বেলুচিস্তানের নোশকির কাছে কোয়েটা-তাফতান মহাসড়কে হামলার এ ঘটনাটি ঘটেছে, এতে আরও প্রায় ৪০ জন সেনা আহত হয়েছেন।
Published : 17 Mar 2025, 12:07 PM
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে সামরিক বাহিনীর গাড়িবহরে আত্মঘাতী গাড়ি বোমা হামলায় তিন সেনাসহ অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
রোববার নোশকি এলাকার কাছে কোয়েটা-তাফতান মহাসড়কে হামলার এ ঘটনাটি ঘটেছে, এতে আরও প্রায় ৪০ জন সেনা আহত হয়েছেন।
পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডন জানিয়েছে, দেশটির সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আত্মঘাতী হামলার কথা নিশ্চিত করেছে, নিহতদের মধ্যে দুইজন বেসামরিক বলে জানিয়েছে তারা।
কর্মকর্তারা ডনকে জানিয়েছেন, ফ্রন্টিয়ার কোরের ওই বহরটিতে ছয়টি বাস ও দু’টি গাড়িসহ আটটি যান ছিল। বহরটি কোয়েটা শহর থেকে দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় নোকুন্দি শহরের দিকে যাচ্ছিল। পথে নোশকি শহরের কাছে বহরের একটি বাসের পাশে শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে।
পাকিস্তান নিরাপত্তা বাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ডনকে বলেন, “এক আত্মঘাতী হামলাকারী বিস্ফোরক ভরা গাড়ি নিয়ে বহরের একটি বাসকে ধাক্কা দেয়, তারপর বিস্ফোরণ ঘটায়।”
তিনি জানান, বিস্ফোরণের পর বাসটিতে আগুন ধরে যায়। তবে বহরের অপর সাতটি যানে অক্ষত ছিল আর সেগুলো নিরাপত্তার জন্য দ্রুত সরে যাওয়ার চেষ্টা করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আত্মঘাতী হামলার পরে নিকটবর্তী পর্বতে লুকিয়ে থাকা হামলাকারীরা বহর লক্ষ্য করে ব্যাপক গুলিবর্ষণ করে। গাড়িবহরে থাকা নিরাপত্তা বাহিনী পাল্টা জবাব দিলে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র গোলাগুলি শুরু হয় আর তা এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে।
এর কিছুক্ষণের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনী ওই এলাকা ঘেরাও করে তল্লাশি অভিযান শুরু করে। এ অভিযান চলাকালে ওই এলাকার উপরে কয়েকটি হেলিকপ্টার উড়তে দেখা যায়।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মৃতদেহগুলো ও আহতদের নোশকি টিচিং হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ডনকে বলেন, “পাঁচটি মৃতদেহ ও তিন ডজনেরও বেশি আহতকে হাসপাতালে আনা হয়েছে।”
পরে মৃতদেহগুলো ও আহতদের হেলিকপ্টারযোগে কোয়েটা পাঠানো হয়। আহতদের কোয়েটার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর আইএসপিআর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অভিযান চলাকালে হামলাকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর গোলাগুলিতে তিন ‘সন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছেন।
বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।
বেলুচিস্তানের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি গত সপ্তাহে কোয়েটা থেকে ছেড়ে আসা চার শতাধিক যাত্রীবাহী একটি এক্সপ্রেস ট্রেন ছিনতাই করে ৩৬ ঘণ্টা আটকে রেখেছিল। তাদের হামলা ও পরবর্তীতে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান চলাকালে ২৩ সেনা, ট্রেনটির চালকসহ রেলওয়ের তিন কর্মী ও পাঁচ যাত্রী নিহত হন। নিরাপত্তা বাহিনী এই ঘটনায় ৩৩ বিদ্রোহীকে হত্যার দাবি করেছে।