লেবাননে যুদ্ধবিরতি চুক্তি আসন্ন, যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা অনুমোদনের পথে ইসরায়েল

ঊর্ধ্বতন এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা মঙ্গলবারই চুক্তিটি অনুমোদন করতে পারে বলে আশা করছেন তিনি।

ইসরায়েল ও লেবাননের কর্মকর্তারা বলেছেন, ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তি হতে পারে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়ই।

ঊর্ধ্বতন এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এদিনই চুক্তিটি অনুমোদন করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্সের পরিকল্পনা মোতাবেক চুক্তিটি তৈরি হয়েছে। ইসরায়েল চুক্তিটি অনুমোদন করলে যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেবেন বলে সোমবার লেবাননের চার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন। এর মধ্য দিয়ে লেবাননে ইসরায়েলের ১৪ মাসের দীর্ঘ লড়াইও অবসান হবে।

চুক্তির আওতায় ৬০ দিনের মধ্যে দক্ষিণ লেবানন (হিজবুল্লা ঘাঁটি) থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করা এবং ওই অঞ্চলে লেবাননের সেনাবাহিনী মোতায়েন করার কথা বলা হয়েছে। একইসঙ্গে লিতানি নদীর দক্ষিণ সীমান্ত থেকে হিজবুল্লাহকে তাদের সশস্ত্র উপস্থিতি প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে।

লেবাননের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ হাবীব বলেছেন, ইসরায়েল সেনা প্রত্যাহার করলে লেবাননের সেনাবাহিনী দক্ষিণ লেবাননে অন্তত ৫ হাজার সেনা মোতায়েন করতে প্রস্তুত থাকবে। আর যুক্তরাষ্ট্র সেখানে ইসরায়েলের হামলায় ধ্বংস হওয়া অবকাঠামো পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ মঙ্গলবার বলেছেন, ইসরায়েল চায় লেবাননের সঙ্গে চূড়ান্ত যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি কার্যকরভাবে প্রয়োগ করুক জাতিসংঘ। তাছাড়া, এ চুক্তির কোনওরকম লঙ্ঘনও ইসরায়েল সহ্য করবে না।

যুদ্ধবিরতির জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলার মাঝেই ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ দুপক্ষের মধ্যে বৈরিতা বেড়ে যায়। চলতি সপ্তাহান্তে ইসরায়েল লেবাননে হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হামলা জোরদার করেছে। শনিবার বৈরুতের মধ্যাঞ্চলে ইসরায়েলের তুমুল বিমান হামলায় অন্তত ২৯ জন নিহত হয়।

এর পাল্টা জবাবে রোববার হিজবুল্লাহও ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবে মুহুর্মূহু শত শত রকেট হামলা চালায়। ইসরায়েল ফের এর জবাবে সোমবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতে আরও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।

ওদিকে, যুদ্ধবিরতির যে চেষ্টা চলছিল তাতে একটি চুক্তি হওয়ার পথে অগ্রগতি হওয়ার লক্সণ দেখা যায় গত সপ্তাহে। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারী আমোস হোস্টেইন বৈরুতে আলোচনার পর গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হওয়ার খবর জানান।

এরপর আমোস ইসরায়েলের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং তারপর ওয়াশিংটনে ফিরে যান। এরপরই ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র ডেভিড মেঙ্কার জানিয়েছিলেন তারা একটি চুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।