প্রথমবারের মতো ইসরায়েলি ট্যাংকগুলো খান ইউনিসের পূর্বাংশের সীমান্ত বেড়া অতিক্রম করে শহরটিতে প্রবেশ করেছে আর পশ্চিম দিকে এগিয়েছে।
Published : 06 Dec 2023, 09:09 AM
ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান শহর খান ইউনিসে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে বহু হতাহত হয়েছে। আহতের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হাসপাতালগুলো হিমশিম খাচ্ছে।
রয়টার্স বলছে, গত সপ্তাহে যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ার পর থেকে এটিই সবচেয়ে বড় স্থল হামলা বলে মনে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রথমবারের মতো ইসরায়েলি ট্যাংকগুলো খান ইউনিসের পূর্বাংশ দিয়ে সীমান্ত বেড়া অতিক্রম করে শহরটিতে প্রবেশ করেছে আর পশ্চিম দিকে এগিয়েছে। কিছু ট্যাংক খান ইউনিসের পূর্ব প্রান্তের বনি সুহাইলা শহরে ভেতরে অবস্থান নিয়েছে। অন্যগুলো আরও এগিয়ে কাতারি তহবিলে গড়ে ওঠা আবাসিক এলাকা হামাদ সিটির প্রান্তে অবস্থান নিয়েছে।
কয়েকদিন ধরে বাসিন্দাদের এই এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়ার পর মঙ্গলবার ইসরায়েলি বাহিনী বিমান থেকে নতুন লিফলেট ছেড়েছে। এতে হামলা চলাকালে আশ্রয়স্থলের ভেতরে অবস্থান করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
লিফলেটে খান ইউনিসের ছয়টি এলাকার বাসিন্দাদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, “আসছে ঘণ্টাগুলোতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসকে ধ্বংস করতে আপনাদের আবাসিক এলাকায় নিবিড় আক্রমণ শুরু করবে। নিজেদের নিরাপত্তার জন্য আশ্রয়স্থলে এবং হাসপাতালে, যেখানে আপনারা আছেন সেখানেই অবস্থান করুন। বের হবেন না।
“বের হওয়া বিপজ্জনক হবে। আপনাদের সতর্ক করা হল।”
গত মাসে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা ভূখণ্ডের উত্তরাংশ দখল করে নেয়। এরপর এক সপ্তাহের একটি যুদ্ধবিরতি পর থেকে তারা গাজার দক্ষিণাংশে ব্যাপক হামলা শুরু করেছে। তারা বলছে, তারা এখন ছিটমহলটির হামাস শাসকদের নির্মূল করার চেষ্টায় বাকি অংশে তাদের স্থল অভিযান বিস্তৃত করছে।
ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র ইলন লেভি বলেছেন, “আমরা এখন দ্বিতীয় পর্বে এগিয়ে যাচ্ছি। সামরিকভাবে এই পর্বটি কঠিন হতে যাচ্ছে।”
তিনি জানান, বেসামরিকদের ক্ষতি কমিয়ে আনতে ইসরায়েল ‘গঠনমূলক মতামত’ গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত, তবে ওই পরামর্শ অবশ্যই তাদের হামাসকে ধ্বংস করার লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।
৭ অক্টোবার গাজার হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলে এক নজিরবিহীন প্রাণঘাতী হামলা চালায়। ওই হামলায় ১২০০ জন নিহত ও ২৪০ জনকে ধরে গাজায় নিয়ে জিম্মি করে রাখা হয়েছে বলে ইসরায়েল জানিয়েছে। এর প্রতিশোধ নিতে ওই দিন থেকেই গাজায় ভয়াবহ হামলা শুরু করে তারা।
তারপর থেকে ইসরায়েলের বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং অন্যান্য আক্রমণে প্রায় ১৬০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। গাজায় আরও কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি নিখোঁজ রয়েছেন, তাদের মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপগুলোতে চাপা পড়ে আছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইসরায়েলের ব্যাপক বোমাবর্ষণে গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার মধ্যে ৮০ শতাংশ তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। এদের অধিকাংশই গাজার দক্ষিণাঞ্চলের শহরগুলোতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। এতে এই অঞ্চলে মানুষের সংখ্যা স্বাভাবিক জনসংখ্যার তুলনায় তিনগুণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: