আফগানিস্তানের মানুষকে তালেবান হুমকির মধ্যে ফেলে দেশে ছাড়ার পর প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, রক্তপাত এড়াতে তার হাতে আর কোনো ‘বিকল্প ছিল না’।
Published : 16 Aug 2021, 01:41 AM
মাত্র দশ দিনের মধ্যে আফগানিস্তানের বেশিরভাগ এলাকা দখল করে রোববার সকালে প্রায় বিনা প্রতিরোধে রাজধানী কাবুলে প্রবেশ করে তালেবান বাহিনী।
এরপর ‘শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের’ বিষয়ে তালেবানের সমঝোতার আলোচনার মধ্যেই বিকালে জ্যেষ্ঠ সহযোগীদের নিয়ে তাজিকিস্তানের উদ্দেশে রওনা হন গানি।
রাতে এক ফেইসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘সংঘাত এড়ানোর জন্যই’ তিনি কাবুল ছেড়েছেন, কারণ লাখো মানুষ সেখানে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, দেশ ছাড়ার পর আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে এটাই তার প্রথম বক্তব্য।
তিনি কোথায় রয়েছেন, তা জানা যায়নি। তবে তার উজবেকিস্তানে আশ্রয় নেওয়ার খবরও পাওয়া যাচ্ছে।
তালেবান যোদ্ধারা কাবুলের সব প্রবেশ পথ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আফগান সরকারের সঙ্গে দরকষাকষি শুরু করার পর আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল সাত্তার মিরজাকওয়াল বলেছিলেন, একটি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ‘শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের’ প্রক্রিয়া শুরু করেছেন তারা।
কিন্তু পরে প্রেসিডেন্ট গানির দেশত্যাগের খবর এলে তালেবান কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন কোনো সরকার আফগানিস্তানে হবে না। তালেবান সরাসরি দেশের ক্ষমতা বুঝে নেবে।
তালেবান বাহিনী কাবুলের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বলেও এ উগ্র ধর্মভিত্তিক গোষ্ঠীর তরফ থেকে জানানো হয়।
বিবিসি লিখেছে, তালেবানের সঙ্গে আফগান সরকারের দর কষাকষিতে উপস্থিত দুই কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছেন বিলাল সারওয়ারি নামের স্থানীয় একজন সাংবাদিক।
তারা বিলালকে বলেছেন, দুই পক্ষের সমঝোতায় এটা ঠিক হয়েছিল যে প্রেসিডেন্ট প্রসাদেই ক্ষমতা হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিকতা হবে এবং প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি নিজে সেখানে উপস্থিত থাকবেন।
কিন্তু জ্যেষ্ঠ সহযোগীদের নিয়ে তিনি কাবুল ত্যাগ করার পর প্রেসিডেন্ট প্রসাদের কর্মীদের সবাইকে সরে যেতে বলা হয়। কর্মীরা তখন প্রাসাদ খালি করে চলে যান।
তালেবানের সঙ্গে সরকারের শান্তি আলোচনার মধ্যস্থতার জন্য যে ‘হাই কাউন্সিল ফর ন্যাশনাল রিকনসিলেশন’ গঠন করা হয়েছিল, তার চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, আশরাফ গানি এখন ‘সাবেক প্রেসিডেন্ট’, যিনি দেশকে ‘এ অবস্থায় রেখে’ পালিয়ে গেছেন।
“এখন আল্লাহর কাছে তাকে জবাবদিহি করতে হবে। পুরো জাতিই তার বিচার করবে।”
আর গানির মন্ত্রিসভার ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেনারেল বিসমিল্লাহ মোহাম্মদী বলেছেন, “আমাদের হাত পিছমোড়া করে বেঁধে দেশটা বিক্রি করে দিয়ে চলে গেল ওই ধনী লোক আর তার গ্যাং।”