জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি রাশেদ চৌধুরীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আইনি প্রক্রিয়াতেই দেশে ফিরিয়ে আনা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
Published : 22 Sep 2021, 03:00 PM
মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি বলেছেন, “এই প্রসেসটা একটা লিগ্যাল প্রসেস। আমরা লিগ্যাল প্রসেসটা চালিয়ে যাচ্ছি এবং এদেশে (যুক্তরাষ্ট্র) লিগ্যাল প্রসেস অনেক সময় সাপেক্ষ। কিন্তু আমরা সব সময় আশাবাদী।”
বাংলাদেশের স্বাধীনতার চার বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়।
অনেক বাধা পেরিয়ে সেই মামলার রায়ে দণ্ডিতদের মধ্যে এ পর্যন্ত ছয় জনের ফাঁসি কার্যকর হলেও পাঁচ খুনি এখনও রয়েছে অধরা। তারা হলেন- আব্দুর রশীদ, শরীফুল হক ডালিম, মোসলেম উদ্দিন, রাশেদ চৌধুরী ও এবিএমএইচ নূর চৌধুরী।
এর মধ্যে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে এবং নূর চৌধুরী কানাডায় অবস্থান করছেন। বাংলাদেশের বারবার দাবির পরও তাদের ফেরত পাঠানো হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে থাকা রাশেদ চৌধুরীকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত সে দেশের সরকার পর্যালোচনার উদ্যোগ নিচ্ছে বলে গত বছর খবর এসেছিল। এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বদল হয়েছে, রাশেদ চৌধুরীর বিষয়ে আর কোনো অগ্রগতির খবর এতদিন আসেনি।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার গত বছরের ১৭ জুন দেশটির ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডের কাছে রাশেদ চৌধুরীর রাজনৈতিক আশ্রয় মামলার নথি পর্যালোচনার জন্য তলব করেছিলেন।
মার্কিন সাময়িকী পলিটিকো তখন লিখেছিল, বারের এই পদক্ষেপের চূড়ান্ত ফলাফল হিসেবে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে তার রাজনৈতিক আশ্রয় হারাতে পারেন এবং তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোও হতে পারে।
রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের কাছে গত বছর চিঠিও দিয়েছিলেন।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের সেই উদ্যোগের কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে গত অগাস্টে জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আপনারা জানেন, আগেও আমরা আমরা এই দেশ (যুক্তরাষ্ট্র) থেকে একজনকে (শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি নাজমুল মাকসুদ মুরাদ) লিগ্যাল প্রসেসে দেশে নিয়ে গিয়ে… সে বিচারের মুখোমুখি হয়েছে। আমাদের বিশ্বাস, এই লোকটাও (রাশেদ চৌধুরী) লিগ্যাল প্রসেসে আমরা দেশে নিয়ে যাব। সে সত্যিকার অর্থে বিচারের মুখোমুখি হবে।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমর আশাবাদী। এটা লিগ্যাল প্রসেসে আছে, এবং আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।”
অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (জাতিসংঘ) সামিয়া আঞ্জুম ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।