মাত্র দশ দিনে ঝটিকা অভিযানে আফগানিস্তানের বেশিরভাগ এলাকা দখলে নিয়ে তালেবান বাহিনী রাজধানী কাবুলে ঢুকে পড়ার পর ‘শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের’ প্রক্রিয়ার মধ্যেই দেশ ছাড়ার খবর এসেছে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানির।
Published : 15 Aug 2021, 07:49 PM
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স রোববার জানিয়েছে, আশরাফ গানি এরইমধ্যে তাজিকিস্তানের উদ্দেশ্যে কাবুল ত্যাগ করেছেন।
রয়টার্স লিখেছে, এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য তারা প্রেসিডেন্টের দপ্তরে যোগাযোগ করলে সেখান থেকে বলা হয়েছে, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ আশরাফ গানির গতিবিধি সম্পর্কে কোনো তথ্য দেওয়া তাদের পক্ষে ‘সম্ভব না’।
তালেবানের একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেছেন, আশরাফ গানি এখন কোথায়, তারা সে বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছেন।
আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজ তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীরাও কাবুল ত্যাগ করেছেন বলে অন্তত দুটি সূত্র তাদের নিশ্চিত করেছে।
এর আগে আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিসমিল্লাহ মোহাম্মদী বলেছিলেন, এই সঙ্কট মেটানোর দায়িত্ব দেশের রাজনীতিবিদদের হাতেই ছেড়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গানি।
দেশের ভবিষ্যত নির্ধারণে তালেবানের সঙ্গে আলোচনার জন্য সোমবার একটি প্রতিনিধি দল কাতারের রাজধানী দোহায় যাচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন মোহাম্মদী।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার তালেবানের সঙ্গে চুক্তি করে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারে সম্মতি দেওয়ার পর গতবছর থেকে কাতারের মধ্যস্ততায় আফগান সরকারের সঙ্গে তালেবানের শান্তি আলোচনা চলছিল।
গত এক বছরে দফায় দফায় বৈঠক হলেও সে আলোচনায় কোনো অগ্রগতি হয়নি। বরং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত এপ্রিলে যখন ঘোষণা দিলেন যে দুই দশকের যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে তার দেশের সেনাবাহিনী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুরোপুরি আফগানিস্তান ছেড়ে যাবে, তার পরপরই তালেবান হামলা শুরু হয়।
দুই দশক পর কাবুলে প্রবেশ করেছে তালেবান যোদ্ধারা
কয়েক ঘণ্টা পর আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল সাত্তার মিরজাকওয়াল টোলো টিভিতে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় বলেন, একটি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ‘শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের’ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তালেবান কাবুলে হামলা করবে না।
অন্যদিকে তালেবানের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের যোদ্ধাদের সহিংসতা এড়িয়ে যেতে বলা হয়েছে। ‘শান্তিপূর্ণ ও সন্তোষজনক’ ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে ঐকমত্য না হওয়া পর্যন্ত তাদের যোদ্ধারা কাবুলের সব প্রবেশ পথে পাহারায় থাকবে।
টোলো নিউজের খবরে বলা হয়, আশরাফ গানি পদত্যাগ করে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন বলে তালেবানের সঙ্গে ইতোমধ্যে সমঝোতা হয়েছে।
আর কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যাপনায় যুক্ত আফগানিস্তানের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী আহমাদ জিলালিকে সেই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দেখা যেতে পারে। তবে তালেবান জিলালিকে মেনে নিয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।