সেরা ১০-এর তালিকা সাধারণত বিতর্ক এড়াতে পারে না। সেইসঙ্গে তালিকার কত নম্বরে কোন টাইটেল ‘থাকা উচিৎ ছিল’ সে মতভেদ তো আছেই। এ বিষয়গুলো মাথায় রেখেই মিলিয়ে নিন।
Published : 10 Apr 2024, 02:28 PM
শুধু মানুষই নয়, এখন চ্যাটবটও নিজের পছন্দের সর্বকালের সেরা গানের তালিকা তৈরি করতে পারে।
মাইক্রোসফট সমর্থিত স্টার্টআপ কোম্পানি ওপেনএআইয়ের তৈরি জনপ্রিয় এ চ্যাটবটের কাছে সর্বকালের সেরা ১০টি গানের তালিকা চেয়েছিল এমএসএনবিসি।
সেরা ১০-এর তালিকা সাধারণত বিতর্ক এড়াতে পারে না। সেইসঙ্গে তালিকার কত নম্বরে কোন টাইটেল ‘থাকা উচিৎ ছিল’ সে মতভেদ তো আছেই। এ বিষয়গুলো মাথায় রেখেই মিলিয়ে নিন নিচের তালিকাটি-
১০. মাইকেল জ্যাকসনের ‘থ্রিলার’
থ্রিলারকে পপ ও ফাংক ঘরানার সংমিশ্রণ বলা যায়, যেখানে ‘কিং অফ পপ’ মাইকেল জ্যাকসনের কণ্ঠস্বরের সক্ষমতা ও ডাইনামিক পারফরমেন্স স্টাইল ফুটে ওঠে। গানটি এতটাই সফল ছিল যে এটি মিউজিক ভিডিও’র গতানুগতিক ধারা ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি জ্যাকসনকে একজন যুগান্তকারী শিল্পী হিসেবে গোটা বিশ্বে পরিচিতি দিয়েছে।
০৯. চাক বেরি’র ‘জনি বি গুড’
১৯৫৮ সালে প্রকাশ পেয়েছিল ৫০’র দশকের গিটারিস্ট চাক বেরি’র অন্যতম আইকনিক গান। এতে একজন তরুণ, মেধাবী গিটারিস্টের গল্প বলা হয়েছে, যিনি পরবর্তীতে তারকা মিউজিশিয়ান হয়ে ওঠেন।
সর্বকালের অন্যতম সেরা রক অ্যান্ড রোল সং হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে ‘জনি বি গুড’, যেখানে এ ঘরানার প্রাণশক্তি ও চেতনার প্রতীক হয়ে উঠেছে গানটি।
০৮. ঈগলসে’র ‘হোটেল ক্যালিফোর্নিয়া’
গানটি প্রকাশ পেয়েছিল ১৯৭৭ সালে। গানটির বাদ্যযন্ত্রের চৌকশ ব্যবহার আর ভৌতিক আবহের জন্য এখনও ঈগলস ব্যান্ডের অন্যতম জনপ্রিয় গান হিসেবে বিবেচিত এটি। ইগলসের প্রায় সব কনসার্টেই এটি হয়ে উঠেছে আবশ্যিক আইটেম।
গানটিতে এমন একটি হোটেলের কথা উঠে এসেছে, যেখানে কেউ যে কোনও সময় ‘চেক ইন’ করতে পারলেও সেটি ছেড়ে যাওয়া সম্ভব হয়না কখনও।
০৭. মাইকেল জ্যাকসনের ‘বিলি জিন’
গানটি প্রকাশ পেয়েছিল ১৯৮২ সালে, যা জ্যাকসনের যুগান্তকারী অ্যালবাম ‘থ্রিলার’-এর সবচেয়ে হিট গান। গানটির ঘোর লাগানো বেইজলাইন, ক্যাচি মেলোডি ও মনে রাখার মতো লিরিক্সে বিলি জিন নামের এমন এক রহস্যময় নারীর কথা উঠে এসেছে, যিনি দাবি করেছেন, গানটির গায়ক তার সন্তানের বাবা।
০৬. নির্ভানা’র ‘স্মেলস লাইক টিন স্পিরিট’
‘গ্রাঞ্জ’ জনরার জন্ম হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল শহরে। আর ৮০’র দশকের সিয়াটল সিনে যে তিনটি ব্যান্ডকে গ্রাঞ্জ জনরার পূর্বসূরী হিসেবে বিবেচনা করা হয়, সেগুলো হল নির্ভানা, পার্ল জ্যাম ও সাউন্ড গার্ডেন।
এর মধ্যে নির্ভানার ফ্রন্টম্যান ছিলেন কার্ট কোবেইন ও সাউন্ড গার্ডেনের ভোকালিস্ট ছিলেন ক্রিস কর্নেল। দুজনের কেউই এখন আর বেঁচে নেই। কোবেইন নিজের জীবনাবসান ঘটিয়েছিলেন মাথায় গুলি করে। আর কর্নেল বেছে নিয়েছিলেন গলায় ফাঁস। এখন শুধু বেঁচে আছেন পার্ল জ্যামের এডি ভেডার।
স্মেলস লাইক টিন স্পিরিট প্রকাশ পেয়েছিল ১৯৯১ সালে, যা পরবর্তীতে গোটা বিশ্বে পরিচিতি পায় নির্ভানার ‘সিগনেচার সং’ হিসেবে। এমনকি ব্যান্ডটিকে মূলধারার সঙ্গীতে সফলতা এনে দেওয়ার পাশাপাশি সর্বকালের অন্যতম সেরা রক গান হিসেবেও সঙ্গীতপ্রেমীদের কাছে সমাদর পেয়েছে গানটি।
০৫. লেড জেপলিনের স্টেয়ারওয়ে টু হ্যাভন
অনেকের তালিকাতেই সর্বকালের সেরা রক গান এটি। ভোকালিস্ট রবার্ট প্ল্যান্টের অকৃত্রিম ব্লুজ গায়কীর সঙ্গে সর্বকালের অন্যতম সেরা গিটারিস্ট জিমি পেইজ। জন পল জোন্সকে বিশেষ কোনো বাদ্যযন্ত্রে আবদ্ধ করা সম্ভব নয়। আর তার সঙ্গে জন বনহ্যামের পাগল করা ড্রামস শুনতে চাইলে এই গানটিকে সঙ্গীতপ্রেমীদের তীর্থ বলা চলে।
১৯৭১ সালে প্রকাশ পাওয়া গানটি শ্রোতাদেরকে সঙ্গীতের ঘোর লাগা জগত ঘুরিয়ে আনবে। বলা চলে, ব্যান্ডটি তাদের মেধার পুরোটা ঢেলে তৈরি করেছেন এই মাস্টারপিস।
০৪. বিটলসের ‘হেই জ্যুড’
আইকনিক ব্রিটিশ রক ব্যান্ড বিটলসের পথচলা শুরু হয়েছিল ১৯৬০ সালে, লিভারপুল থেকে। এর সদস্য ছিলেন জন লেনন, পল ম্যাককার্টনি, জর্জ হ্যারিসন ও রিংগো স্টার।
এ চারজন মিলে শুধু পপ মিউজিকে বিপ্লবই বয়ে আনেননি, বরং বিটলসকে সর্বকালের সেরা ব্যান্ড হিসেবে পরিচিত করে তুলেছিলেন গোটা বিশ্বে। এমনকি একবার নিজেদেরকে যিশুর চেয়েও জনপ্রিয় বলে দাবি করেছিলেন ব্যান্ডের সদস্য জন লেনন।
হেই জ্যুড প্রকাশ পেয়েছিল ১৯৬৮ সালে। আর খুব দ্রুতই ব্যান্ডের ইতিহাসের সবচেয়ে পছন্দের ও টেকসই হিট গানগুলোর একটি হয়ে ওঠে এটি।
০৩. জন লেননের ‘ইমাজিন’
বিটলস ভেঙে যাওয়ার পর নিজের একক ক্যারিয়ারেও সফলতার ছাপ রেখেছেন লেনন, যেখানে নিজের গানকে শান্তি, ভালবাসা ও সামাজিক অধিকারের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছিল তাকে।
ইমাজিন প্রকাশ পেয়েছিল ১৯৭১ সালে। এর পর থেকেই সমতা, আশা আর ন্যায্যতার দাবির সমার্থক হয়ে উঠেছে গানটি।
০২. বব ডিলানের ‘লাইক এ রোলিং স্টোন’
মূলধারার মিউজিকে অন্যতম প্রভাবশালী শিল্পীর নাম বব ডিলান। ৬০’র দশকে ফোক মিউজিক পুনরুত্থানের ক্ষেত্রে নেতৃস্থানীয় কণ্ঠস্বর হিসেবে আগমন ঘটে ডিলানের, যার ছাপ পরবর্তীতে দেখা গেছে রক মিউজিকেও।
চিন্তা উদ্দীপক লেখনী’র সঙ্গে রূক্ষ কন্ঠস্বরের এক অপরূপ সংমিশ্রণ ‘লেডিস ম্যান’ খ্যাত ডিলান, যেখানে তার সবচেয়ে সফল গান হিসেবে বিবেচনা করা হয় ‘লাইক এ রোলিং স্টোন’কে, যা পপুলার মিউজিকের সম্ভাবনায় বিপ্লব বয়ে এনেছিল।
০১. কুইনের ‘বোহেমিয়ান র্যাপসডি’
নিজেদের থিয়েট্রিকাল ভঙ্গিমা ও বৈচিত্র্যময় সঙ্গীতের জন্য পরিচিতি পাওয়া ‘কুইন’ পরবর্তীতে সর্বকালের অন্যতম সফল ও জনপ্রিয় ব্যান্ড হয়ে উঠেছিল।
দলটির সবচেয়ে জনপ্রিয় গান ‘বোহেমিয়ান র্যাপসডি’ প্রকাশ পেয়েছিল ১৯৭৫ সালে। ছয় মিনিট দীর্ঘ এই এপিক গানটিতে গতানুগতিক গানের ধারা ভাঙতে দেখা যায় ব্যান্ডটিকে। মূলত রক, অপেরা ও ব্যালাডের সংমিশ্রণ ছিল গানটি, যার মাধ্যমে এখনও ব্যান্ডের অপার সৃজনশীলতা ও বাদ্যযন্ত্রের দখল উপভোগ করার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন শ্রোতারা।
গানটি গেয়েছেন ফ্রেডি মার্কারি। এতে লিড গিটার বাজিয়েছেন নাইটহুড পাওয়া অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট ব্রায়ান মে। আর বেইজ গিটার ও ড্রামসের দায়িত্বে ছিলেন যথাক্রমে জন ডিকন ও রজার টেইলর।
অসম্ভব সফল গানটি ব্যবহৃত হয়েছে ২০১৮ সালে ফ্রেডি’র জীবনী নিয়ে এই গানেরই শিরোনামে একটি সিনেমায়। যেখানে ফ্রেডি’র চরিত্রে অভিনয় করে অস্কারে সেরা অভিনেতার পুরস্কার ঘরে তুলেছিলেন মিশরীয় বংশোদ্ভুত অভিনেতা রামি মালেক।