ডেটা ঝুঁকিতে শিশুদের ফেলছে মেটা: এফটিসি

এফটিসি বলেছে, এক স্বাধীন তদন্তে ‘ফেইসবুকের প্রাইভেসি প্রোগ্রামে বেশ কয়েকটি ফাঁক ও দুর্বলতা’ খুঁজে পাওয়া গেছে, যা জনসাধারণের জন্য ‘যথেষ্ট ঝুঁকি’ তৈরি করেছে।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 May 2023, 09:23 AM
Updated : 4 May 2023, 09:23 AM

ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মালিক কোম্পানি মেটার বিরুদ্ধে ‘শিশুদের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের বেলায় তাদের অভিভাবকদের জন্য যথাযথ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না রাখার’ অভিযোগ তুলেছে শীর্ষ মার্কিন ডেটা নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘এফটিসি’।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি)’ বলেছে, শিশুদের ডেটা ব্যবহার করে মেটার আর্থিক উপার্জনের সুবিধা বন্ধ করা উচিৎ।

“কোম্পানির বেপরোয়া মনোভাব অল্পবয়সী ব্যবহারকারীদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। আর ফেইসবুককেও নিজেদের ব্যর্থতার জবাব দিতে হবে।”

এর প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির আচরণকে ‘রাজনৈতিক স্টান্টবাজি’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে নিজেদের ক্ষমতা অপব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে মেটা।

এফটিসি বলেছে, এক স্বাধীন তদন্তে ‘ফেইসবুকের প্রাইভেসি প্রোগ্রামে বেশ কয়েকটি ফাঁক ও দুর্বলতা’ খুঁজে পাওয়া গেছে, যা জনসাধারণের জন্য ‘যথেষ্ট ঝুঁকি’ তৈরি করেছে।

সামাজিক প্ল্যাটফর্মটির ১৩ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীরা এখনও এমন প্রোফাইলগুলোর সঙ্গে চ্যাটিংয়ের সুবিধা পাচ্ছে যেগুলো তাদের মা-বাবা’রা যাচাই করে দেখেননি’ – প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বিবিসি।

নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি আরও বলেছে, মেটা এখনও বিভিন্ন থার্ড পার্টি অ্যাপকে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্যে প্রবেশাধিকার দেওয়া অব্যাহত রেখেছে। এর আগে কোম্পানি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ব্যবহাকারীরা পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে এইসব অ্যাপ ব্যবহারে ব্যর্থ হলে তারা সেগুলোর প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেবে।

এফটিসি এর বিপরীতে বেশ কিছু কার্যক্রম পরিচালনার প্রস্তাবনা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • ১৮ বছরের কম বয়সী শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের ডেটা থেকে আর্থিক সুবিধা প্রাপ্তির  বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা৷

  • নতুন পণ্য উন্মোচনে বিরতি, যতক্ষণ কোম্পানির প্রাইভেসি নীতিমালা মেনে চলার বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত না হয়।

  • ভবিষ্যতে ‘ফেইশল রিকগনিশন’ প্রযুক্তির ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা। ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তির ব্যবহারের উদ্দেশ্যে মেটাকে ব্যবহারকারীর ইতিবাচক সম্মতি নিতে ও প্রকাশ করতে হবে।

এর জবাবে মেটার মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন বলেন, এই পদক্ষেপ ‘রাজনৈতিক স্টান্ট’ ছাড়া কিছুই না।

তিনি আরও বলেন, টিকটকের মতো চীনা কোম্পানিগুলো যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে কোনো সীমাবদ্ধতা ছাড়াই কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেলেও মেটাকে ‘একঘরে’ করে ফেলা হচ্ছে।

এ ছাড়া, এফটিসি’র চেয়ারপার্সন লিনা খানের বিরুদ্ধে কোম্পানির মার্কিন ব্যবসা নস্যাৎ করার অভিযোগও তোলেন তিনি।

এফটিসি’র এই মামলা শুরু হয় ২০১৮ সালে। সে সময় সংস্থাটি জানায়, কোটিরও বেশি ফেইসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা।

বিবিসি বলছে, বিভিন্ন শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানির লাগাম টেনে ধরার পরিকল্পনা করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। তবে, মেটার মতো কোম্পানিগুলো বিশ্বাস করে, তাদের সঙ্গে অন্যায় আচরণ করা হচ্ছে।

“এফটিসি’র সঙ্গে আমাদের চুক্তি টানা তিন বছর মেনে চলার পরও তারা এই ‘নতুন ও সম্পূর্ণ অভূতপূর্ব তত্ত্ব’ নিয়ে আলোচনার সুযোগ দেয়নি।” --বলেন স্টোন।

যাই হোক, এফটিসি বিশ্বাস করে যে মেটা ‘ক্রমাগত নিজেদের প্রাইভেসি সংশ্লিষ্ট প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করেছে’। আর তরুণ ব্যবহারকারীদের সুরক্ষার জন্য তারা এর চেয়েও কঠোর পদক্ষেপ নিতে চায় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বিবিসি।