বয়স ৫৯ বছর পূর্ণ হওয়ায় সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যাচ্ছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ।
বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ পুলিশ-১ শাখার এক প্রজ্ঞাপনে তাকে অবসরে পাঠানোর কথা জানানো হয়।
সেখানে বলা হয়, বেনজীর আহমেদের বয়স ৩০ সেপ্টেম্বর ৫৯ বছর পূর্ণ হওয়ায় সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী তাকে অবসর দেওয়া হল।
পুলিশ বাহিনীর নেতৃত্বে তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে আরও কিছুদিন রেখে দেওয়া হতে পারে বলে যে গুঞ্জন ছিল, এই প্রজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে তার অবসান হল।
প্রায় সাড়ে চার বছর এলিট ফোর্স র্যাবের নেতৃত্ব দেওয়ার পর ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল পুলিশের মহাপরিদর্শকের দায়িত্বে আসনে বেনজীর আহমেদ।
‘গুরুতর’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে গত ডিসেম্বরে র্যাব ও এর সাবেক-বর্তমান ৭ কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ দপ্তর। ওই তালিকায় র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক হিসেবে বেনজীর আহমেদের নামও আসে।
ওই নিষেধাজ্ঞার কারণে গত ৩১ অগাস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের পুলিশ প্রধান সম্মেলনে বেনজীরের অংশ নেওয়া নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। তবে শেষ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিশ্চিত করায় ওই আয়োজনে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি তিনি নিউ ইয়র্কে এক নাগরিক সংবর্ধনাতেও যোগ দেন।
সেই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমি মার্কিন প্রশাসন অথবা আমেরিকানদের দোষারোপ করতে চাই না। কারণ এটা করেছে তারাই, যারা সত্তর সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নৌকায় ভোট দেয়নি, যারা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিল। ওই গোষ্ঠী বার্ষিক ২৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে চারটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছিল। সেই ভাড়াটে ফার্ম টানা তিন বছর চেষ্টা করেছে কথিত স্যাংশনের জন্যে।“
২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি র্যাবের মহাপরিচালকের দায়িত্ব নেওয়ার আগে বেনজীর আহমেদ ঢাকা মহানগরের পুলিশ কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে সহকারী পুলিশ সুপার হিসাবে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেওয়া বেনজীর সন্ত্রাস দমন বিষয়ে আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীর সদস্য হিসেবে বসনিয়া ও কসোভোতে কাজ করে এসেছেন তিনি।
গোপালগঞ্জে জন্মগ্রহণ করা বেনজীর স্নাতকোত্তর করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে। একই শিক্ষায়তনের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে পিএইচডি ডিগ্রিও আছে তার।