জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা গাজাবাসীদের কেবল চিকিৎসাই নয়, শিক্ষারও সুযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করার কথা জানিয়েছেন।
Published : 04 Feb 2025, 08:43 PM
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখন্ডের যুদ্ধাহত ও অসুস্থ বাসিন্দাদেরকে জাপানে নিয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে দেশটির সরকার।
সোমবার জাপানের পার্লামেন্টের এক অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “গাজায় যারা অসুস্থ হয়েছেন কিংবা আহত হয়েছেন তাদেরকে জাপানে গ্রহণ করে নেওয়ার পথ খোঁজার চেষ্টা করছি আমরা।” কেবল তাই নয়, গাজার বসিন্দাদেরকে জাপানে শিক্ষার সুযোগও দেওয়া হতে পারে বলে জানান ইশিবা।
ইসরায়েলের অবরুদ্ধ গাজা মানবিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ১৯ জানুয়ারি থেকে সেখানে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও পরিস্থিতি তেমন বদলায়নি। যুদ্ধে ধসে পড়া অবকাঠামোর মধ্যে বাস করা গাজাবাসীরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে তাদের সহায়তা প্রয়োজন।
এই আবহেই জাপানের প্রধানমন্ত্রী তাদের দিকে সহায়তার হাত বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করলেন। পার্লামেন্টে তিনি জানান, তার প্রশাসন এমন একটি নীতি নেওয়ার জন্য কাজ করছে, যার মাধ্যমে গাজায় আহত ও অসুস্থদের জাপানে এনে চিকিৎসা করা সম্ভব হবে।
জাপানের কিয়োদো নিউজ জানায়, প্রধানমন্ত্রী ইশিবা এক আইনপ্রণেতার প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে একথা বলেন। ওই আইনপ্রণেতা গাজায় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় দুর্ভোগ পোহানো বাসিন্দাদের সহায়তায় জাপানের প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন।
‘দ্য জাপান টাইমস’ লিখেছে, ২০১৭ সালে সিরিয়ার শরণার্থীদের শিক্ষার্থী হিসেবে গ্রহণের যে প্রকল্প জাপান নিয়েছিল, গাজার বাসিন্দাদের সহায়তার ক্ষেত্রেও সেরকম ব্যবস্থা নেওয়া যায় কিনা সে প্রশ্ন করেছিলেন ওই আইনপ্রণেতা।
এর জবাবেই প্রধানমন্ত্রী ইশিবা বলেন, “গাজার জন্যও আমরা একইরকম প্রকল্প চালু করার কথা ভাবছি। সরকার এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা চালাবে।”
তবে জাপানের প্রধানমন্ত্রী গাজার বাসিন্দাদের সহায়তা করা নিয়ে যে কথা বলছেন, তা দেশটির মূল শরণার্থী আশ্রয়দান নীতির তুলনায় ভিন্ন।
জাপানে শরণার্থী গ্রহণের হার নিয়ে অনেক দিন ধরেই সমালোচনা চলে আসছে। দেশটি খুব কম সংখ্যক শরণার্থীকেই আশ্রয় দেয় বলে সমালোচনা আছে।
২০২৩ সালে জাপান ১৩,৮২৩ জন শরণার্থীর আবেদন পেয়েছিল। কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ১,৩১০ জনকে আশ্রয় দেয় তারা, যা মোট আবেদনকারীর ১০ শতাংশেরও কম।
তবে সিরিয়ার শরণার্থীদেরকে শিক্ষার্থী হিসেবে নেওয়ার উদ্যোগ জাপানের শরণার্থী নীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছিল।
কিয়োদো নিউজ জানিয়েছে, গত মাসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবা মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে বৈঠককালে ফিলিস্তিনের উন্নয়নে সহায়তা করার অঙ্গীকার করেছিলেন।