গত বছর অগ্নিকাণ্ডে মোট ৪৪৬ কোটি ২৭ লাখ ২৮ হাজার টাকার সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
Published : 28 Jan 2025, 04:30 PM
সারাদেশে ২০২৪ সালে মোট ২৬ হাজার ৬৫৯টি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে জানিয়ে ফায়ার সার্ভিস বলছে, এসব আগুনে ১৪০ জন প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন ৩৪১ জন।
আর আগুন নেভাতে গিয়ে মারা গেছেন ফায়ার সার্ভিসের দুই সদস্য, আহত হয়েছে সংস্থার ৩৭ জন।
মঙ্গলবার ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই পরিসংখ্যান জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে রেস্তোরাঁর আগুনে, যাতে ৪৭ জন নিহত এবং ৭৮ জন আহত হয়েছে। আবাসিক ভবনের আগুনে ৩৬ জন নিহত এবং ৭২ জন আহত হয়েছে। এর বাইরে ৮ জন নিহত ও ৫৩ জন আহত হয়েছে গ্যাস বিস্ফোরণে।
ফায়ার সার্ভিসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর সবচেয়ে বেশি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে বৈদ্যুতিক গোলযোগে, ৯ হাজার ৬৯টি (৩৩.৯৮%)। সংখ্যার বিচারে এরপরেই রয়েছে বিড়ি-সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরা থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। এমন আগুনের সংখ্যা ৪ হাজার ১৩৯টি, যা মোট ঘটনার ১৫ দশমিক ৫২ শতাংশ।
গত বছর ৩ হাজার ৫৬টি (১১.৪৬%) আগুনের ঘটনা ঘটেছে চুলা থেকে। আন্দোলন-সহিংসতার পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের বছরটিতে 'উচ্ছৃঙ্খল জনতা’র মাধ্যমে ৭৮৯টি (২.৯৫%) আগুনের ঘটনা নথিবদ্ধের কথা জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। আর শিশুদের আগুন নিয়ে খেলা থেকে গত বছর অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে ৭৫৯টি (২.৮৪%)।
এছাড়া উত্তপ্ত ছাই থেকে ৭৩৫টি, গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে ৭০৪টি, গ্যাসের লাইন লিকেজ থেকে ৪৬৫টি, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে ৪৪টি, কয়েল থেকে ৪৫৫টি এবং আতশ বাজি-ফানুস-পটকা পোড়ানো থেকে ৬৪টি আগুনের ঘটনা ঘটে।
সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি ভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৪ সালে বাসাবাড়ি বা আবাসিক ভবনে সবচেয়ে বেশি ৭ হাজার ১৩১টি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে, যা মোট আগুনের ২৬.৭৪ শতাংশ। এছাড়া খড়ের গাঁদায় ৪ হাজার ৫১৩টি (১৬.৯২%), রান্না ঘরে ২ হাজার ৪১১টি (৯.০৪%), দোকানে ১ হাজার ৮৮৭টি, হাট-বাজারে ৯১১টি, শপিং মলে ৪৮১টি, পোশাক শিল্প ব্যতীত কলকারখানায় ৪৯৪টি, পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানে ২৩৬টি, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে ২১১টি, বহুতল ভবনে (ছয়তলার উপরে) ১৫৩টি, রেস্তোরাঁয় ১৫০টি, কেপিআই ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে ১২৯টি, হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ১২৬টি, পাট গুদাম-পাটকলে ১২৩টি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ৮৫টি, বস্তিতে ৮৪টি এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৭৮টি আগুনের ঘটনা ঘটে।
পরিবহনে আগুনের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৪ সালে বাস বাদে বিভিন্ন যানবাহনে ২৬৮টি, বাসে ১১৪টি, ট্রেনে ১৩টি ও তিনটি লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
গত বছর অগ্নিকাণ্ডে মোট ৪৪৬ কোটি ২৭ লাখ ২৮ হাজার টাকার সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আর আগুন নেভানোর মাধ্যমে ১ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকার সম্পদ রক্ষার কথা বলছে ফায়ার সার্ভিস।