বার্ড ফ্লুর কারণে দেশটিকে খামারিদের লাখ লাখ মুরগি নিধন করতে হয়েছে, যার প্রভাব সরাসরি পড়েছে ডিমের বাজারে।
Published : 22 Mar 2025, 04:29 PM
বার্ড ফ্লুর আঘাতে পোল্ট্রি খাতের ত্রাহি অবস্থায় ভোক্তা পর্যায়ে ডিমের দাম কমাতে দক্ষিণ কোরিয়া ও তুরস্ক থেকে ডিম আমদানির পরিকল্পনা করছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।
এই দুই দেশের বাইরে আরও কিছু দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে, বলেছেন কর্মকর্তারা।
বিবিসি লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তারা এখন যে দামে ডিম কিনছে, তা ইতিহাসের সর্বোচ্চ; পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে আনতে তাই মার্কিন সরকারকে এখন বিপুল পরিমাণ ডিম আমদানির কথা ভাবতে হচ্ছে।
“আমরা কোটি কোটি ডিম আমদানির কথা বলছি,” বলেছেন কৃষিমন্ত্রী ব্রুক রোলিন্স।
হাঁস-মুরগির জন্য প্রাণঘাতী বার্ড ফ্লুর প্রকোপে যুক্তরাষ্ট্রের পোল্ট্রি খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো।
সংক্রমণ ঠেকাতে কয়েক কোটি মুরগি মেরে ফেলতে হয়েছে; পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১০০ কোটি ডলার সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
নির্বাচনী প্রচারে ডিমের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। কিন্তু গত এক বছরে দেশটিতে ডিমের দাম ৬৫ শতাংশ বেড়েছে, এ বছরও প্রোটিনের অন্যতম এই উৎসের দাম আর ৪১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
“যখন ফের আমাদের মুরগির সংখ্যা বেড়ে যাবে, পুরো শিল্প আবার পূর্ণদ্যমে কাজ শুরু করতে পারবে, আশা করি এগুলো কয়েক মাসের মধ্যে হবে, তখন আমরা আমাদের নিজস্ব ডিমে ফিরে যাবো এবং সেগুলোকে দোকানের তাকে স্থান দিতে পারবো,” বলেছেন রোলিন্স।
প্যারিসভিত্তিক এক সংবাদমাধ্যমকে পোল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়ার পোল্ট্রি সংস্থাগুলো জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস তাদের কাছ থেকেও ডিম আমদানির বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে।
ডিমের দাম কমাতে ট্রাম্পের কৃষি মন্ত্রণালয় ১০০ কোটি ডলারের যে পাঁচ দফা পরিকল্পনা ঘোষণা করছে, তার মধ্যে ৫০ কোটি ডলার রাখা হয়েছে জৈব নিরাপত্তায়; টিকা গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ১০ কোটি ডলার, খামারিদের আর্থিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে রাখা হয়েছে ৪০ কোটি ডলার।
যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েক বছর ধরেই বার্ড ফ্লু নামে পরিচিত এইচ৫এন১ ভাইরাসের উৎপাত দেখা যাচ্ছে। ২০২২ সালে এর প্রকোপ ছিল মারাত্মক, সেসময় ১৫ কোটি ৬০ লাখের বেশি মুরগি মেরে ফেলতে হয়েছিল। তারপর থেকেই ডিমের দাম চড়তে শুরু করে।
নির্বাচনের সময় এই বিষয়টিকে অন্যতম ইস্যু বানিয়েছিলেন ট্রাম্প। মার্কিন জনগণের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে প্রচারে ব্যাপক সরব ছিলেন তিনি।
চলতি মাসের শুরুতে কংগ্রেসে দেওয়া এক ভাষণে ডিমের দাম বৃদ্ধির জন্য পূর্বসূরী জো বাইডেনকে দুষেছেন ট্রাম্প।
“জো বাইডেন ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে গিয়েছিলেন। আমরা এখন তা কমানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করছি,” বলেছেন তিনি।
বার্ড ফ্লুর প্রাদুর্ভাবের কারণে গত বছর বাইডেন প্রশাসনের নির্দেশে কোটি কোটি মুরগি মেরে ফেলতে হয়েছিল, এরপর ডিমের দাম আকাশ ছোঁয়। ট্রাম্প আসার পরও সেই দামবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।