হামলাকারী ড্রোনটি যখন টাওয়ার ২২ এর দিকে এগিয়ে আসছিল তখন একটি মার্কিন ড্রোনও ঘাঁটিটির দিকে আসছিল।
Published : 30 Jan 2024, 12:39 PM
জর্ডানের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন ব্যবহার করে চালানো হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহত হয়। ‘টাওয়ার ২২’ নামে পরিচিত ওই ঘাঁটিটি ড্রোনটিকে থামাতে কেন ব্যর্থ হয়েছিল তা নির্ধারণ করার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকার রোববার জর্ডানে নিহত তিন সেনার নাম প্রকাশ করেছে। তারা হলেন সার্জেন্ট উইলিয়াম জেরোম রিভার্স (৪৬), স্পেশালিস্ট কেনেডি ল্যান্ডন স্যান্ডার্স (২৪) এবং স্পেশালিস্ট ব্রিওনা আলেক্সসন্ড্রিয়া মফেট (২৩) । নিজেদের হাউজিং ইউনিটে ড্রোন হামলায় নিহত হন তারা।
এ হামলার জন্য ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে দায়ী করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পেন্টাগন বলেছে, হামলার ধরনে ইরান সমর্থিত ইরাকি মিলিশিয়া গোষ্ঠী কাতাইব হিজবুল্লাহর ‘ছাপ’ আছে। তবে কারা হামলা চালিয়েছে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও নেয়নি তারা।
রয়টার্স জানিয়েছে, ইরাকের কট্টরপন্থি একটি গোষ্ঠীর ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা ‘ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স ইন ইরাক’ জর্ডান-সিরিয়া-ইরাক সীমান্তের টাওয়ার ২২ ঘাঁটিসহ তিনটি ঘাঁটিতে হামলার দায় স্বীকার করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হামলাকারী ড্রোনটি যখন টাওয়ার ২২ এর দিকে এগিয়ে আসছিল তখন মার্কিন একটি ড্রোনও ঘাঁটিটির দিকে আসছিল।
তাদের মধ্যে এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হামলাকারী ড্রোনটি নিচু দিয়ে উড়ছিল, হয়তো এ কারণেই ঘাঁটির প্রতিরক্ষা পদ্ধতি সেটিকে শনাক্ত করতে পারেনি।
৭ অক্টোবর ইসরায়েল গাজায় হামলা শুরু করার পর থেকে ইরাক, সিরিয়া ও জর্ডানে মার্কিন সেনাদের লক্ষ্য করে ১৬০ বারেরও বেশি হামলা চালানো হয়েছে। পাশাপাশি লোহিত সাগরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত হুতিরা।
এসব হামলার কারণে ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি আঘাত হানার জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি হামলা চালালে তা বিস্তৃত যুদ্ধের কারণ হয়ে উঠবে শঙ্কায় বাইডেন এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার সকালে হোয়াইট হাউজের সিচুয়েশন রুমে বাইডেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ও তার জাতীয় নিরাপত্তা টিমের অন্য সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তারা জর্ডানে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার পর পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে তা নিয়ে বৈঠক করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বাইডেনের কাছে ওই হামলার জবাব দেওয়ার যে সব বিকল্প রয়েছে তার মধ্যে ইরানের বাইরে অথবা ভেতরে ইরানি বাহিনীগুলোকে লক্ষ্যস্থল করাসহ আরও সতর্কভাবে শুধু ঘটনার জন্য দায়ী ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক আক্রমণ অন্যতম।
হোয়াইট হাউজের সিচুয়েশন রুমের বৈঠকে থাকা নেটো মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ বলেছেন, “ইরান ধারাবাহিকভাবে ওই অঞ্চলটি অস্থিতিশীল করে তুলছে, তারা লোহিত সাগরে আমাদের জাহাজগুলোতে হামলা চালানো সন্ত্রাসীদেরও সমর্থন দিচ্ছে।”
বিশেষজ্ঞরা হুঁশিয়ার করে বলেছেন, ইরানের ভেতরে ইরানি বাহিনীর ওপর কোনো হামলা চালানো হলে তেহরান শক্তিশালী পাল্টা হামলা চালাতে পারে, আর তা যুক্তরাষ্ট্রকে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে শুরু হওয়া বড় ধরনের এক যুদ্ধে টেনে আনতে পারে।
আরও পড়ুন:
জর্ডানে হামলা: ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না যুক্তরাষ্ট্র
ইরানে হামলা চালাতে বাইডেনের ওপর চাপ বাড়ছে