“যে কারণেই হোক না কেন, আমাদের জন্য বাধা হয়ে ওঠা বিদেশী ব্যক্তিদের সম্পর্কে নেতিবাচক তথ্য খুঁজে বের করতে আমাদের নিজস্ব নীলনকশা আছে।”
Published : 15 Feb 2023, 03:51 PM
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও মার্কিন উপস্থাপক টাকার কার্লসনের পাশাপাশি ‘হিটলার-অফ-দ্য-মান্থ ক্লাব’ তালিকায় টুইটারের মালিক ইলন মাস্কের নামও তোলা হয়েছে বলে মন্তব্য করলেন মাস্কের ঘনিষ্ট এক সাংবাদিক।
জনপ্রিয় পডকাস্টার জো রোগানের পডকাস্টে এমনই দাবি করেন সংবাদকর্মী ও মার্কিন লেখক ম্যাট টাইবি।
মার্কিন সাময়িকী ‘রোলিং স্টোন’-এর সাবেক সংবাদকর্মী টাইবি জোট বেঁধেছেন টুইটার মালিক ইলন মাস্কের সঙ্গে। তিনি এবং আরও কয়েকজন সাংবাদিক টুইটারের গোপন নথি ফাঁস করেন যেগুলো ‘টুইটার ফাইলস’ নামে পরিচিত। ইলন মাস্কের মালিকানায় যাওয়ার আগে টুইটারের শীর্ষ পর্যায়ে ঘটা বেশ কিছু কেলেঙ্কারির প্রমাণ রয়েছে ওই নথিগুলোয়। বর্তমানে তিনি ‘সাবস্ট্যাক’ নামে এক মার্কিন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে কাজ করছেন।
“আমরা সবসময় বিদেশীদের সঙ্গে এমনটা আগে করেছি। এটা নরিয়েগা (পানামার সাবেক শাসক), সাদ্দাম হুসেইন (ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট), মিলাসোভিচ (যুগোস্লোভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট) বা আসাদ (সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট) যেই হোক না কেন।” --মঙ্গলবার জো রোগানের স্পটিফাই পডকাস্টে বলেন টাইবি।
“যে কারণেই হোক না কেন, আমাদের জন্য বাধা হয়ে ওঠা বিদেশী ব্যক্তিদের সম্পর্কে নেতিবাচক তথ্য খুঁজে বের করতে আমাদের নিজস্ব নীলনকশা আছে।”
টাইবি আরও বলেন, “তবে এখন আমরা বিভিন্ন এমন মার্কিনী, যারা সমস্যাজনক হতে পারে, তাদের জন্য এই কৌশল কিছুটা সাজিয়ে নিয়েছি।”
“ট্রাম্পের সঙ্গে তারা নিশ্চিতভাবে এমন করেছে। এ ছাড়া, টাকার কার্লসন এমনকি আপনার সঙ্গেও তারা বেশ কয়েকবার এই চেষ্টা চালিয়েছে।”
“আর ইলন? বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির সেক্সি রূপ দেওয়া নায়ক থেকে দশ সেকেন্ডের মধ্যে ভিক্টর অরবানের (হাঙ্গেরির সাবেক প্রধানমন্ত্রীর) মতো কিছু একটায় পরিণত হয়েছেন তিনি। কী অদ্ভুত!”
Joe Rogan and Matt Taibbi say Elon Musk is unfairly being portrayed as a right-winger. Taibbi says people have put Musk with Trump & Tucker in the “Hitler-of-the-Month-Club.” Rogan: “What examples do they have? They don’t have an example.” pic.twitter.com/OXs5pz5wEY
— Ron Filipkowski ???????? (@RonFilipkowski) February 14, 2023
মাস্কের মতো একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস রাজ্যে পাড়ি জমানো রোগান বলেন, যারা মনে করছেন মাস্কের রাজনীতি রক্ষণশীল দিকে মোড় নিয়েছে, তাদের এই বিশ্বাস কোনো প্রমাণের ভিত্তিতে আসেনি।
“আপনার কাছে এর কী প্রমাণ আছে? এমনকি তাদের কাছেও এর কোনো প্রমাণ নেই।” --বলেন রোগান।
“তাদের কাছে কেবল এই বাণী পৌঁছেছে যে, ইলন এখন খারাপ হয়ে গেছে।”
“ঠিক!” --এর জবাবে বলেন টাইবি।
তবে, ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বাস্তবে গত বেশ কয়েক বছর ধরেই প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতির সঙ্গে খোলাখুলিভাবেই আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়েছেন মাস্ক।
নভেম্বরে মাস্ক মার্কিন কংগ্রেসের জন্য রিপাবলিকান দলের প্রার্থীদের সমর্থন জানানোর পাশাপাশি বিভিন্ন শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী ও তৃতীয় লিঙ্গ বিরোধী মতবাদের লোকজনকে টুইটারে পুনরায় ফিরিয়ে আনেন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এটি প্ল্যাটফর্মে ডানপন্থী ষড়যন্ত্রতত্ত্ববাদ ছড়ানোর পাশাপাশি শ্রমিকদের অধিকার খর্ব ও ক্রমাগত ‘সচেতনতার’ ওপর আঘাত করেছে।
মাস্কের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অবস্থান তার কোভিড মহামারীর আগের আচরণ থেকে সরে যাওয়ার ধারাবাহিকতা বজায় রাখছে। সে সময় তিনি উভয় রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের অনুদান দেওয়ার পাশাপাশি কোনও রাজনৈতিক গোঁড়ামি মেনে চলেন না, এমন এক মধ্যপন্থী হিসাবে নিজেকে তুলে ধরেছেন।
“অতীতে আমি ডেমোক্র্যাটদের ভোট দিয়েছি কারণ তারা সম্ভবত সবচেয়ে উদারপন্থী দল ছিল।” --গত বছরের মে মাসে টুইট করেন মাস্ক।
“তবে, তারা এখন বিভক্তি আর ঘৃণা সমর্থক রাজনৈতিক দল হয়ে উঠেছে। তাই তাদেরকে আর সমর্থন করা সম্ভব নয়। আর আমি রিপাবলিকান দলকে ভোট দেব। এখন, দেখবেন তারা আমার বিরুদ্ধে কেমন নোংরা কৌশলের আশ্রয় নেয়…”
সাম্প্রতিক মাসগুলোয় টুইটার অধিগ্রহণ ও প্ল্যাটফর্মে কিছু সংখ্যক পরিবর্তন এনে এর সার্বিক অবস্থা পুরোপুরি বদলে ফেলায় জনসাধারণের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টিকারী ব্যক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন মাস্ক - প্রতিবেদনে লিখেছে ইনডিপেন্ডেন্ট।