মাস্কের টুইটার অধিগ্রহণের পর থেকে প্ল্যাটফর্মটির সবচেয়ে বিতর্কিত কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়ে তদন্তে নেমেছে মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা এফটিসি। এর মধ্যে আছে কোম্পানির ছাঁটাই কার্যক্রম ও ব্লু গ্রাহক সেবার পাশাপাশি তথাকথিত ‘টুইটার ফাইলস’-এ সম্পৃক্ত সাংবাদিকদের সঙ্গে কোম্পানির লেনদেনের বিষয়টিও।
বিভিন্ন প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন নিয়ে ২০২২ সালে টুইটার ও এফটিসি’র সমঝোতার বিষয়টিই মূল সমস্যা বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে মার্কিন বাণিজ্য দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
সে সময় ১৫ কোটি ডলার জরিমানার পাশাপাশি ব্যবহারকারীর প্রাইভেসি সুরক্ষা দিতে বিস্তৃত এক ‘প্রাইভেসি ও তথ্য সুরক্ষার প্রকল্প’ নিয়ে কাজ করতে রাজী হয়েছিল কোম্পানিটি। তবে বিভিন্ন আইনপ্রণেতা ও অন্যদের মধ্যে ব্যাপক শঙ্কা রয়েছে যে, মাস্কের নেতৃত্বে টুইটার সেইসব প্রতিজ্ঞা মেনে চলেনি।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানির ছাঁটাই কার্যক্রম, ব্লু গ্রাহক সেবা, টুইটার ফাইলস ও অন্যান্য বিষয়ে তুলনামূলক বেশি তথ্য পেতে গত শরৎ থেকে টুইটারকে অন্তত ডজনখানেক চিঠি পাঠিয়েছে এফটিসি।
তদন্তের অংশ হিসাবে সংস্থাটি মাস্ককে পদচ্যুত করার বিষয়টিও সংস্থার বিবেচনায় আছে। টুইটারের ওপর এফটিসি’র তদন্ত নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘হাউজ জুডিশিয়ারি কমিটি’ও।
মাস্কের অধিগ্রহণের পর থেকে টুইটারের কার্যক্রম নিয়ে নিয়ন্ত্রকদের আপত্তি সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনের প্রথম নজির নয় এটি। এর আগেও এফটিসি বলেছে, কোম্পানির প্রাইভেসি ও সুরক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মীদের বিদায়ে তাদের ‘গভীর উদ্বেগ’ রয়েছে। এ ছাড়া, যথাযথ প্রাইভেসি ও সুরক্ষা ব্যবস্থা পর্যালোচনা ছাড়াই ব্লু গ্রাহক সেবা চালু করায় উদ্বেগ জানান দেশটির আইনপ্রণেতা’সহ অন্যরা। আর এটি এফটিসি’র সঙ্গে প্ল্যাটফর্মটির সমঝোতা চুক্তির অংশও ছিল।
একইভাবে গত বছর মার্কিন বাণিজ্য প্রকাশনা ব্লুবার্গ চিহ্নিত করেছে, এই সমঝোতা চুক্তিতে টুইটার ব্যবহারকারীদের ডেটায় অভ্যন্তরীনভাবে প্রবেশ সীমাবদ্ধ করার বিষয়টি উল্লেখ ছিল। ফলে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তোলেন, মাস্কের কোম্পানির বিভিন্ন নথি ও অভ্যন্তরীন ব্যবস্থায় সাংবাদিকদের প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি এফটিসি’র শর্ত ভঙ্গ করে কি না।
এক টুইটে এফটিসি’র কার্যক্রমকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ও সত্য দমন করার উদ্দেশ্যে কোনো সরকারী সংস্থার অস্ত্রায়নের লজ্জাজনক ঘটনা’ হিসেবে আখ্যা দেন মাস্ক। পাশাপাশি, হাউজ জুডিশিয়ারি কমিটিতে থাকা রিপাবলিকান পার্টির সদস্যরাও এই কার্যক্রমের সমালোচনা করে সংস্থার তদন্তকে ‘হয়রানিমূলক’ বলে আখ্যা দিয়েছে।