ইউক্রেইনে পাঁচ সপ্তাহ ধরে চলা যুদ্ধ শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে দেশটির মধ্যস্থতাকারীরা যখন আলোচনা ফের শুরু করতে যাচ্ছেন তখন রাশিয়ার গ্যাসের ইউরোপীয় ক্রেতারা রুবলে মূল্য পরিশোধ শুরু করার চূড়ান্ত সময়সীমার মুখোমুখি হয়েছে।
Published : 01 Apr 2022, 10:43 AM
মস্কো ইউরোপের ‘অবন্ধু’ দেশগুলোকে তাদের সরবরাহকৃত গ্যাসের দাম শুক্রবার থেকে রুবলে পরিশোধের চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার জবাব রাশিয়া দেবে, শুক্রবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এমনটি বলেছেন বলে তাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা আরআইএ।
“ইইউয়ের পদক্ষেপের জবাব দেওয়া হবে। ব্রাসেলসের দায়িত্বহীন নিষেধাজ্ঞা ইতোমধ্যে সাধারণ ইউরোপীয়দের দৈনন্দিন জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে,” বার্তা সংস্থাটিকে বলেছেন কর্মকর্তা নাইকোলি কোব্রাইন্তেস।
বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তাস খেলেছেন, ইউরোপীয় ক্রেতাদের শুক্রবার থেকে রুবলে মূল্য পরিশোধ করতে হবে বলে দাবি তুলেছেন, অন্যথায় বিদ্যমান চুক্তি স্থগিত থাকবে।
ইউরোপীয় সরকারগুলো পুতিনের জ্বালানি আল্টিমেটাম প্রত্যাখ্যান করেছে, রাশিয়ার গ্যাসের বৃহত্তম ইউরোপীয় ক্রেতা জার্মানি এটিকে ‘ব্ল্যাকমেইল’ বলে অভিহিত করেছে।
রাশিয়ার আক্রমণের কারণে ইউক্রেইনের ৪ কোটি ৪০ লাখ জনসংখ্যার প্রায় এক চতুর্থাংশ বাড়িঘর ছেড়ে প্রতিবেশী ইউরোপীয় দেশগুলোতে গিয়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। পুতিনের ওপর চাপ ধরে রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা সারা বিশ্ব চষে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু রাশিয়ার এই জ্বালানি শোডাউন ইউরোপের জন্যে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও জটিল পরিণতি বয়ে নিয়ে আসছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
পুতিন ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেইনে সেনা পাঠিয়েছেন। দেশটিকে নিরস্ত্রীকরণ ও ‘নাৎসী মুক্ত’ করতে সেখানে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, পুতিনের আসল লক্ষ্য ইউক্রেইনের সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া।
চলতি সপ্তাহে ইস্তাম্বুলে দুই দেশের মধ্যে হওয়া শান্তি আলোচনায় মস্কো বলেছে, তারা শুভেচ্ছার নিদর্শন হিসেবে ইউক্রেইনের রাজধানী কিইভ ও দেশটির উত্তরাঞ্চলে আক্রমণ হ্রাস করে দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় দনবাস অঞ্চলকে ‘মুক্ত’ করার দিকে মনোযোগ দেবে।
কিন্তু কিইভ ও তার মিত্ররা বলছে, ইউক্রেইনীয়রা পাল্টা হামলা চালিয়ে রাজধানীর আশপাশে এবং উত্তরপূর্ব ও দক্ষিণপশ্চিমের কৌশলগত এলাকাগুলো পুনরুদ্ধার করেছে, এই ক্ষয়ক্ষতির মুখে রাশিয়া তার বাহিনীগুলোকে পুনর্গঠিত করার চেষ্টা করতে এ কৌশল নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এক ভিডিও ভাষণে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দনবাস ও অবরুদ্ধ দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মারিউপোলে ‘যুদ্ধ আসছে’ বলে সতর্ক করেছেন।
“আমরা যা চাই তার সবকিছু পেতে আমাদের এখনও একটি অত্যন্ত কঠিন পথ দিয়ে যেতে হবে,” বলেছেন জেলেনস্কি।
শুক্রবার ভিডিও বৈঠকের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে শান্তি আলোচনা ফের শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।