পাঁচ বছরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২০ আসামি ফেরত

গত পাঁচ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক ২০ আসামিকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 March 2014, 10:25 AM
Updated : 28 March 2014, 11:52 AM

বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এই তথ্য জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন বিভাগের মুখপাত্র নিকোল এ নাভাস।

তিনি বলেন, ২০০৯ সালের ১ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ২০ বাংলাদেশিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে।

এর মধ্যে ২০০৯ সালে তিন জন, ২০১০ সালে ১১ জন, ২০১১ সালে চার জন, ২০১৩ সালে একজন এবং গত ১৯ মার্চ একজনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

এই সময়ে বিভিন্ন দেশের ৭২০ জন অভিযুক্তকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সংশ্লিষ্ট দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান নিকোল।

মামলা মাথায় নিয়ে বিদেশে পলাতকদের দেশে ফেরত এনে বিচার করতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে সরকার।

বিদেশে অবস্থানরত আসামিদের নামের তালিকা তৈরি, বিদেশে তাদের অবস্থান চিহ্নিত করে দেশে ফিরিয়ে আনার উপায় নির্ধারণসহ দেশে ফেরত আনার কার্যক্রম তদারকি করবে এই টাস্কফোর্স।

যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্টে ইমিগ্রেশন বিভাগে এনফোর্সমেন্ট অ্যান্ড রিমুভাল অপারেশন্স (ইআরও) দপ্তরের উপ পরিচালক জন পি মার্টিনেজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাজনৈতিক হত্যাসহ নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ব্যক্তিরা কখনোই আমেরিকাকে নিরাপদ আশ্রয় ভাবতে পারবে না। এমন অপরাধীদের কখনোই আমেরিকা ঠাঁই দেয় না।”

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এম এ রাশেদ চৌধুরী এবং একাত্তরের মানবাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির আদেশ পাওয়া আলবদর আশরাফুজ্জামান খানও বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।

১৯৮৯ সালে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে তার ধানমণ্ডির বাসভবনে হামলাসহ বিভিন্ন মামলার আসামি নাজমুল মাকসুদ মুরাদকে (৪৩) গত ১৯ মার্চ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

এবিষয়ে মার্টিনেজ বলেন, “রাজনৈতিক গুপ্তহত্যার মিশনে অংশ নেয়া মুরাদকে গ্রেপ্তারে আমাদের টিম বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে, তাদেরকে ধন্যবাদ।”

নিকোল জানান, অপহরণ, ধর্ষণ, সন্ত্রাস এবং রাজনৈতিক হত্যা মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে মামলার অনুলিপি সংশ্লিষ্ট দেশের বিচার বিভাগের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের কাছে হস্তান্তর করলে তাদের গ্রেপ্তারে পদক্ষেপ নেয়া হয়।

এসব অপরাধীদের গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের সহায়তা নেয়া হয় উল্লেখ করে এই কর্মকর্তা জানান, ফ্রিডম পার্টির সংগঠক হিসাবে মুরাদ যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইলেও তার আবেদন মঞ্জুর হয়নি।

পরবর্তীতে মুরাদের কাজ করার অনুমতি (ওয়ার্ক পারমিট) বাতিল হয়ে গেলে জর্জিয়ার ইমিগ্রেশন আদালত তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর আদেশ দেয়।

বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক মুরাদকে ধরতে ২০১১ সালে রেড নোটিস জারি করে ইন্টারপোল।

পরে এফবিআই ও যুক্তরাষ্ট্র পুলিশের সহযোগিতায় ২০১২ সালে ২ ফেব্রুয়ারি মুরাদকে আমেরিকার আটলান্টা থেকে প্রেপ্তার করা হয়।

বাংলাদেশে ফেরত আনার পর তিনটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গত ২০ মার্চ মুরাদকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।