যে সামরিক ছাউনিটিতে আক্রমণের ঘটনাটি ঘটেছে সেটির অবস্থান জর্ডানের উত্তরপূর্বাঞ্চলের শেষ প্রান্তে ইরাক ও সিরিয়ার সীমান্তে।
Published : 29 Jan 2024, 10:02 AM
জর্ডানের উত্তরপূর্বাঞ্চলে সিরিয়ার সীমান্তের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহত ও সম্ভবত আরও বহু আহত হয়েছে।
জর্ডানের এক সরকারি মুখপাত্র দাবি করেছেন, হামলাটি ঘটেছে সিরিয়ার আল-তানফ ঘাঁটিতে।
কিন্তু মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রোববার যে সামরিক ছাউনিটিতে আক্রমণের ঘটনাটি ঘটেছে সেটা ‘টাওয়ার ২২’ নামে পরিচিত আর এটির অবস্থান জর্ডানের উত্তরপূর্বাঞ্চলের শেষ প্রান্তে ইরাক ও সিরিয়ার সীমান্তে। স্থানটির কৌশলগত অবস্থান খুব গুরুত্বপূর্ণ।
রয়টার্স জানিয়েছে, জর্ডানে মার্কিন সামরিক অবস্থানের নতুন একটি পর্ব শুরু করা এই ঘাঁটির বিষয়ে প্রকাশ্যে তেমন কোনো তথ্য নেই। কিন্তু এখানে মার্কিন সেনাবাহিনীর ৩৫০ জন সৈন্য ও বিমান বাহিনীর সেনা থাকায় আর ঘাঁটিটি নিয়মিত সামরিক রসদের যোগান পাওয়ায় এর গুরুত্ব সম্পর্কে ধারণা করা যায়।
এর কাছেই সীমান্তের অপর পাশে সিরিয়ায় আল তানফ গ্যারিসনের অবস্থান। এখানেও অল্প কিছু মার্কিন সেনা আছে।
রয়টার্স বলছে, ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তানফ প্রধান ভূমিকা পালন করে আসছে আর এটি সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর গড়ে ওঠা প্রতিরোধে মার্কিন কৌশল বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
‘টাওয়ার ২২’ এর অবস্থান এর খুব কাছে। তানফে থাকা মার্কিন সেনাদের সম্ভাব্য যে কোনো প্রয়োজনে ‘টাওয়ার ২২’ থেকে সাহায্য দেওয়া যায়। পাশাপাশি ওই এলাকায় ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনীগুলোর প্রতিরোধেও এটি ভূমিকা রাখে আর আইএসের অবশিষ্টাংশে ওপরও নজর রাখতে পারে।
ওয়াশিংটন বিদেশি সামরিক বাহিনীগুলোকে যে সহায়তা দেয় তার একটি বড় অংশ পায় জর্ডানের সেনাবাহিনী। জর্ডানে কয়েকশ মার্কিন সামরিক প্রশিক্ষক আছে। মধ্যপ্রাচ্যের যে অল্প কয়েকটি মিত্র দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় সারা বছর বিস্তৃত সামরিক মহড়া ও অনুশীলন করে জর্ডান তার অন্যতম।
২০১১ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ওয়াশিংটন জর্ডানের বিস্তৃত নজরদারি পদ্ধতি গড়ে তোলার জন্য শত শত কোটি কোটি ডলার ব্যয় করে। সিরিয়া ও ইরাক থেকে জঙ্গিদের জর্ডানে অনুপ্রবেশ রোধ করতে গড়ে তোলা এই পদ্ধতি ‘বর্ডার সিকিউরিটি প্রোগ্রাম’ নামে পরিচিতি পেয়েছে।
তবে ‘টাওয়ার ২২’ এ যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের অস্ত্র মজুদ করে রেখেছে, ঘাঁটিটির বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেমন আর কী কারণে সেখানে থাকা মার্কিন বাহিনী এই বিপর্যয়ের শিকার হল, তা পরিষ্কার হয়নি।
ইরাকের কট্টরপন্থি একটি গোষ্ঠীর ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা ‘ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স ইন ইরাক’ জর্ডান-সিরিয়া সীমান্তের এই ঘাঁটিটিসহ তিনটি ঘাঁটিতে হামলার দায় স্বীকার করেছে।
আরও পড়ুন:
জর্ডানে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাঘাঁটিতে ড্রোন হামলা, ৩ মার্কিন সেনা নিহত