশন তা থেকে ৩৫টি সুপারিশ নিয়ে খসড়া তৈরি করে। শেষ পর্যন্ত আইন মন্ত্রণালয়ে এক ডজন প্রস্তাব পাঠানো হল।