নেটো ও ইইউ সদস্য দেশ পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় বুধবার থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিচ্ছে রাশিয়া।
Published : 27 Apr 2022, 10:54 AM
ক্রেমলিনের কট্টর বিরোধী পোল্যান্ড ইউরোপের সেই দেশগুলোর একটি যারা ইউক্রেইন আক্রমণের জন্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সবচেয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিতে সচেষ্ট, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
পোল্যান্ডের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল-গ্যাস কোম্পানি পিজিএনআইজি জানিয়েছে, বুধবার ইউরোপের কেন্দ্রীয় সময় (সিইটি) সকাল ৮টা থেকে ইউক্রেইন ও বেলারুশ হয়ে আসা গ্যাজপ্রমের সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
ওয়ারশ জানিয়েছে, গ্যাস সংরক্ষণাগারগুলো ৭৬ শতাংশ পূর্ণ থাকায় তাদের রিজার্ভ থেকে গ্যাস তোলার দরকার হবে না।
অপরদিকে রাশিয়া থেকে আমদানি করা গ্যাসের ওপর প্রায় সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল দেশ বুলগেরিয়া বলেছে, গ্যাজপ্রমের সঙ্গে থাকা চুক্তির সব বাধ্যবাধকতা পূরণ করেছে তারা আর রুবলে গ্যাসের মূল্য পরিশোধের নতুন প্রস্তাবনা চুক্তির লঙ্ঘন।
প্রতিবেশী তুরস্ক ও গ্রিসের মধ্যে দিয়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা করে রেখেছে বুলগেরিয়া।
গ্যাজপ্রম বলেছে, তারা এখনও পোল্যান্ডে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করেনি কিন্তু ওয়ারশকে মূল্য পরিশোধের নতুন ‘নির্দেশনা’ অনুযায়ী গ্যাসের দাম দিতে হবে। তবে বুলগেরিয়ার বিষয়ে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘অবন্ধুসুলভ’ দেশগুলোকে আমদানি করা গ্যাসের দাম রুবলে পরিশোধ করার জন্য বলেছেন, অন্যথায় বিদ্যমান চুক্তি স্থগিত থাকবে বলে জানিয়েছেন। এ পর্যন্ত রাশিয়ার গ্যাসের ইউরোপীয় ক্রেতাদের মধ্যে অল্প কয়েকটি দেশ তার প্রস্তাব অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়েছে।
ইউরোপের বার্ষিক জ্বালানির একতৃতীয়াংশ পূরণ করে রাশিয়ার গ্যাস। ইউক্রেইনে গত মাসে শুরু হওয়া আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার উপর যেসব অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে তার জবাবে গ্যাসের দাম রুবলে পরিশোধ করতে বলেছে মস্কো।
ইউক্রেইনকে নিরস্ত্র ও নব্যনাৎসীমুক্ত করতে দেশটিতে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ চালাচ্ছে বলে দাবি করা মস্কো বলেছে, নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে পশ্চিমা দেশগুলো তাদের বিরুদ্ধে ‘অর্থনৈতিক যুদ্ধ’ শুরু করেছে।
বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, রাশিয়া যদি তার গ্যাসের মূল্য রুবলে পায়, সেক্ষেত্রে দেশটি পশ্চিমাদের দেওয়া বেশকিছু অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পাশ কাটাতে পারবে।
ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট দপ্তরের চিফ অব স্টাফ আন্দ্রি ইয়েরমাক বলেছেন, “ইউরোপকে গ্যাস ব্ল্যাকমেইল করা শুরু করে দিয়েছে রাশিয়া। তারা আমাদের মিত্রদের ঐক্য ভাঙ্গার চেষ্টা করছে।”
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেইনে রাশিয়ার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত কয়েক হাজার লোক হতাহত হয়েছে, শহর ও নগর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ার পাশাপাশি দেশটি থেকে ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: