রাষ্ট্রদূতের ‘নিরাপত্তা উদ্বেগ’ সরকারের ‘উচ্চ পর্যায়ে’ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

গত ১৪ ডিসেম্বর ‘মায়ের ডাক’র অনুষ্ঠানে গিয়ে তড়িঘড়ি ফিরতে হয়েছিল পিটার হাসকে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Dec 2022, 01:44 PM
Updated : 18 Dec 2022, 01:44 PM

‘মায়ের ডাক’ এর অনুষ্ঠানে গিয়ে রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের ‘নিরাপত্তা উদ্বেগ’ তৈরি হওয়ার ঘটনা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে তুলে ধরার কথা জানিয়েছে ঢাকা মার্কিন দূতাবাস।

ঘটনার চার দিন পর রোববার একটি বিবৃতিতে দূতাবাসের এক মুখপাত্র বলেন, “১৪ ডিসেম্বর মায়ের ডাকের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে শেষ করতে হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে।

“বিক্ষোভকারীদের দ্বারা বৈঠকটি বাধাগ্রস্ত হয়; রাষ্ট্রদূত যে ভবনে ছিলেন সেখানে ঢুকে পড়তে চেয়েছিল তারা। বিক্ষোভকারীদের একদল রাষ্ট্রদূতের গাড়ি ঘিরে ফেলে। আমরা বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের পাশাপাশি ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে বিষয়টি তুলে ধরেছি।”

গত ১৪ ডিসেম্বর সকালে ঢাকার তেজগাঁওয়ের শাহীনবাগে বিএনপির নিখোঁজ নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাড়িতে গিয়েছিলেন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। ‘গুম’ হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ এর সঙ্গে বৈঠক করতে গিয়েছিলেন তিনি। সুমনের বোন আফরোজা ইসলাম আঁখি ‘মায়ের ডাক’র সমন্বয়কারী।

ওই বাড়িতে রাষ্ট্রদূতকে ঘিরে ধরে স্মারকলিপি হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন ‘মায়ের কান্না’ নামের আরেকটি সংগঠনের কর্মীরা। তখন তড়িঘড়ি করে পিটার হাস গাড়িতে করে সেখান থেকে চলে আসেন।

ওই ঘটনার পর সেদিনই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দেখা করে নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ জানান রাষ্ট্রদূত।

Also Read: নিখোঁজ বিএনপি নেতার বাসা থেকে তড়িঘড়ি ফিরলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত

Also Read: কূটনীতিকদের নিরাপত্তাও ‘প্রশ্নবিদ্ধ’: খসরু

Also Read: মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে 'বিতর্কিত' করা সমীচীন হয়নি: তথ্যমন্ত্রী

এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনেও আলোচনা চলছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত সরকারকে না জানিয়েই সেখানে গিয়েছিলেন।

বিএনপি কূটনীতিকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ায় উদ্বেগ জানিয়ে এর জন্য সরকারকে দায়ী করছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, রাষ্ট্রদূত ‘মায়ের ডাক’র সেই অনুষ্ঠানে ‘মায়ের কান্না’র স্মারকলিপিও নিতে পারতেন।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের আমলে সামরিক আদালতে ‘বিচারের নামে হত্যাকাণ্ডের শিকার’ সামরিক বাহিনীর সদস্যদের স্বজনদের সংগঠন ‘মায়ের কান্না’।

‘মায়ের কান্না’র স্মারকলিপি না নিয়ে রাষ্ট্রদূত ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ আচরণ করেছেন বলে সমালোচনার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের রোববারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই সংগঠনটি এর আগে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।

“যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রে রয়েছে মানবাধিকার। সে কারণে, যে কোনো ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ গুরুত্বের সাথে নেয় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এবং বিভিন্ন রকম মানবাধিকার সংগঠনের সঙ্গে নিয়মিত দেখা করে থাকে। গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সঙ্গে কোনো ধরনের পূর্ব যোগাযোগ করেনি মায়ের কান্না।”