খনিজ অনুসন্ধানের খরচ কমিয়ে আনা ও এর গতি বাড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে স্টার্টআপ কোম্পানি ‘অ্যাটোমিয়নিক্স’-এর নতুন এ প্রযুক্তি।
Published : 19 Dec 2023, 12:29 PM
সিঙ্গাপুরভিত্তিক এক স্টার্টআপ কোম্পানি এমন এক নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, যেখানে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে বিভিন্ন মূল্যবান ধাতুকে চেনা সম্ভব।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, খনিজ অনুসন্ধানের খরচ কমিয়ে আনা ও এর গতি বাড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে স্টার্টআপ কোম্পানি ‘অ্যাটোমিয়নিক্স’-এর নতুন এ প্রযুক্তি।
এরইমধ্যে তিনটি শীর্ষ মাইনিং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে অ্যাটোমিয়নিক্স। কোম্পানির সিইও সাহিল টাপিয়াওয়ালা রয়টার্সকে বলেন, আশা করা হচ্ছে, আগামী বছরের শুরুতে ‘গ্র্যাভিও’ নামে পরিচিত এ ‘ভার্চুয়াল ড্রিল’ প্রযুক্তির কাজ শেষ হবে। তবে, বাণিজ্যিক গোপনীয়তাকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে তিনি চুক্তিবদ্ধ কোম্পানিগুলোর নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি।
ব্যক্তিমালিকানাধীন এ কোম্পানিকে সমর্থন করছে বেশ কিছু সিঙ্গাপুরভিত্তিক সরকারি সংস্থা ও বিনিয়োগকারী, যার মধ্যে আছেন ওপেনএআই সহ-প্রতিষ্ঠাতা প্যামেলা ভাগাটা ও মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি ‘ট্রাফিগুরা’র জলবায়ু প্রযুক্তি বিভাগের নির্বাহী মিখাইল জেলডোভিচ।
এমন অন্যান্য অনুসন্ধানী প্রযুক্তির মতোই, অ্যাটোমিয়নিক্স মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিভিন্ন সংকেত ব্যবহার করে মাটির নীচে থাকা বিভিন্ন খনিজ পদার্থ শনাক্ত করে থাকে।
টাপিয়াওয়ালার দাবি, প্রচলিত বায়ুভিত্তিক জরিপ প্রযুক্তির চেয়েও নির্ভুলভাবে কাজ করে এটি, যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় ‘রিয়েল টাইম’ ডেটাও প্রক্রিয়াকরণ করা সম্ভব। এমনকি ধাতু শনাক্ত করার গতি বাড়ানোর ক্ষেত্রেও সহায়ক হিসেবে কাজ করে এ প্রযুক্তি।
ধাতু অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে একটি কূপ খননের খরচ পড়ে যায় সাড়ে সাত হাজার থেকে সাড়ে ৩৭ হাজার ডলার পর্যন্ত। আর লিথিয়াম ধাতুর অনুসন্ধানে চারশটি কূপ খননের ঘটনাও দেখা গেছে এর আগে। ফলে, খনন করার আগে সম্ভাব্য ধাতুর তুলনামূলক নির্ভুল ভার্চুয়াল ছবি খননের খরচ ব্যাপক হারে কমিয়ে আনতে পারে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।
“মূল চ্যালেঞ্জ হল, কখনও কখনও এটি (কূপ খনন) আটকে থাকা ধাতুর কাছে গিয়ে পৌঁছায় না।” --বলেন টাপিয়াওয়ালা।
তিনি আরও যোগ করেন, কোম্পানির লক্ষ্য হল, এ ধরনের ‘খালি’ কূপ খননের সংখ্যা অন্তত অর্ধেকে নামিয়ে আনা।
খনিজ অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে, মাইনিং শিল্পে বেশ কয়েকটি কৌশল ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে ভূগর্ভস্থ রেডার ও ‘অ্যারোম্যাগনেটিক’ জরিপ। তবে, এ ধরনের কোনো পদ্ধতিই শতভাগ নিশ্চয়তা দেয় না।
এদিকে, লিথিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজ অনুসন্ধানে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক স্টার্টআপ কোম্পানি ‘কোবোল্ড মেটালস’ও, যেটিতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রয়েছেন বিল গেটস ও জেফ বেজোসের মতো শীর্ষ ধনকুবেররাও।
অ্যাটোমিয়নিক্সের এ প্রযুক্তি সর্বপ্রথম স্থাপন করা হয় অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড অঙ্গরাজ্যে, যেখানে খনিজ তেলের অনুসন্ধান চালাতে মাইনিং কোম্পানি ‘নিউ হোপ’-এর অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ‘ব্রিজপোর্ট এনার্জি’কে সহায়তা করেছিল কোম্পানিটি।
“খনিজ শিল্পে ঐতিহ্যগতভাবেই খননের আগে সিসমিক ডেটা সংগ্রহ করা হয়।” --এক বিবৃতিতে বলেন ব্রিজপোর্ট এনার্জি’র অনুসন্ধান ব্যবস্থাপক ক্যামেরন ফিংক।
“এ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ চালিয়ে গেলে, খনিজ অনুসন্ধানে প্রচলিত পদ্ধতিগুলোর বিপরীতে সাশ্রয়ী এক বিকল্প দাঁড় করাতে পারে গ্র্যাভিও।”